দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে ২ উইকেট হাতে নিয়ে মধ্যাঞ্চলের চেয়ে ৪৫ রানে পিছিয়ে উত্তরাঞ্চল।
Published : 06 Dec 2023, 06:41 PM
সিলেটে দারুণ জমে ওঠেছে মধ্যাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চলের লড়াই। নাঈম ইসলামের রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরির পরও মধ্যাঞ্চলকে তিনশ রানের নিচে গুটিয়ে দেওয়ার স্বস্তি উবে যেতে বসেছিল ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায়। সেখান থেকে দারুণ এক সেঞ্চুরিতে উত্তরাঞ্চলের লিডের আশা জাগিয়েছেন তাওহিদ হৃদয়।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের একাডেমি মাঠে বুধবার দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে উত্তরাঞ্চলের সংগ্রহ ৮ উইকেটে ২৩৬ রান। বিসিএলের প্রথম রাউন্ডে মধ্যাঞ্চলকে ২৮১ রানে গুটিয়ে দেওয়া দলটি এখনও ৪৫ রানে পিছিয়ে।
আশা হয়ে এখনও ক্রিজে টিকে আছেন হৃদয়। ওয়ানডে ঘরানার ব্যাটিংয়ে ১৩৮ বলে ১৩২ রানে অপরাজিত তরুণ এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তার তৃতীয় সেঞ্চুরির ইনিংস সাজানো ১৩ চার ও চার ছক্কায়।
ব্যাটিংয়ে নেমে ৯৬ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ভীষণ বিপদে পড়ে গিয়েছিল উত্তরাঞ্চল। সাব্বির রহমানের সঙ্গ ৬১ রানের জুটিতে কিছুটা প্রতিরোধ গড়েন হৃদয়। চার বলের মধ্যে সাব্বির ও সানজামুল ইসলামকে ফিরিয়ে বড় লিডের আশা জাগান শুভাগত হোম চৌধুরি।
তবে এরপরই রিশাদ হোসেনকে নিয়ে ইনিংসের সেরা জুটি উপহার দেন হৃদয়। অষ্টম উইকেট জুটিতে দুই জনে মিলে যোগ করেন ৭৯ রান। দিনের অন্তিম সময়ে রিশাদকে ফিরিয়ে মাথাব্যথার কারণ হয়ে ওঠা জুটি ভাঙেন এনামুল হক।
এর আগে ৮ উইকেটে ২৫৬ রান নিয়ে খেলতে নেমে বেশি দূর যেতে পারেনি মধ্যাঞ্চল। এদিন দলটির ইনিংস টেকে কেবল ৬.৪ ওভার, যোগ করতে পারে ২৫ রান।
এর ১৯ রানই আসে আগের দিন সেঞ্চুরি পাওয়া নাঈমের ব্যাট থেকে। অভিজ্ঞ এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান তিন ছক্কা ও নয় চারে ১৯৫ বলে করেন ১২২ রান। পরের ওভারেই এনামুলকে ফিরিয়ে মধ্যাঞ্চলের ইনিংসের ইতি টানেন মুশফিক হাসান। ৩৭ রানে ৪ উইকেট নিয়ে তিনিই উত্তরাঞ্চলের সফলতম বোলার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
মধ্যাঞ্চল ১ম ইনিংস: ৬৮.৪ ওভারে ২৮১ (নাঈম ইসলাম ১২২, এনামুল ২, আরিফ ০*; মুশফিক ১৬.৪-২-৩৭-৪, নাহিদ ২০-৩-১১২-২, সানজামুল ১১-২-৩৯-১, মামুন ১২-০-৪৬-২, সাব্বির ২-০-৩-০, রিশাদ ৭-০-৩৬-১)
উত্তরাঞ্চল ১ম ইনিংস: ৬২.২ ওভারে ২৩৬/৮ (তানজিদ ০, সাব্বির হোসেন ১৯, প্রিতম ৭, আল মামুন ১১, হৃদয় ১৩২*, আকবর ৬, সাব্বির রহমান ১৪, সানজামুল ০, রিশাদ ৪৬, মুশফিক ০*; আবু হায়দার ১৪-১-৪৬-২, শহিদুল ১২-১-৩৮-২, এনামুল ১০.২-০-৩৮-১, আরিফ ১৯-০-৭৫-১, শুভাগত ৬-১-২৯-২, তাইবুর ১-০-৯-০)
