চট্টগ্রামে এক বাড়িতে লুট-নারী ধর্ষণের অভিযোগপত্রে আসামি ৬

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলায় এক বাড়িতে ডাকাতি ও নারী ধর্ষণের মামলায় ছয়জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Sept 2019, 12:59 PM
Updated : 2 Sept 2019, 01:00 PM

ঘটনার প্রায় ২১ মাস পর সোমবার চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আদালতে দেওয়া এ অভিযোগপত্রে কর্ণফুলী থানা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার তিনজনকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করেছে পিবিআই।

বিকালে অভিযোগপত্রটি প্রসিকিউশন শাখায় জমা পড়েছে বলে জানিয়েছেন নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) কাজী শাহাবউদ্দিন আহমেদ।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “অভিযোগপত্রটি যখন আমরা হাতে পেয়েছি তথন আদালতের সময় শেষ হয়ে গেছে।মঙ্গলবার তা আদালতে উপস্থাপন করা হবে।” 

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, পিবিআই’র হাতে গ্রেপ্তার ছয়জনকে মামলায় আসামি করা হয়েছে।

এরা হলেন- মিজান মাতব্বর, আবু সামা, মহিদুল ইসলাম, জহিরুল ইসলাম, ইলিয়াছ শেখ ও আব্দুল হান্নান ওরফে হান্নান মেম্বার।  

আর কর্ণফুলী থানা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার মো. সুমন, ফারুকী মাহমুদ ও ইমতিয়াজ উদ্দিন বাপ্পীর ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় তাদেরকে মামলা থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানান সন্তোষ।

আসামিদের মধ্যে মিজান, আবু সামা ও হান্নান মেম্বারকে চট্টগ্রাম থেকে, জহিরুলকে ঢাকা থেকে ও তার সহোদর মহিদুলকে ঝালকাঠি থেকে গ্রেপ্তার করেছিল পিবিআই। মিজান, আবু সামা ও জহিরুল আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

পুলিশ কর্মকর্তা সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, “ডাকাতির সময় চার নারীকে ধর্ষণের কথা বলা হলেও আসামিদের জবানবন্দি, ভিকটিমদের সাক্ষী থেকে জানা গেছে চারজনকে ধর্ষণের চেষ্টা করলেও দুইজনকে তারা ধর্ষণ করতে পেরেছিল।”

২০১৭ সালের ১২ ডিসেম্বর গভীর রাতে কর্ণফুলী উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়নের এক বাড়িতে ডাকাতির সময় তিন প্রবাসী ভাইয়ের স্ত্রী ও তাদের এক বোনকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল।

ধর্ষণের শিকার নারীরা ঘটনার পরদিন মামলা করতে গেলে ঠিকানা জটিলতার কথা বলে মামলা নিতে গড়িমসি করে কর্ণফুলী থানা পুলিশ। পরে স্থানীয় সাংসদ ভূমি প্রতিমন্ত্রী (বর্তমানে মন্ত্রী) সাইফুজ্জামান চৌধুরীর হস্তক্ষেপে পাঁচ দিন পর মামলা নেয় পুলিশ। সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয় তিনজনকে।

মামলা নিতে পুলিশের গড়িমসির অভিযোগের পর কর্ণফুলী থানার তৎকালীন ওসি সৈয়দুল মোস্তফাকে প্রত্যাহারের দাবি তুলেছিল চট্টগ্রামের বিভিন্ন সংগঠন।

২৫ ডিসেম্বর সংবাদ সম্মেলন করে নগর পুলিশের তৎকালীন উপ-কমিশনার (বন্দর) হারুণ উর রশিদ হাযারি মামলা নিতে কর্ণফুলী থানা পুলিশের ‘আংশিক’ ব্যর্থতার কথা স্বীকার করেছিলেন। আদালতও মামলা নিতে গড়িমসি ও এজাহারে ত্রুটি থাকায় কর্ণফুলী থানার ওসিকে শোকজ করেছিল।

২৬ ডিসেম্বর সদর দপ্তরের নির্দেশে মামলার তদন্তভার নেয় চট্টগ্রাম মেট্রো পিবিআই। দায়িত্ব নেওয়ার দুই দিনের মধ্যে তারা মিজান মাতুব্বর ও আবু সামা নামে দুইজনকে গ্রেপ্তার করে। এ দুইজন আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে আব্দুল হান্নান ওরফে হান্নান মেম্বারের পরামর্শে ওই বাড়িতে ডাকাতি করেছিল বলে জানান।