চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কন্টেইনার ডিপোয় ১৭টি পোশাক কারখানার ৮৩ লাখ ২৭ হাজার ৫৪৮ ডলারের পণ্যের হিসাব তালিকাভুক্ত করেছে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ।
Published : 06 Jun 2022, 10:02 PM
ডিপোতে মোট কত মূল্যের পোশাক ছিল তার পূর্ণাঙ্গ হিসাব এখনো মেলেনি। বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি- বিজেএমইএ’র দাবি তাদের প্রায় ৪০০ কন্টেইনার আগুনে পুড়ে গেছে।
সীতাকুণ্ডের বিএম কন্টেইনার ডিপোতে শনিবার রাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। আগুন লাগার পর আমদানি-রপ্তানির পণ্যবোঝাই কন্টেইনারগুলো একের পর এক বিস্ফোরিত হতে থাকে।
তবে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ সারাদেশের বিভিন্ন এলাকার পোশাক প্রস্তুতকারকের মোট কত কন্টেইনার ও কত মূল্যের পোশাক সেখানে ছিল তার চূড়ান্ত হিসাব পাওয়া যায়নি।
সোমবার রাতে বিজিএমইএ’র এক কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তাদের কাছে আসা প্রতিষ্ঠানের নাম ও পণ্যের মূল্য সম্বলিত একটি তালিকার কথা বলেন।
তালিকায় দেখা যায়, ১৭ টি প্রতিষ্ঠানের তৈরি পোশাক জার্মানি, নিউ জিল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ডেনমার্ক ও নেদারল্যান্ডসে যাওয়ার কথা ছিল। এসবের মধ্যে এইচএন্ডএম, এমবিএইচ, টপ গ্রেড ও গ্যাস্টন ব্র্যান্ডের পণ্য ছিল।
বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এখন পর্যন্ত ২৩টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের তথ্য আমরা পেয়েছি। সব তথ্য এখনও তালিকাভুক্ত করা হয়নি।
“আরও অন্তত ৩০-৪০টি প্রতিষ্ঠানে তথ্য পাওয়ার অপেক্ষায় আছি। যে ২৩টি প্রতিষ্ঠানের তথ্য পেয়েছি তাতে সব মিলিয়ে আনুমানিক ১০০ লাখ ডলারের পণ্য থাকার কথা।”
বিজিএমইএ’র তালিকায় ঢাকা ও চট্টগ্রামের ১৭টি প্রতিষ্ঠানের মোট ৮৩ লাখ ২৭ হাজার ৫৪৮ ডলারের পণ্য বিএম ডিপোতে ছিল বলে উল্লেখ করা হয়।
এর মধ্যে ঢাকার পাঁচটি প্রতিষ্ঠান হল- শিন শিন অ্যাপারেলস লিমিটেড, কেএ ডিজাইন লিমিটেড, জেএফকে ফ্যাশন লিমিটেড, একেএইচ নিটিং অ্যান্ড ডাইং লিমিটেড, ভার্সেটাইল টেক্সটাইল লিমিটেড।
এর আগে রোববার বিজিএমইএ সহ-সভাপতি রাকিবুল আলম জানিয়েছিলেন ডিপোতে থাকা রপ্তানি পণ্যবাহী ৪০০ কন্টেইনার পুড়ে গেছে। তিনি দাবি করেন, শুধু চট্টগ্রামের রপ্তানিকারকদেরই ১৮ মিলিয়ন ডলারের পণ্য পুড়েছে।
বিএম কন্টেইনার টার্মিনালের ম্যানেজার নুরুল আকতার খান জানান, তাদের ডিপোতে ৪ হাজার ৩০০ কন্টেইনার ছিল। যার মধ্যে ৩০০০ খালি কন্টেইনার। বাকিগুলোর মধ্যে ৮০০ কন্টেইনারে রপ্তানি পণ্য এবং ৪৫০টিতে আমদানি পণ্য ছিল।
তবে কত কন্টেইনার আগুনে পুড়েছে, তার কোনো হিসাব দিতে পারেনি বিএম ডিপো কর্তৃপক্ষ বা ফায়ার সার্ভিস।
বিএম ডিপোতে তৈরি পোশাকের পাশাপাশি প্রাণ আরএফএল গ্রুপের খাদ্যপণ্যও ছিল।
তাদের প্রায় ২০০টি কন্টেইনার রপ্তানির জন্য ছিল জানালেও কত মূল্যের পণ্য ছিল তা নিশ্চিত করতে পারেননি প্রাণ আরএফএল গ্রুপের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট হবিগঞ্জ এগ্রো লিমিটেডের সাব অ্যাসিটেন্ট ম্যানেজার আমিরুল ইসলাম।
সেখানে চারটি কন্টেইনারে রাসায়নিক ছিল বলে সোমবার শনাক্ত করেছে সেনাবাহিনীর বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ দল। ডিপোটি রাসায়নিক রাখার কোনো অনুমতি নেয়নি বলে আগেই জানিয়েছিল বিস্ফোরক অধিদপ্তর।
এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্ত করতে ছয়টি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের নয়জন সদস্যের মৃত্যু হয়। মোট ৪১ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুন