৩১ বছর বয়সী নবনির্বাচিত সভাপতি এ চেম্বারের সাবেক সভাপতি ও সাংসদ এম এ লতিফের ছেলে; নতুন সহ সভাপতি চেম্বারের বর্তমান সভাপতির মেয়ে।
Published : 08 Aug 2023, 10:18 PM
এক দশক পর নতুন সভাপতি পেতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম চেম্বার; বিনা ভোটে দেশের অন্যতম পুরনো এ ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতা নির্বাচিত হয়েছেন ওমর হাজ্জাজ, যিনি সংসদ সদস্য ও চেম্বারের সাবেক সভাপতি এম এ লতিফের ছেলে।
মঙ্গলবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংগঠনের শীর্ষ তিন পদের নির্বাচনে বর্তমান সভাপতি মাহবুবুল আলমের মেয়ে রাইসা মাহবুব সহ সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। আর সিনিয়র সহ সভাপতি পুর্ননির্বাচিত হয়েছেন সাইফ পাওয়ারটেকের কর্ণধার তরফদার মো. রুহুল আমিন।
৩১ বছর বয়সী ওমর হাজ্জাজসহ এ তিন পরিচালকের প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকলে তারা বিনা ভোটে নির্বাচিত হন।
এর আগে চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (সিসিসিআই) ২০২৩-২৫ মেয়াদের নির্বাচনে ২৪ পরিচালক পদে একাধিক প্রার্থী না থাকায় তাদের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়। এতে গত ১৫ জুন ঘোষিত তফসিল অনুসারে আগামী ৫ সেপ্টেম্বর আর ভোটের দরকার পড়েনি।
মঙ্গলবার সকালে নগরীর আগ্রাবাদের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে শীর্ষ দায়িত্বে নেতা নির্বাচন করেন পরিচালকরা বলে চেম্বারের সচিব (ইনচার্জ) প্রকৌশলী মোহাম্মদ ফারুক স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এর আগে চট্টগ্রাম চেম্বারে সবশেষ নির্বাচন হয়েছিল ২০১৩ সালের ৩০ মার্চ। সেবার চট্টগ্রাম ১১ আসনের সংসদ সদস্য এম এ লতিফের সমর্থন নিয়ে জয়ী হন বর্তমান সভাপতি মাহবুবুল আলম-নুরুন নেওয়াজ সেলিম পরিষদ। সেবার ২৪টি পদের মধ্যে ২০টিতেই এ পরিষদ জয়ী হয়।
এরপর থেকে সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন মাহবুবুল, যিনি এবার ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। ২০১৩ সালের পর পরের চার মেয়াদে মাহবুবুলের প্রতিদ্বন্দ্বী প্যানেল ছিল না।
চট্টগ্রামের এ ঐতিহ্যবাহী চেম্বারে গত প্রায় এক দশকের বেশি সময় ধরেই এম এ লতিফের প্রভাব রয়েছে। বিভিন্ন সময় নেতৃত্ব নির্বাচনে তার সমর্থন গুরুত্ব রাখে বলে আলোচনা আছে। এবার তার সন্তান চেম্বারের শীর্ষ পদের দায়িত্বে এলেন।
১৯৯২ সালে জন্মগ্রহণকারী ওমর হাজ্জাজ রিলায়েন্স ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী। এর আগে তিনি ২০১৯-২১ মেয়াদে সিনিয়র সহ সভাপতি এবং ২০১৭-১৯ মেয়াদে পরিচালক নির্বাচিত হন। এবার এলেন শীর্ষ পদে।
মাহবুবুল আলমের নেতৃত্বাধীন বর্তমান পর্ষদের মেয়াদ আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর শেষ হবে। এরপর নবনির্বাচিত পর্ষদ দায়িত্ব গ্রহণ করবে।
নবনির্বাচিত সভাপতি ওমর হাজ্জাজ পরিচালকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমিই সম্ভবত সভাপতি হিসেবে নবীনতম নই। বর্তমান ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী মহোদয় আমার চেয়েও কম বয়সে এই চেম্বারের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন। আমি সবার সমর্থন ও দোয়া চাই।”
চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রধান হিসেবে ভবিষ্যত কর্মপরিকল্পনার বিষয়ে বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামে যে বিশাল অঙ্কের বিনিয়োগ করেছেন তার সবই ব্যবসা-বাণিজ্য কেন্দ্রিক। তিনি মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর, মীরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর, কর্ণফুলীর তলদেশে টানেল, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উন্নয়নসহ বহু প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন।
“আমাদের কাজ হল ব্যবসার কাজে এসব অবকাঠামো ও সুযোগকে সদ্ব্যবহার করা। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করা। এবং দেশি উদ্যোক্তাদের সবরকম সহযোগিতা করা, যাতে আমলাতান্ত্রিক দীর্সূত্রিতা কমিয়ে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা সহজে ব্যবসা করতে পারেন। চট্টগ্রামে বিজনেস প্রমোট ও প্রটেক্ট করাই আমার লক্ষ্য।”
তরুণ এ ব্যবসায়ী নেতা মালয়েশিয়া সানওয়ে ইউনিভার্সিটি থেকে কমিউনিকেশন্স অ্যান্ড ম্যাস মিডিয়া স্টাডিজ থেকে সম্মান ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি জিডি হার্বার সার্ভিস ও গ্লোব ইঞ্জিনিয়ারিং এর ম্যানেজিং পার্টনার, রিলায়েন্স অ্যাসেটস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টস (বিডি) লি., রিলায়েন্স শিপইয়ার্ড লি. এবং চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেডের পরিচালক।
পুর্ননির্বাচিত সিনিয়র সহ সভাপতি তরফদার মো. রুহুল আমিন সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
আর নর্বনির্বাচিত সহ সভাপতি রাইসা মাহবুব রাইসা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী। তিনি চট্টগ্রাম চেম্বারের উইম্যান এন্ট্রাপ্রিনারশিপ ডেভেলাপমেন্ট বিষয়ক স্ট্যান্ডিং সাব কমিটির কো-কনভেনর ও কনভেনর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
মঙ্গলবার নির্বাচনের সময় পর্ষদে নবনির্বাচিত পরিচালকরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. নুরুন নেওয়াজ, সদস্য মোহাম্মদ আলী চৌধুরী ও ওয়াহিদ আলম এবং নির্বাচন আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান সরওয়ার হাসান জামিল।