চার নারী ধর্ষণ: ‘আংশিক’ ব্যর্থতা স্বীকার করল পুলিশ

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানার শাহ মীরপুরের এক বাড়িতে চার নারীকে ধর্ষণের পর মামলা নিতে গড়িমসির ঘটনায় পুলিশের ‘আংশিক ব্যর্থতা’ ছিল বলে স্বীকার করেছেন একজন শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তা।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Dec 2017, 08:05 AM
Updated : 25 Dec 2017, 12:30 PM

ওই ঘটনা নিয়ে সোমবার দুপুরে কর্ণফুলী থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (বন্দর) হারুণ উর রশিদ হাযারি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, “অস্বীকার করার কিছু নেই। ওই বিষয়ে পুলিশের আংশিক ব্যর্থতা ছিল।”

গত ১২ ডিসেম্বর গভীর রাতে কর্ণফুলী উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়নের এক বাড়িতে ডাকাতির সময় তিন প্রবাসী ভাইয়ের স্ত্রী ও তাদের এক বোনকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।

ধর্ষণের শিকার নারীরা ঘটনার পরদিন মামলা করতে গেলে ঠিকানা জটিলতার কথা বলে মামলা নিতে গড়িমসি করে পুলিশ।

পরে ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বাবুর হস্তক্ষেপে পাঁচ দিন পর মামলা নেয় পুলিশ। সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয় তিনজনকে।

মামলা নিতে বিলম্ব এবং ধর্ষকদের গ্রেপ্তারে গড়িমসির অভিযোগে কর্ণফুলী থানার ওসি ওসি সৈয়দুল মোস্তফাকে প্রত্যাহারের দাবিতে গত ২২ ডিসেম্বর মানববন্ধন করে নারী উন্নয়ন ফোরাম নামের স্থানীয় একটি সংগঠন।

সংগঠনটির অভিযোগ, অনেক তালবাহানা শেষে পুলিশ মামলা নিয়ে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করলেও তাদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ না করে ‘অযথা সময়ক্ষেপণ’ করছে।

ধর্ষকদের সবাইকে গ্রেপ্তারের দাবিতে আগামী ২৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনরের কার্যালয় এবং পরদিন কর্ণফুলী থানা ঘেরাওয়ের কর্মসূচিও রয়েছে সংগঠনটির।

উপ-কমিশনার হারুণ উর রশিদ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “মামলা নেওয়া এবং ঘটনাস্থল পরিদর্শন পর্যন্ত প্রাথমিক পর্যায়ে পুলিশের আংশিক ব্যর্থতা ছিল। তখন বিষয়টি আরও গুরুত্ব দিয়ে দেখা দরকার ছিল।”

ওসির বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়টি পুলিশ কমিশনারকে জানানোর কথা বলেন উপ-কমিশনার হারুণ। তবে ওসির মত তিনিও বলেছেন, এজাহার দিতে বাদীর ‘ভুল’ হয়েছিল। ভূমি প্রতিমন্ত্রীর চাপে মামলা নেওয়ার বিষয়টিও তিনি এড়িয়ে গেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে হারুণ উর রশিদ বলেন, “মামলার বাদী ঘটনার দুই/তিন দিন পর থানায় এসে দস্যুতার কথা বলললেও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে ধর্ষণের বিষয়টি অস্বীকার করেছিলেন। ওই দিন রাত হয়ে যাওয়ায় বাদী আর থানায় মামলা না করে পরদিন অভিযোগ দাখিল করবেন বলে জানিয়েছিলেন।

“পরদিন ১৭ ডিসেম্বর থানার একজন পরিদর্শক (তদন্ত) ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত শুরু করেন। বাদী রাতে এসে অভিযোগ দিলে মামলা হয়।”

বাদী তার মামলার এজাহারে ৮৭ হাজার টাকা, আট ভরি ১২ আনা স্বর্ণালঙ্কার, কাপড় চোপড় ও পাঁচটি মোবাইল ফোন লুট হওয়ার কথা বলেছেন।

পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে তিনজনকে গ্রেপ্তার করলেও কোনো মালামাল উদ্ধার করতে পারেনি বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

অন্যদের মধ্যে অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (বন্দর) আরেফীন জুয়েল, সহকারী কমিশনার (কর্ণফুলী) জাহেদুল ইসলাম, ওসি সৈয়দুল মোস্তফা, পরিদর্শক (তদন্ত) হাসান ইমাম সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন।