ক্যান্সার, কিডনি সমস্যা, স্ট্রোক ও থ্যালাসেমিয়াসহ বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত রোগীদের ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়।
Published : 01 Apr 2023, 03:16 PM
চট্টগ্রামে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ৯০ জনকে ৪৫ লাখ টাকা সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
শনিবার নগরীর সার্কিট হাউজে জেলা প্রশাসন ও জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের আয়োজনে এক অনুষ্ঠানে অসুস্থ দুঃস্থদের হাতে চেক তুলে দেওয়া হয়।
ক্যান্সার, কিডনি, লিভার সিরোসিস, স্ট্রোক, প্যারালাইজড, জন্মগত হৃদরোগ ও থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত এসব ব্যক্তিদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয় অনুষ্ঠানে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সমাজসেবা অধিদপ্তর অসহায় গরীব রোগীদের এই সহায়তা দিয়ে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রতিবছর দেশে প্রায় ৩ লাখ মানুষ ক্যান্সার, কিডনি, লিভার সিরোসিস, স্ট্রোকে প্যারালাইজড, জন্মগত হৃদরোগ ও থ্যালাসেমিয়ায় মৃত্যুবরণ করে। অর্থের অভাবে এসব রোগে আক্রান্তদের চিকিৎসা ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি তাদের পরিবারও চিকিৎসার ব্যয় বহন করে নিঃস্ব হয়ে পড়ে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ নির্দেশনা আছে যে, আমরা শুধুমাত্র অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে গেলেই হবে না। যারা অসুস্থ, চিকিৎসার অর্থ সংস্থানে কষ্ট পাচ্ছেন রাষ্ট্র তাদেরকে সহযোগিতা করবে।
“এর অংশ হিসেবে সরকারিভাবে এই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রামে অনেক ব্যবসায়ী আছেন। তাদের আহ্বান জানাই সরকারের এই উদ্যোগের সাথে শরিক হন।”
তিনি বলেন, “চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল নামে দুটি সরকারি প্রতিষ্ঠান আমাদের আছে। সেখানে যদি ক্যাপাসিটি বাড়াতে পারি…। নতুন প্রতিষ্ঠান করতে গেলে নতুন অর্গানোগ্রাম, জনবল, নতুন ক্যাম্পাস তৈরি করতে হয়।
“ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামের জন্য একটি ১০০ বেডের স্পেশালাইজড ক্যান্সার ভবন এবং সেটার জন্য জনবলও দিয়েছেন। সেটা হয়ে গেলে ঢাকায় বিশেষায়িত ক্যান্সার প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে সেসব চিকিৎসার সুযোগ চট্টগ্রামে নিয়ে আসতে পারব।”
চট্টগ্রামে ক্যান্সার ও হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার হার বেশি জানিয়ে নওফেল বলেন, “বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সেদিন আমাকে বলছিলেন, ‘চট্টগ্রাম-কক্সবাজার অঞ্চলে অতিমাত্রায় শুটকি খাওয়ার একটা প্রবণতা আছে। এতে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে।’ এতবেশি খাওয়া হয় যে বাংলাদেশে শুটকি ইমপোর্ট করে আনতে হয়। বাংলাদেশে শুটকির ৭০ শতাংশ ইমপোর্ট করা হয়। হৃদরোগ এবং কিডনির জন্য অতিরিক্ত রেড মিটও একটা ঝুঁকি তৈরি করে।
“আমাদের চট্টগ্রামের ঐতিহ্য একটা জিনিস আছে, কিন্তু অতিমাত্রায় ব্যবহারের কারণে যদি সেটা ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়, তখন সেটা সমস্যা হয়ে যায়। যখন একবার পাকস্থলির ক্যান্সার হয়ে যাবে...। এটা অবশ্যই ভাবার প্রয়োজন আছে। এত শুটকি খাওয়ার প্রয়োজনীয়তা আদৌ আছে কিনা। কিভাবে এই শুটকি প্রক্রিয়াজাতকরণ করা হয়? সেখানে কি দেয়া হয়? এ বিষয়ে সচেতনা প্রয়োজন।”
অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, সমাজসেবার বিভাগীয় পরিচালক কাজী নাজিমুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাকিব হাসান, নেজারত ডেপুটি কালেক্টর মো. তৌহিদুল ইসলাম, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়েল উপ-পরিচালক মো. ফরিদুল আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।