দুইদিন আগে আবুল খায়ের গ্রুপের প্রায় সাড়ে আট লাখ ছিনতাইয়ের যে ঘটনা ঘটেছিল, তার সঙ্গে গ্রুপেরই এক কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
Published : 12 Apr 2018, 09:07 PM
পুলিশের ভাষ্য, বিভিন্ন সময় প্রতিষ্ঠানের টাকা তছরুপের ঘটনা ধামাচাপা দিতে আবুল খায়ের গ্রুপের ব্যবস্থাপক সঞ্জন পাল ছিনতাইয়ের ওই নাটক সাজিয়েছিলেন।
ওই ঘটনায় শাহেদ নামের এক ‘ছিনতাইকারীকে’ গ্রেপ্তারের পর পুলিশ ছিনতাই মামলার বাদি সঞ্জনকেও গ্রেপ্তার করেছে।
বৃহস্পতিবার তারা দুইজনই চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আবু সালেম মো. নোমানের আদালতে ছিনতাইয়ের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।
গত মঙ্গলবার দুপুরে নগরীর খুলশী থানার বাঘগোনা-আমবাগান সড়কের একে খান গেট এলাকায় ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে বলে পুলিশকে জানিয়েছিলেন সঞ্জন পাল। ঘটনার পর প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সঞ্জনই থানায় মামলা করেন।
এরপর তদন্তে নেমে ওই ছিনতাইয়ের ঘটনার নেপথ্যে সঞ্জনের সংশিল্লষ্টতা পায় পুলিশ।
“প্রতিষ্ঠানের অডিটে ওই টাকা বিভিন্ন দোকানে পণ্য মূল্য বাবদ বকেয়া হিসেবে দেখায় সঞ্জন। ওই টাকা যাতে ফেরত দিতে না হয় সেজন্য ছিনতাইয়ের নাটক সাজানোর পরিকল্পনা করেন সঞ্জন।”
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খুলশী থানার এসআই ইমাম হোসেন বলেন, বহদ্দারহাট এলাকায় ইফতেখার নামের পূর্ব পরিচিত একজনের সাথে পরামর্শ করে সঞ্জন।
“ইফতেখার, সঞ্জনসহ কয়েকজন মিলে পরামর্শ করে গত ৮ এপ্রিল ১৪ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে। কিন্তু ওইদিন ছিনতাই করতে না পারায় আবারও মঙ্গলবার সঞ্জনের নির্দেশনা অনুসারে ছিনতাইয়ের ওই নাটক ঘটানো হয়।”
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুর ওয়ারিশ বলেন, ঘটনার দিন একটি মোটর সাইকেল নিয়ে খুচরা নোট বড় করতে যাওয়ার কথা বলে বের হন সঞ্জন। সঙ্গে ছিলেন চালক আলী।
“অফিসকে সঞ্জন জানান, তিনি মোট ১১ লাখ টাকা নিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু তার কাছে থাকা ব্যাগে ছিল মাত্র দুই লাখ ৬০ হাজার টাকা।”
একটি মোর সাইকেলে করে আসা তিন ছিনতাইকারী ওই ব্যাগটি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।
আব্দুর ওয়ারিশ বলেন, “কিন্তু চালক আলী ছিনতাইকারী দলের সদস্য সুমন নামের একজনকে জাপটে ধরে। সুমন তখন টাকার ব্যাগ ফেলে দিলে সঞ্জন সেটি নিয়ে নেয়। এসময় আলী অন্য ছিনতাইকারীদের ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়।”
“ছিনতাইয়ের ঘটনা পুলিশকে জানিয়ে সঞ্জন দাবি করে, ছিনতাইকারীরা ব্যাগে থাকা ৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা নিয়ে গেছে। পরে জিজ্ঞাসাবাদেও সঞ্জন একই কথা বলেন। কিন্তু আলী জানায়, ব্যাগ থেকে কোনো টাকা ছিনতাইকারীর নিতে পারেনি।”
পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ছিনতাইয়ের নাটক সাজানোর কথা স্বীকার করেন সঞ্জন পাল।
মঙ্গলবার ছিনতাইয়ের ওই নাটকের আগেই তছরুপ করা টাকার মধ্যে দুই লাখ টাকা এক আত্মীয়ের বাসায় রেখে আসেন সঞ্জন পাল। ওই টাকা পুলিশ উদ্ধার করেছে।