যুদ্ধের মধ্যে ইউক্রেইনে আটকা পড়া বাংলাদেশি জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধিতে আটকা পড়া নাবিকরা এমনিতেই দুশ্চিন্তায় ছিলেন, রকেট হামলায় একজনের মৃত্যুর পর তাদের মধ্যে তৈরি হয়েছে আতঙ্ক।
Published : 03 Mar 2022, 12:06 PM
নিজেদের জীবন ‘ঝুঁকির’ মধ্যে জানিয়ে বাঁচার আকুতি জানিয়েছেন ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে নোঙ্গর করে থাকা জাহাজটির নাবিকরা।
বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) মালিকানাধীন এমভি বাংলার সমৃদ্ধর চিফ ইঞ্জিনিয়ার ওমর ফারুক তুহিন বৃহস্পতিবার সকালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “যে কোনে সময় এখানে আবারও মিসাইল পড়তে পারে। আমাদের লাইফ থ্রেটের মধ্যে আছে।”
ওমর ফারুক তুহিন বলেন, “আমরা এখনো শিপে অবস্থান করছি। আমাদের শিপ থেকে নামানোর কোনো ব্যবস্থা করা হয় নাই। কাইন্ডলি এটা প্রচার করেন।”
বিএসসির মহাব্যবস্থাপক ক্যাপ্টেন মুজিবুর রহমান বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ওই জাহাজে থাকা ২৯ জনের মধ্যে বাকি ২৮ জন সুস্থ আছেন। তাদের মধ্যে দুজন নারী ক্যাডেটও আছেন। নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে জাহাজের সাথে।
“তাদের পরবর্তী করণীয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আপাতত জাহাজে থেকে যাওয়াই নিরাপদ বলে মনে হয়েছে।”
সমৃদ্ধির মালিকানা বিএসসির হলেও ডেনিশ কোম্পানি ডেলটা করপোরেশনের অধীনে সেটি ভাড়ায় চলছিল। গত ২৬ জানুয়ারি মুম্বাই বন্দর থেকে রওনা হয়ে তুরস্কের ইরেগলি হয়ে ইউক্রেইনের অলভিয়া বন্দরে পৌঁছায় জাহাজটি।
২২ ফেব্রুয়ারি জাহাজটি বন্দরের আউটার অ্যাংকরেজে ছিল, পরদিন ইনার অ্যাংকরেজে নিয়ে যাওয়া হয়।
ওই বন্দর থেকে সিমেন্ট ক্লে নিয়ে ২৪ ফেব্রুয়ারি ইতালির রেভেনা বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার কথা ছিল বাংলার সমৃদ্ধির। কিন্তু সেদিন ভোরে রাশিয়া ইউক্রেইনে আগ্রাসন শুরু করলে পরিস্থিতি রাতারাতি বদলে যায়।
জাহাজটি যেখানে নোঙ্গর করে আছে সেখান থেকে মূল সাগরে যেতে ৬০ নটিক্যাল মাইল পথ পার হতে হবে এবং সেজন্য স্থানীয় ‘পাইলট’ দরকার, যে পথ দেখিয়ে জাহাজটিকে বের করে নেবে। কিন্তু যুদ্ধের মধ্যে তা পাওয়া যাচ্ছে না।
মোটামুটি ৪০ দিন টিকে থাকার মত খাবার ও পানি মজুদ আছে জাহাজে, রেশন করে চালালে আরও কিছু দিন চালানো যাবে। সে বিষয়ে আপাতত দুশ্চিন্তা না থাকলেও চোখের সামনে সহকর্মীর মৃত্যু দেখে নাবিকদের দেশে ফেরা নিয়ে উদ্বেগ আরও বেড়েছে।
শিপিং কর্পোরেশন ও বাংলাদেশ সরকারের তরফ থেকে যোগাযোগ রাখা হলেও মুক্তি মিলবে কীভাবে তা জানেন না জাহাজের নাবিকরা।