চট্টগ্রামের সাবেক সংসদ সদস্য এম এ লতিফের ছেলে ওমর হাজ্জাজের নেতৃত্বাধীন ২৪ সদস্যের পর্ষদ ২০২৩ সালের ৬ অগাস্ট নির্বাচিত হয়েছিল।
Published : 02 Sep 2024, 10:32 PM
চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি ওমর হাজ্জাজসহ পুরো পর্ষদ পদত্যাগ করেছে; নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনায় প্রশাসক চেয়েছেন তারা।
দেশের অন্যতম প্রাচীন এ ব্যবসায়িক সংগঠনের ২৪ জনের পরিচালনা পর্ষদ সোমবার পদত্যাগপত্র বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য সংগঠন অনুবিভাগের মহাপরিচালকের কাছে পাঠিয়েছে।
একই সঙ্গে চেম্বারের নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একজন প্রশাসক নিয়োগের অনুরোধও করা হয়েছে চিঠিতে।
চেম্বারের পদত্যাগকারী সভাপতি ওমর হাজ্জাজ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ”গত কয়েকদিনে চট্টগ্রাম চেম্বারের পরিচালকেরা আমার নিকট পদত্যাগপত্র দিয়েছেন। আমরা সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে পদত্যাগ করেছি। এ সংক্রান্তে চিঠি দিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে।“
চট্টগ্রামের সাবেক সংসদ সদস্য এম এ লতিফের ছেলে ওমর হাজ্জাজের নেতৃত্বাধীন ২৪ সদস্যের পর্ষদ ২০২৩ সালের ৬ অগাস্ট নির্বাচিত হয়েছিল।
মোট ২৪ পরিচালকদের মধ্যে গত রোববার ১০ জন সভাপতির নিকট পদত্যাগপত্র জমা দেন। সোমবার সভাপতিসহ মোট ১১ জন পরিচালক পদত্যাগ করেন।
সরকার পরিবর্তনের পর গত ২৮ অগাস্ট সিনিয়র সহ-সভাপতি তরফদার রুহুল আমিন ও পরিচালক জহিরুল ইসলাম চৌধুরী চেম্বার সভাপতির কাছে তাদের পদত্যাগপত্র দেন।
অপরদিকে দায়িত্ব নেওয়ার কিছুদিন পর ২০২৩ সালের অগাস্টে পরিচালক সৈয়দ মো. তানভীর পদত্যাগ করেছিলেন। তার স্থানে পরে আর নির্বাচন হয়নি।
ওমর হাজ্জাজ বলেন, চট্টগ্রাম চেম্বারের দৈনন্দিন র্কাযক্রম পরিচালনা এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রশাসক নিয়োগ করতে বাণিজ্য সংগঠন অনুবিভাগের মহাপরিচালক বরাবরে অনুরোধও জানানো হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠিতে আগের সরকার পতনের কথা তুলে ধরে বলা হয়, ‘‘বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মত চট্টগ্রাম চেম্বার ঘিরে ‘চট্টগ্রামের সকল ব্যবসায়ী সমাজ’ ও ‘বঞ্চিত ব্যবসায়ী সমাজ‘ এর ব্যানারে বর্তমান চেম্বার পরিচালনা পর্ষদের পদত্যাগ ও ভেঙে দিয়ে নতুন নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে।
‘‘সদস্যদের দাবির প্রতি সম্মান রেখে চেম্বারের স্বাভাবিক র্কাযক্রম বজায় রাখার স্বার্থে বিশেষ করে আগামীতে একটি সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন আয়োজনে সহযোগিতার লক্ষ্যে বর্তমান পরিচালনা বোর্ডের সকল পরিচালক পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।‘‘
চেম্বারের সচিব মোহাম্মদ ফারুক বলেন, চট্টগ্রাম চেম্বারের পুরো কমিটি পদত্যাগ করেছেন। চিঠিটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বরাবর পাঠানো হয়েছে।
২০২৩ সালের ৬ অগাস্ট শতবর্ষী চট্টগ্রাম চেম্বারের ২৪ পরিচালক বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়। দুই দিন পর পরিচালকমণ্ডলীর সভায় সভাপতি নির্বাচিত হন চট্টগ্রাম-১১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এম এ লতিফের পুত্র ওমর হাজ্জাজ।
এর আগে এক দশক সভাপতি ছিলেন এম এ লতিফ সমর্থিত ব্যবসায়ী বর্তমান এফবিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম। তিনি ২০১৩ সালের ৩০ মার্চ নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর পাঁচ দফায় ১০ বছর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রাম চেম্বারের নির্বাচন না হওয়ায় ব্যবসায়ীদের একটি অংশের মধ্যে ক্ষোভ ছিল। গত ৫ অগাস্ট সরকার পতনের পর ওইসব ব্যবসায়ীরা ‘চট্টগ্রামের সকল ব্যবসায়ী সমাজ‘ ও ‘বঞ্চিত ব্যবসায়ী সমাজ‘ এর ব্যানারে বর্তমান পর্ষদ ভেঙ্গে নিয়ে নতুন নির্বাচন দাবি করেন।
চট্টগ্রাম চেম্বারের বিদায়ী পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ বলেন, গত পাঁচ মেয়াদে হওয়া কমিটির প্রতিটিই বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছে। অর্থাৎ ওই প্যানেলের বিপরীতে কোন প্রার্থীতা না থাকায় আর নির্বাচন হয়নি।
চট্টগ্রাম চেম্বারের প্রতিটি কমিটির মেয়াদ দুই বছরের। সে হিসাবে বর্তমান কমিটির মেয়াদ আরও এক বছর থাকার আগেই সবাই পদত্যাগ করলেন।
আরও পড়ুন