আগের রাউন্ডে সেঞ্চুরি করা মুশফিকুর রহিম এবার খেললেন পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস, প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের জয়ে বল হাতে বড় অবদান রাখলেন শেখ মেহেদি হাসান।
Published : 18 Apr 2024, 06:07 PM
আঙুলের চোট কাটিয়ে মাঠে ফিরে দারুণ ছন্দে মুশফিকুর রহিম। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে পরপর দুই ম্যাচে তিনি খেললেন পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস। সঙ্গে বাকিদের ছোট ছোট অবদানে আড়াইশ ছাড়ানো পুঁজি পেল প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। জবাবে শেখ মেহেদি হাসান ও হাসান মাহমুদের দারুণ বোলিংয়ে কাছেও যেতে পারল না গাজী টায়ার্স ক্রিকেট একাডেমি।
আগের রাউন্ডে নিজের ফেরার ম্যাচে ১১১ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন মুশফিক। বাকি ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় সেদিন জিততে পারেনি তার দল। এবার লিগের প্রাথমিক পর্বের শেষ রাউন্ডে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৭১ রান। পরে মেহেদি ৪ ও হাসানের ৩ উইকেটের সৌজন্যে ১৪১ রানে জিতেছে প্রাইম ব্যাংক।
ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলি স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার ২৭০ রানের লক্ষ্যে ১০৬ বল বাকি থাকতেই স্রেফ ১২৮ রানে গুটিয়ে গেছে গাজী টায়ার্স।
রান তাড়ায় পাঁচ ওভারের মধ্যে দুই ওপেনারের উইকেট হারায় লিগের নবাগত ক্লাবটি। তৃতীয় উইকেটে ৬৪ রানের জুটিতে শুরুর চাপ সামাল দেন হাফিজুর রহমান ও আশরাফুল আলম। এই জুটি ভাঙেন মেহেদি।
এরপর আর কেউই প্রতিরোধ গড়তে পারেননি। কোনোমতে একশ পেরিয়ে গুটিয়ে যায় গাজী টায়ার্স। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৪ রান করেন আশরাফুল। শেষ দিকে শামিম মিয়া খেলেন ২৯ রানের ইনিংস।
৭ ওভারে ২৪ রানে ৪ উইকেট নেন মেহেদি। ৩ উইকেটের জন্য হাসানের খরচ ২৯ রান।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে সম্ভাবনাময় শুরু করে প্রাইম ব্যাংকের টপ-অর্ডার। প্রথম চার ব্যাটসম্যানের সবাই ২০ ছুঁলেও চল্লিশ পেরোতে পারেননি কেউ। ছন্দে থাকা পারভেজ হোসেন ৩৬ রান করে আউট হন।
একপর্যায়ে ২১ বলে ২৮ রান করে ফেলা জাকির শেষ পর্যন্ত আউট হন ৫১ বলে ৩৬ রান করে। ৩ চার ও ১ ছক্কায় ১৫ বলে ২০ রান করেন তামিম ইকবাল। শাহাদাত হোসেন ২০ রান করতে খেলেন ২৬ বল।
পাঁচ নম্বরে নেমে একপ্রান্ত আগলে রেখে খেলতে থাকেন মুশফিক। তাকে সঙ্গ দিতে পারেননি কেউ। মোহাম্মদ মিঠুন, মেহেদি, নাজমুল ইসলামরা দ্রুতই ফিরলে একাই লড়ে যান অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। স্রেফ ৪৬ বলে লিস্ট 'এ' ক্রিকেটে ৭৩তম ফিফটি করেন তিনি।
দলকে দুইশ পার করিয়ে নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে ফেরার আগে ৬৯ বলে ৫ চারের সঙ্গে ১টি ছক্কা মারেন মুশফিক।
পরে শেষ উইকেটে অবিচ্ছিন্ন জুটিতে স্রেফ ৩১ বলে দলের সর্বোচ্চ ৪৭ রান যোগ করেন হাসান ও আশিকুর জামান। ১টি করে চার-ছক্কায় ১৬ রান করেন হাসান। ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ২৬ বলে ৩৬ রান করেন আশিকুর।
গাজী টায়ার্সের পক্ষে এদিন স্বীকৃত ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছে ১৬ বছর বয়সী বাঁহাতি রিস্ট স্পিনার নুহায়েল সানদিদের। শুরুতে কিছুটা এলোমেলো বোলিং করলেও পরে গুছিয়ে নিয়ে ২ উইকেট নেন তিনি।
প্রাথমিক পর্ব শেষে ৭ জয়ে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে সুপার লিগ নিশ্চিত করেছে প্রাইম ব্যাংক। স্রেফ ২ জয়ে ১১ নম্বরে গাজী টায়ার্স। অবনমন এড়াতে রেলিগেশন লিগ খেলতে হবে শীর্ষ পর্যায়ে নবাগত দলটিকে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব: ৫০ ওভারে ২৬৯/৯ (তামিম ২০, পারভেজ ৩৬, শাহাদাত ২০, জাকির ৩৬, মুশফিক ৭১, মিঠুন ৫, মেহেদি ১৬, নাজমুল ৩, রাজা ২, আশিকুর ৩৬*, হাসান ১৬*; মারুফ ১০-০-৮১-০, ইকবাল ১০-১-৪২-১, ইফতেখার সাজ্জাদ ১০-০-৪৯-২, শামিম ১০-০-৪১-৩, সানদিদ ৬-০-৪১-২, জুবারুল ৪-০-১৪-১)
গাজী টায়ার্স ক্রিকেট একাডেমি: ৩২.২ ওভারে ১২৮ (আশিকুর ১০, ইফতেখার হোসেন ৭, হাফিজুর ২৯, আশরাফুল ৩৪, তাহজিবুল ১, জুবারুল ৬, শামিম ২৮, ইফতেখার সাজ্জাদ ৭, ইকবাল ১, সানদিদ ১, মারুফ ০*; হাসান ৬.২-০-২৯-৩, আশিকুর ৫-০-১৩-১, নাজমুল ৯-১-৪৬-২, রাজা ৫-১-১৫-০, মেহেদি ৭-০-২৪-৪)
ফল: প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব ১৪১ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: মুশফিকুর রহিম