আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে বিষয়টি তদন্ত করতে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছে।
Published : 30 Jan 2025, 08:59 PM
‘জালিয়াতির মাধ্যমে’ ১০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও ‘প্রাণনাশের হুমকি’ দেওয়ার অভিযোগে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ করেছেন এক ব্যবসায়ী।
নাজমে নওরোজ নামের ওই নারী বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের ষষ্ঠ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলামের আদালতে অভিযোগটি করেন।
আদালত ওই অভিযোগ আমলে নিয়ে তা তদন্ত করতে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছে বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান বাদীর আইনজীবী শুভঙ্কর ঘোষ।
মামলার আসামিরা হলেন- সাইফুল আলম মাসুদ, তার শ্বশুর আলী জহুর, সাইফুল আলম মাসুদের শ্যালিকা জেসমিন আরশেদ, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের প্রবর্তক মোড় শাখার সাবেক ভিপি মো. জাকারিয়া, ওই শাখার সাবেক একাউন্টস অফিসার মো. আকিজ উদ্দিন ও সাবেক ম্যানেজার মো. ওসমান।
মামলার বাদী নাজমে নওরোজ একজনা নারী উদ্যোক্তা। নওরোজ এন্টারপ্রাইজ নামের একটি কোম্পানির মাধ্যমে তিনি ২০১৩ সাল থেকে ব্যবসা করছেন।
মামলার আবেদনে বাদী দাবি করেন, ব্যবসার সূত্রে আলী জহুর ও জেসমিন আরশেদের সাথে তার পরিচয় হয়। তাদের মাধ্যমে সাইফুল আলম মাসুদের সাথেও তার সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে।
ব্যবসার পরিধি বাড়ানোর জন্য আর্থিক সহযোগিতা করার আশ্বাস পেয়ে সাইফুল আলম মাসুদের ‘নির্দেশে’ নাজমে নওরোজ তার প্রতিষ্ঠান নওরোজ এন্টারপ্রাইজ পুনর্গঠন করেন। জেসমিন আরশেদকে কোম্পানির ৪৫ শতাংশ শেয়ারের মালিক এবং আলী জহুরকে ৪০ শতাংশ শেয়ারের মালিক দেখিয়ে তাদের পরিচালক করেন। নিজে ১৫ শতাংশ শেয়ার রেখে এমডি হন।
পরে সেসময়ের ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে সাইফুল আলম মাসুদ নওরোজ এন্টারপ্রাইজ বন্ধক রেখে ওই ব্যাংকের প্রবর্তক মোড় শাখা থেকে ৪৭ কোটি টাকা ঋণ নেন। যার মধ্যে ১৫ কোটি টাকা নাজমে নওরোজকে দেওয়া হলেও বাকি টাকা আসামিরা ‘আত্মসাৎ করেন’ বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।
পরে সাইফুল আলম মাসুদের নির্দেশে ব্যাংকে সুদ মওকুফ ও ঋণ রিশিডিউলের আবেদন করেন নাজমে নওরোজ। আবেদনের প্রেক্ষিতে ৩১ কোটি ৬১ লাখ টাকার সুদ মওকুফ হয়। তিন বছরের জন্য রিশিডিউল করা ঋণের স্থিতি দাঁড়ায় ৫৫ কোটি টাকা।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, পরে ওই ব্যাংকের সাবেক তিন কর্মকর্তার যোগসাজোশে ব্যাংকে বাদীর দেওয়া খালি চেকে স্বাক্ষর জাল করে ২০১৯ সাল থেকে ২০২২ সালের মধ্যে বিভিন্ন সময় মোট ১০০ কোটি টাকা তুলে নিয়ে আত্মসাৎ করা হয়।
পরে নাজমে নওরোজ আসামি সাইফুল আলম মাসুদের সাথে যোগাযোগ করে ওই টাকা পরিশোধ করতে বললে তাকে অর্থ পরিশোধ করতে হবে বলে আশ্বস্ত করা হয়।
তবে ২০২৪ সালের ১৫ মে নগরীর নাসিরাবাদ আবাসিক এলাকায় সাইফুল আলম মাসুদের বাসায় গিয়ে ওই ১০০ কোটি টাকা তার অ্যাকাউন্টে ফেরত দিতে বলেন নাজমে নওরোজ।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, সেদিন সাইফুল আলম মাসুদ তার সাথে ‘উচ্ছৃঙ্খল’ আচরণ করেন। এসময় অন্য আসামিরা তার সাথে সমস্ত লেনদেন অস্বীকার করেন এবং ভবিষ্যতে টাকা চাইতে গেলে তাকে ‘প্রাণনাশের হুমকি’ দেন।