দ্বিতীয় তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। তিনি তিন বছর মামলাটি তদন্ত করেছিলেন, তবে তিনি তদন্ত প্রতিবেদন দেননি।
Published : 01 Jul 2024, 09:44 PM
চট্টগ্রামে মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যা মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন দ্বিতীয় তদন্তকারী কর্মকর্তা এবং একজন ম্যাজিস্ট্রেট।
ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার জাহান এবং মামলার দ্বিতীয় তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান সোমবার চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিনের আদালতে সাক্ষ্য দেন।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. নেছার আহম্মেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আজ ম্যাজিস্ট্রেট মহোদয়ের জেরা শেষ হয়েছে। অপর সাক্ষীর জেরা চলমান। কাল আবার জেরা করা হবে।”
আসামিপক্ষের আইনজীবী কফিল উদ্দিন চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দ্বিতীয় তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। তিনি তিন বছর মামলাটি তদন্ত করেছিলেন, তবে তিনি তদন্ত প্রতিবেদন দেননি। সাক্ষ্যে তিনি বাবুল আক্তারের বিষয়ে কিছু বলেননি। উনার জেরা আমরা শুরু করেছি।
“তিনি মামলার তদন্তের সময়ে খুনের ঘটনায় ব্যবহৃত মোটর সাইকেলটি উদ্ধার করলেও এর মালিককে আটক করেননি। মোটর সাইকেলটি নাকি চুরি হয়েছিল, কিন্তু সেটি খুনের পর যখন উদ্ধার হয় তারপরে চুরির মামলা হয়। এছাড়া মিতুর ব্যবহৃত মোবাইলটি ভোলা জেলায় একজনের কাছ থেকে উদ্ধার করা হলেও ওই ব্যক্তিকেও ছেড়ে দেয়া হয়। এসব বিষয়ে আমরা জেরা করেছি।”
মামলার দ্বিতীয় তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান নগর গোয়েন্দা পুলিশের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার ছিলেন। ২০১৬ সালের ১২ জুন তাকে এই মামলার আইও হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
নগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার পরিদর্শক কাজী রকিব উদ্দিন ছিলেন এই মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা। এখন পর্যন্ত মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা এ মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দেননি।
এ নিয়ে মিতু হত্যা মামলায় মোট ৫২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হল। এ মামলায় মোট সাক্ষী ৯৭ জন।
গত বছরের ৯ এপ্রিল মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেনের সাক্ষ্যের মধ্যে দিয়ে মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। ইদোমধ্যে মিতু মা শাহেদা মোশাররফসহ বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন।
২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় সে সময়কার চট্টগ্রামের পুরিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতুকে গুলি চালিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
এসপি বাবুল ওই ঘটনার কিছুদিন আগেই চট্টগ্রাম থেকে বদলি হন। তিনি ঢাকায় কর্মস্থলে যোগ দিতে যাওয়ার পরপরই চট্টগ্রামে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।
সাড়ে তিন বছর তদন্ত করেও ডিবি পুলিশ কোনো কূলকিনারা করতে না পারার পর ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আদালতের নির্দেশে মামলার তদন্তভার পায় পিবিআই।
এরপর ২০২১ সালের মে মাসে পিবিআই জানায়, স্ত্রী মিতুকে হত্যা করা হয়েছিল বাবুল আক্তারের ‘পরিকল্পনায়’। আর এজন্য খুনিদের ‘লোক মারফত তিন লাখ টাকাও দিয়েছিলেন’ বাবুল।
পরে বাবুলের মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়ার পর মিতুর বাবা আরেকটি মামলা করেন। তবে সেই মামলা আদালতে না টেকার পর বাবুলের মামলাটিই পুনরুজ্জীবিত হয়।
গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর সেই মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পিবিআই। তাতে বাবুলসহ সাতজনকে আসামি করা হয়। এরপর গত বছরের ১০ অক্টোবর সেই অভিযোগপত্র গ্রহণ করে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত।