বিরোধে বিভক্ত চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ হতে পারে।
Published : 21 Mar 2022, 09:52 PM
মঙ্গলবার নগরীর থিয়েটার ইন্সটিটিউটে নগর আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটি ও থানা প্রতিনিধিদের নিয়ে দিনব্যাপী সভা হবে। এতে কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত থাকবেন।
তবে ২৭ ও ২৮ মার্চ উত্তর এবং দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি সভা হওয়ার কথা থাকলেও তা হচ্ছে না।
দক্ষিণ জেলার সভাপতি অসুস্থ থাকায় এবং সংসদ অধিবেশনের জন্য নেতৃবৃন্দ ঢাকায় থাকবেন তাই উত্তর জেলার সভা হবে না বলে নেতারা জানিয়েছেন।
চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগে বিরোধ দীর্ঘদিনের। ২০১৩ সালের নভেম্বর তিন বছরের ঘোষিত কমিটির মেয়াদ পেরিয়ে গেছে ৫ বছর আগেই।
সম্প্রতি তৃণমূলের সম্মেলন আয়োজন নিয়ে বিরোধের বিষয়টি নিয়ে প্রয়াত এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী নেতারা অভিযোগ নিয়ে যান কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে। এরপর নগরের ছয় নেতাকে দায়িত্ব দেওয়া হয় সবগুলোর থানার সাংগঠনিক টিম গঠন করতে।
তারপর সেই নির্দেশনা মতে ইউনিট সম্মেলনের ত্রুটি-বিচ্যুতি অনুসন্ধানে ১৫টি সাংগঠনিক কমিটি গঠনের পরও দু’মাস পেরিয়ে গেছে, তবে বিরোধ মেটেনি।
নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মঙ্গলবার বর্ধিত সভা সকাল ১০টায় থিয়েটার ইন্সটিটিউটে শুরু হবে। সভায় সাংগঠনিক বিষয়ে আলোচনা হবে। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ যা সিদ্ধান্ত দেবেন, তাই হবে।
“যে ১৫টি কমিটি গঠন করা হয়েছে তাদের তৃণমূলের সম্মেলনে ত্রুটি বিচ্যুতি থাকলে জানাতে বলা হয়েছিল। তাদের কাছে এ সংক্রান্ত বেশ কিছু অভিযোগ আছে। তারা হয়ত কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে তা জানাবেন বিকেলের অধিবেশনে।”
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আগামীকালের বর্ধিত সভায় মহানগর নেতৃবৃন্দ বিস্তারিত আলোচনা করবেন। আমরা প্রত্যাশা করি, বীর চট্টলার বিদগ্ধ নেতৃবৃন্দ বিদ্যমান সমস্যাগুলো নির্মোহভাবে চিহ্নিত করবেন এবং একটি টিমওয়ার্কের মাধ্যমে সকল পর্যায়ের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির কাউন্সিল করার জন্য পরামর্শ প্রদান করবেন।
“আমরা স্থানীয় সমস্যা ও সম্ভাবনা তাদের ওপরই ন্যস্ত করতে চাই। কারণ তারা চট্টগ্রাম বিষয়ে আমাদের চেয়ে অধিক জানেন এবং দলের জন্য অহর্নিশ হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করেন। আমরা কেবলমাত্র অনুঘটকের দায়িত্ব পালন করব।”
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় নেতা স্বপন বলেন, “আগামীকাল মহানগর আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের তারিখও নির্ধারিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করছি।”
এ বিষয়ে নগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তার সাড়া মেলেনি।
নগর আওয়ামী লীগের ১৫টি থানা, ৪৩টি সাংগঠনিক ওয়ার্ড এবং ১২৯টি ইউনিট আছে। ইতিমধ্যে প্রায় ১০০টির মত ইউনিটের সম্মেলন হয়েছে। যা একতরফাভাবে করা হয়েছে বলে নাছির পক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ মহিউদ্দিনের অনুসারীদের।
২০১৩ সালের ১৪ নভেম্বর মহিউদ্দিনকে সভাপতি আর নাছিরকে সাধারণ সম্পাদক করে নগর কমিটি গঠিত হয়। ২০১৭ সালে মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুর পর সহ-সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
উত্তর-দক্ষিণের প্রতিনিধি সভা হচ্ছে না
২৭ মার্চ চট্টগ্রাম উত্তর জেলার ও ২৮ মার্চ দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি সভা কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে হওয়ার সময় নির্ধারিত ছিল।
বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি জনাব মোসলেম উদ্দিন এমপি অসুস্থ থাকায় আমরা প্রতিনিধি সভা স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছি। উত্তরের সভাটিও হচ্ছে না।”
দক্ষিণ জেলার সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের সভাপতি অসুস্থ। তিনি ঢাকায় আছেন। এছাড়া ২৮ মার্চ সংসদ অধিবেশন শুরু হবে। ওই সময় সংশ্লিষ্ট সবাই ঢাকায় থাকবেন। তাই এখন আর সভা করা যাচ্ছে না।”
উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঢাকার নেতাদের উপস্থিতিতে সভা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সংসদ অধিবেশনের কারণে সবাই ঢাকায় থাকবেন। আমরা রোজার পর সভাটি করব।”
২০১৩ সালে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার সবশেষ সম্মেলন হয়। আর ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে হয়েছিল উত্তর জেলার সর্বশেষ সম্মেলন।