শামসুর-তানজিমের ফিফটি, তানভিরের ৫ উইকেট
দুই ওপেনার সৈকত আলি ও পারভেজ হোসেনের ফিফটিতে বড় রানের মঞ্চই পেয়েছিল পূর্বাঞ্চল। দায়িত্বশীল ইনিংসে দলকে সেই পথে রেখেছিলেন শামসুর রহমান। তবে পঞ্চাশ ছুঁয়ে তিনি ফিরে গেলে তিনশ পেরিয়েই গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়ে যায় দল। সেখান থেকে দলকে চারশ রানে নিয়ে যান তানজিম হাসান ও রেজাউর রহমান রাজা।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে ২ উইকেটে ১২৩ রান করেছে দক্ষিণাঞ্চল। প্রথম ইনিংসে ৪০২ রান করা পূর্বাঞ্চলের চেয়ে এখনও ২৭৯ রানে পিছিয়ে তারা।
ওয়ানডে ঘরানার ব্যাটিংয়ে দুই ছক্কা ও তিন চারে ৪৮ বলে ৩৮ রান করে ফেরেন সৌম্য সরকার। তার আগেই এলবিডব্লিউ হয়ে বিদায় নেন এনামুল হক। দুটি উইকেটই নেন নাঈম আহমেদ।
তৃতীয় উইকেটে ৬১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে আর কোনো ক্ষতি হতে দেননি ফজলে মাহমুদ ও মোহাম্মদ মিঠুন। দুটি করে ছক্কা ও চারে ৭৮ বলে ৩২ রানে খেলছেন মাহমুদ। চারটি চারে ৫৮ বলে মিঠুনের রান ৩১।
এর আগে ৫ উইকেটে ২৪২ রান নিয়ে খেলতে নেমে শুরুতেই ইরফান শুক্কুরকে হারায় পূর্বাঞ্চল। নাসুম আহমেদের সঙ্গে ৪৭ রানের জুটিতে দলকে তিনশ রানে নিয়ে যান শামসুর। পরপর দুই ওভারে এই দুই ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে নিজের ৫ উইকেট পূর্ণ করেন তানভির আহমেদ।
৯৬ বলে ৫৩ রান করেন শামসুর, নাসুম খেলেন ২৩ রানের ছোট্ট কিন্তু কার্যকর ইনিংস।
৩০৫ রানে প্রথম আট ব্যাটসম্যানের বিদায়ের পর প্রতিরোধ গড়েন তানজিম ও রাজা। ৯০ রানের জুটিতে তারা দলকে নিয়ে যান চারশ রানে। ৬ চারে ৯১ বলে ৬৬ রান করা তানজিমকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন কামরুল ইসলাম রাব্বি। একটি করে ছক্কা ও চারে ৩১ রান করা রাজাকে পরের ওভারে ফিরিয়ে পূর্বাঞ্চলের ইনিংসের ইতি টানেন তিনি।
১১৪ রানে ৫ উইকেট নিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের সফলতম বোলার বাঁহাতি স্পিনার তানভির। ৬০ রানে ৩ উইকেট নেন পেসার কামরুল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পূর্বাঞ্চল ১ম ইনিংস: ১৩৪.১ ওভারে ৪০২ (শামসুর ৫৩, ইরফান ১৬, নাসুম ২৩, তানজিম ৬৬, রাজা ৩১, নাঈম ০*; আল আমিন ১৯-৪-৫৪-১, কামরুল ১৫.১-৪-৬০-৩, মেহেদি ২২-১-৬৮-০, তানভির ৪২-৬-১১৪-৫, মইন ২৭-২-৬৩-১, মিঠুন ১-০-৬-০, সৌম্য ৬-০-২৬-০, এনামুল ১-০-১-০, মাহমুদ ১-০-৭-০)
দক্ষিণাঞ্চল ১ম ইনিংস: ৩৫ ওভারে ১৩২/২ (সৌম্য ৩৮, এনামুল ১৯, মাহমুদ ৩২*, মিঠুন ৩১*; তানজিম ৮-১-২৮-০, নাঈম ১০-১-৩৫-২, রাজা ৯-১-২৩-০, নাসুম ৮-৩-৩৫-০)