গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশের পাসপোর্ট করাতে ব্যবহার করা হয় এসব নকল এনআইডি ও জন্মনিবন্ধন সনদ।
Published : 29 Mar 2023, 07:20 PM
রোহিঙ্গাদের হাতে বাংলাদেশি পাসপোর্ট যাওয়ার ঘটনা তদন্তে রাজধানীকেন্দ্রিক একটি অপরাধ চক্রের সন্ধান পেয়েছে চট্টগ্রামের গোয়েন্দা পুলিশ।
ওই চক্রের তিন সদস্যকেও পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে, যারা পাসপোর্ট আবেদনের জন্য ভুয়া তথ্য দিয়ে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ও জন্মনিবন্ধন সনদ তৈরি করে দেয়।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন- মো. রাজু শেখ (৩২), মাহমুদুল রিয়াদ (২৪) ও নয়ন শেখ (২১)।
মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁও পাসপোর্ট কার্যালয়ের সামনে একটি কম্পিউটার দোকান থেকে এই তিন জনকে গ্রেপ্তার করার কথা জানান চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) নিহাদ আদনান তাইয়ান।
গোয়েন্দা কর্মকর্তা নিহাদ আদনান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি আসাদউল্লাহ নামে হত্যা মামলার আসামি এক রোহিঙ্গাকে গ্রেপ্তার করা হয়। রোহিঙ্গা হয়েও বাংলাদেশের পাসপোর্ট থাকায় তার বিরুদ্ধে পাসপোর্ট আইনে একটি মামলা হয়। ওই মামলার তদন্ত করতে গিয়ে ঢাকার এ চক্রটির সন্ধান পাওয়া যায়।
বিমানবন্দরে আটক রোহিঙ্গা যুবকের পাসপোর্টে চট্টগ্রামের ঠিকানা
“গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে তিনটি এনআইডি ও পাঁচটি জন্মনিবন্ধন সনদ জব্দ করা হয়েছে।”
ভুয়া তথ্য দিয়ে তৈরি করা এসব এনআইডি ও জন্ম নিবন্ধন সনদ রোহিঙ্গাদের জন্য তৈরি করা এবং এগুলো তথ্য ভাণ্ডারেও সংরক্ষিত আছে বলে জানান তিনি।
গোয়েন্দা পুলিশের এই উপ-কমিশনার বলেন, “চট্টগ্রামের ঠিকানায় পাসপোর্ট তৈরি করতে হলে জমির খতিয়ানসহ বিভিন্ন নথি জমা দিতে হয় আবেদনকারীদের। যেটা অন্য জেলার ক্ষেত্রে শিথিল। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে রোহিঙ্গারা ঢাকার ঠিকানা ব্যবহার করে পাসপোর্ট আবেদন করছেন।”
তিনি বলেন, আসাদউল্লার মামলার তদন্ত করতে গিয়ে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি দুই রোহিঙ্গাসহ ছয় জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মধ্যে এক রোহিঙ্গার আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে পাসপোর্ট পেতে সহায়তার বিষয়ে ঢাকার চক্রটির সদস্য রাজুর নাম আসে। ওই তথ্যের ভিত্তিতে রাজুসহ তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
রাজুর কাছ থেকে আরও কয়েক জনের নাম পাওয়া গেছে জানিয়ে গোয়েন্দা কর্মকর্তা নিহাদ আদনান বলেন, “(ওই চক্রের) চট্টগ্রামের কিছু সদস্য বিভিন্ন রোহিঙ্গার কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে নাম ও ছবি রাজুর কাছে পাঠিয়ে দেয়। রাজু সেগুলো দিয়ে এনআইডি ও জন্মনিবন্ধন তৈরি করে। পরে যেগুলো তারা পাসপোর্ট আবেদনের ক্ষেত্রে ব্যবহার করে।
“প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা স্বীকার করেছেন, ঢাকায় বাংলাদেশিদের আবেদনপত্র জমা দেওয়ার ফাঁকে তারা কয়েকজন করে রোহিঙ্গাও পাঠিয়ে দেন। যাদের সহায়তা করেন পাসপোর্ট কার্যালয়ের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যরা।”
এ তথ্যটি যাচাই করা হচ্ছে বলে জানান গোয়েন্দা কর্মকর্তা নিহাদ আদনান তাইয়ান।