চট্টগ্রামে ভারতীয় শিক্ষার্থী আতিফ শেখের খুনিকে শনাক্ত করতে ডিএনএ প্রতিবেদনের অপেক্ষায় আছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
Published : 05 Feb 2018, 06:05 PM
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সন্তোষ কুমার চাকমা জানান, আদালতের নির্দেশে কারাগারে আটক সন্দেহভাজন আতিফের দুই স্বদেশী শিক্ষার্থীর ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
“প্রতিবেদন পাওয়া গেলেই আমরা নিশ্চিত হয়ে যাব এ হত্যাকাণ্ডে কে জড়িত।”
গতবছরের ১৪ জুলাই গভীর রাতে আতিফ শেখ ও উইলসন সিং নামে চট্টগ্রামের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউএসটিসির এমবিবিএসের দুই ভারতীয় শিক্ষার্থীকে রক্তাক্ত অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়।
তারা নগরীর আকবর শাহ থানার আব্দুল হামিদ সড়কের ছয় তলা একটি ভবনের পঞ্চম তলায় থাকতেন।
এদের মধ্যে আতিফ ধারালো অস্ত্রের আঘাতে খুন হন, আর উইলসন ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলে ঘটনার পর সহপাঠীর বরাত দিয়ে জানায় পুলিশ।
খুনের ঘটনায় তিন দিন পর আতিফের বাবা আব্দুল খালেক আকবর শাহ থানায় মামলা করেন। তাতে সুনির্দিষ্ট কাউকে আসামি না করলেও আটজনকে সন্দেহের তালিকায় রাখেন তিনি।
এরপর পুলিশ আতিফের সহপাঠী ভারতীয় আরেক ছাত্র নিরাজ গুরুকে গ্রেপ্তার করে। আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে নিরাজ ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানেন না এবং রক্তাক্ত অবস্থায় আতিফকে ও আহতাবস্থায় উইলসনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা জানান।
থানা পুলিশ থেকে পিবিআই মামলার তদন্তের দায়িত্ব নিয়ে উইলসন সিংকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখায়।
হত্যাকাণ্ডের ছয় মাস পার হলেও পুলিশ এখনও আতিফের মূল হত্যাকারীকে শনাক্ত করতে পারেনি।
তদন্ত কর্মকর্তা সন্তোষ কুমার চাকমা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঘটনাস্থল থেকে সংগ্রহ করা বিভিন্ন আলামতের মধ্যে আমরা পাঁচটি আলামতের ডিএনএ পরীক্ষার জন্য ঢাকায় সিআইডি ল্যাবে পাঠিয়েছিলাম। সেখানে চারটি ডিএনএর মিল পাওয়া গেলেও একটি ভিন্ন ডিএনএ পাওয়া গেছে।”
তিনি জানান, ঘটনাস্থল থেকে যে ছুরিটি পাওয়া গেছে তা ভাঙ্গা ছিল। ছুরির ধারালো অংশে পাওয়া ডিএনএর সাথে অন্য আলামতের ডিএনএ নমুনার মিল পাওয়া গেলেও বাটে পাওয়া ডিএনএটি ভিন্ন জনের।
তবে ছুরিতে পূর্ণাঙ্গ আঙ্গুলের ছাপ অস্পষ্ট ছিল।
পিবিআই কর্মকর্তা সন্তোষ বলেন, “ভিন্ন ডিএনএ পরীক্ষা করতে কারাগারে আটক সন্দেহভাজন দুই শিক্ষার্থীর ডিএনএ পরীক্ষার জন্য আদালতে আবেদন করেছিলাম। আদালতের আদেশ পেয়ে গত ২১ জানুয়ারি দুইজনকে ঢাকায় নিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছে।”
তিন দফায় উইলসন সিংকে রিমান্ডে নেয়ার পরও কোনো তথ্য আদায় করা যায়নি। হত্যাকাণ্ডের আগে-পরের সব ঘটনার বর্ণনা দিলেও হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি তিনি এড়িয়ে গেছেন বলে জানান তদন্ত কর্মকর্তা।
দুই দফা রিমান্ডের পর উইলসনের মানসিক অবস্থা জানতে চিকিৎসক দিয়ে পরীক্ষা করতে আদালতে আবেদন করে পিবিআই। আদালতের নির্দেশে গঠিত মেডিকেল বোর্ড পরীক্ষা নিরীক্ষা করে উইলসন সিং পুরোপুরি সুস্থ এবং জিজ্ঞাসাবাদে সে ভুলে যাওয়ার কথা বলছে বলে প্রতিবেদন দিয়েছে।
প্রতিবেদন পাওয়ার পর আরেক দফা রিমান্ডে নিয়েও উইনসন সিং থেকে কোনো তথ্য আদায় করতে পারেননি তদন্ত কর্মকর্তা।