একটি লাইটার জাহাজে চড়ে মঙ্গলবার বিকালে চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কন্টেনাইনার টার্মিনালের জেটিতে পৌঁছাবেন নাবিকরা।
Published : 13 May 2024, 08:47 PM
সোমালি জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্ত হয়ে দেশে ফেরা এমভি আবদুল্লাহ কুতুবদিয়ায় নোঙর করেছে। তবে বিপদ কাটিয়ে দেশে ফেরা নাবিকদের সঙ্গে মিলিত হতে আরো একদিন অপেক্ষা করতে হবে স্বজনদের।
জাহাজের মালিকপক্ষ কবির গ্রুপের মিডিয়া ফোকাল পার্সন মিজানুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, এমভি আবদুল্লাহ সন্ধ্যা ৬টার পর কুতু্বদিয়া চ্যানেলে নোঙর করে। তারপর পণ্য খালাসের কাজ শুরু হয়। ৫৬ হাজার মেট্রিক টন পাথর আছে ওই জাহাজে।
জলদস্যুর কবল থেকে মুক্ত হয়ে ফেরা ২৩ নাবিক মঙ্গলবার চট্টগ্রামে ফিরবেন। তাদের বদলে জাহাজের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য ২৩ জন নাবিকের আরেকটি দল সোমবার বিকেলেই কুতুবদিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে।
নতুন ২৩ নাবিককে নিয়ে কুতুবদিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া জাহান মনি-৩ নামের ওই লাইটার জাহাজটিতে করে মঙ্গলবার এমভি আবদুল্লাহর ২৩ নাবিক চট্টগ্রামে ফিরবেন।
কুতুবদিয়া চ্যানেলে এমভি আবদুল্লাহ যেখানে নোঙর করা হয়েছে, তার কাছেই নোঙর করা রয়েছে কবির গ্রুপের মালিকানাধীন আরেক জাহাজ এমভি জাহান মনি। এ জাহাজটি ২০১০ সালে সোমালি জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হবার ১০০ দিন পর মুক্তি পেয়েছিল।
জাহাজের অবস্থান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা মেরিন ট্রাফিকের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুসারে, কুতুবদিয়া চ্যানেলে এমভি আবদুল্লাহর দুই মাইল দক্ষিণে নোঙর করা আছে জাহান মনি।
কথা ছিল, এমভি আবদুল্লাহর নাবিকরা মঙ্গলবার বিকালে চট্টগ্রাম সদরঘাটে জাহাজের মালিকপক্ষ কেএসআরএম জেটিতে নামবেন। তবে সেই সিদ্ধান্ত বদলেছে বলে জানান মিজানুল ইসলাম।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, মঙ্গলবার বিকালে চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কন্টেনাইনার টার্মিনালের (এনসিটি-১) জেটিতে জাহান মনি-৩ নাবিকদের নিয়ে পৌঁছাবে। সেখানকার ব্যবস্থাপনা করবে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।
কুতুবদিয়া চ্যানেলে দুই দিন পণ্য খালাস করে এমভি আবদুল্লাহর চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙ্গরে আসার কথা রয়েছে। সেখানে বাকি পণ্য খালাস করা হবে।
গত ১২ মার্চ মোজাম্বিক থেকে কয়লা নিয়ে দুবাই যাওয়ার পথে সোমালিয়া উপকূল থেকে ৬০০ নটিক্যাল মাইল দূরে জলদস্যুদের কবলে পড়ে এমভি আবদুল্লাহ। অস্ত্রের মুখে জাহাজ ও ২৩ নাবিককে জিম্মি করে দস্যুরা।
উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে ৩৩ দিন পার করার পর গত ১৩ এপ্রিল রাত ৩টার দিকে জলদস্যুরা জাহাজ ছেড়ে চলে যায়। এরপর দুবাইয়ের আল হামরিয়া বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা হয় জাহাজটি।
১৪ এপ্রিল দুপুরে এমভি আবদুল্লাহর চিফ অফিসার আতিকুল্লাহ খানের দেওয়া ফেইসবুক পোস্টের একটি ছবিতে মুক্ত নাবিকদের পাশে ইউরোপীয় নেভাল ফোর্সের অপারেশন আটলান্টার কমান্ডোদের দেখা যায়। ১৫ এপ্রিল বিকালে অপারেশন আটলান্টা মিশন তাদের টুইট বার্তায় এমভি আবদুল্লাহকে পাহারা দিয়ে এগিয়ে যাওয়ার ছবি প্রকাশ করে।
ওইদিন রাতে কবির গ্রুপ জানায়, নিরাপদ এলাকায় না পৌঁছানো পর্যন্ত ইইউএনএভিএফওআরের যু্দ্ধজাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে পাহারা দিয়ে নিয়ে যাবে।
এমভি আবদুল্লাহ শুরুতে যায় সংযুক্ত আর আমিরাতের আল-হামরিয়া বন্দরে। সেখানে জাহাজে থাকা কয়লা খালাস করা হয়। এরপর ওই বন্দরেই পণ্য লোডের পর মিনা সাকার বন্দরে যায় আবদুল্লাহ। সেখান থেকে আরব আমিরাতের ফুজাইরা বন্দরে থেমেছিল জ্বালানি নিতে। এরপর দুবাই থেকে ৩০ এপ্রিল রওনা হয় চট্টগ্রামের উদ্দেশে। বাংলাদেশের জলসীমার মধ্যে জাহাজ প্রবেশের খবর আসে বৃহস্পতিবার।
জিম্মি দশার দুই মাস পর দেশে ফিরছেন এমভি আবদুল্লাহর ২৩ নাবিক, যাদের সবাই বাংলাদেশি।
জাহাজের ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ আব্দুল রশিদ এর আগে বলেছেন, নাবিক দলের সবাই সুস্থ আছেন। তারা দেশে প্রিয়জনদের কাছে ফেরার জন্য উম্মুখ হয়ে আছেন তারা।
পুরনো খবর
কুতুবদিয়া থেকে ৫০০ নটিক্যাল মাইল দূরে এমভি আবদুল্লাহ
এমভি আবদুল্লাহ ও নাবিকরা মুক্ত
সোমালিয়া উপকূলে এমভি আবদুল্লাহ,নজর রাখছে'অপারেশন আটলান্টা
এমভি আবদুল্লাহ: 'জোরপূর্বক'উদ্ধারে ইইউর প্রস্তাবে বাংলাদেশের'না'
জলদস্যুর কবলে বাংলাদেশি জাহাজ'আবদুল্লাহ',২৩ নাবিক জিম্মি
এমভি আবদুল্লাহ: টাকা না দিলে 'একজন একজন করে মেরে ফেলার' হুমকি দিচ্ছে...