“তারা আবার ক্ষমতায় আসতে পারলে বাংলার মানুষকে রক্ত স্রোতে ভাসিয়ে দেবে,” বলেন কাদের।
Published : 01 May 2024, 07:30 PM
বিএনপির হাতে বহু শ্রমিকের ‘রক্তের দাগ’ লেগে আছে দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তাদের ক্ষমতায় ফিরতে দিলে ‘রক্তের স্রোত’ বয়ে যাবে।
বুধবার বিকালে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মে দিবসের আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।
কাদের বলেন, “সেদিন শুনলাম বিএনপির এক নেতা বলেছেন, এই অতিরিক্ত গরমের জন্য দায়ী শেখ হাসিনা সরকার। এখন গরম বেশি হলে, বৃষ্টি বেশি হলে, তাপমাত্রা বেশি হলে, সব দোষ আওয়ামী লীগের। বজ্রপাতে মানুষ মরলে তখনও বলে আওয়ামী লীগের দোষ। আসলে তাদের বলার কিছু নেই, নেতাদের গলার জোর যত কমছে, মুখের বিষ তত বাড়ছে। তাদের মুখের বিষে কর্মীরা ক্লান্ত, নেতারা হতাশ।
“বিএনপির কেউ কেউ আবার বিদেশে পাড়ি জমিয়েছে। এখনও আন্দোলনের হাক ডাক, বিএনপির মুখে আন্দোলনের কথাটা শুনলে ঘোড়াও মনে হয় হাসে। এই যে পল্টনে আজ মে দিবসের প্রোগ্রাম করছে, কীভাবে পল্টন থেকে বিএনপি নেতারা স্টেজ থেকে লাফাতে লাফোতে পালিয়ে গিয়েছিল। তখন কি বলেছিল? আওয়ামী লীগ নাকি পালাবার পথ পাবে না। সেদিন দেখলাম বিএনপি পালাবার পথ পাচ্ছিল না। আন্দোলনের শক্তি তাদের নেই। আন্দোলনে জনগণ লাগে, জনগণ তাদের সাথে নেই।”
কাদের বলেন, “বিএনপির হাতে ১৫ অগাস্টের রক্তের দাগ। তাদের হাতে তেসরা নভেম্বরের রক্তের দাগ, তাদের হাতে একুশে আগস্টের রক্তের দাগ, তাদের হাতে বাংলার শ্রমিকের রক্তের দাগ, তাদের হাতে বাংলার কৃষকের রক্তের দাগ, তারা আবার ক্ষমতায় আসতে পারলে বাংলার মানুষকে রক্ত স্রোতে ভাসিয়ে দেবে।
“এরা ক্ষমতায় আবার আসতে পারলে বাংলাদেশেকে ভাসিয়ে দেবে রক্তস্রোতে, এই সাম্প্রদায়িক, এই জঙ্গিবাদী, এই সন্ত্রাসি অশুভ শক্তি, যাদের নেতা লন্ডনে বসে রিমোট কন্ট্রোলে আন্দোলন চালাচ্ছে। রিমোট কন্ট্রোল নেতাকে এই দেশের মানুষ গ্রহণ করেনি, গ্রহণ করবে না। সাহস থাকে তো তারেক রহমান বাংলাদেশের রাজপথে আসুন, মোকাবিলা হবে। আন্দোলন করতে চান বাংলাদেশের রাজপথে আসুন, লন্ডনে বসে আন্দোলন হবে না, এটা প্রমাণ হয়েছে।”
বিএনপিতে ভাঙ্গন তৈরি হয়েছে দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, “বিএনপি নেতাদের কারো সাথে কারো মিল নেই, একেক জনে একেক কথা, বিএনপির ভিতরে এখন যাকে পছন্দ হয় না, তাকে বলে সরকারের এজেন্ট; নেতায় নেতায় ঝগড়া করে আর বলে সরকারের এজেন্ট। বিএনপিকে আমরা ধ্বংস করতে চাই না। এই বিএনপি ভাঙ্গন আমরা চাই না।
“কিন্তু বিএনপি যে অবস্থায় আছে, নিজেরাই নিজেদের ভাঙ্গনের জন্য দায়ী হবে। তারা নিজেরাই নিজেদের পতন ঘটানোর জন্য দায়ী হবে। বিএনপির ধ্বংসের জন্য বাইরের শত্রুর কোনো প্রয়োজন হবে না।”
বিএনপির নেতাদের ‘লজ্জা শরমও নেই’ বলে দাবি করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, “পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেছেন, ‘এক সময় মনে করতাম বাংলাদেশটা আমাদের জন্য একটা বোঝা। আজকে বাংলাদেশে যে উন্নয়ন যে অর্জন, যেই অগ্রগতি এটা দেখে আমি লজ্জা পাচ্ছি।’ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন দেখতে পায়, বিএনপি নেতারা কালো চশমা পড়েছে তারা দেখতে পায় না। তারা দিনের আলোতে রাতের আঁধার দেখছে। এই হচ্ছে বিএনপি।
“আজকে পাকিস্তানের টকশোতে আলোচনা হয়– ‘আমাদেরকে বাংলাদেশ বানিয়ে দাও’। আর বাংলাদেশে পাকিস্তানের দালালরা সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলে, এরা উন্নয়ন দেখতে পায় না।”
যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থা ‘বেসামাল’ দাবি করে কাদের বলেন, “এরা (বিএনপি) অবিরাম দেশের বিরুদ্ধে বিদেশিদের কাছে নালিশ করে। নালিশ করবেন কার বিরুদ্ধে? কার কাছে নালিশ করেন? যাদের কাছে নালিশ করতেন তাদেরও বেসামাল অবস্থা। এখন আমেরিকাতেও আরব বসন্ত, আরব বসন্তের নাম শুনেছেন? আরব বসন্ত আমেরিকায়।
“৪০টা বিশ্ববিদ্যালয় আজকে বিক্ষোভ করছে, ফিলিস্তিনিদের পক্ষে, ক্যাম্পাসগুলো আমেরিকায় উত্তাল। সাংবাদিকদের নৈশভোজে পেছনের দরজা দিয়ে উপস্থিত হয় বাইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বিশ্ববিদ্যালয় এত উত্তাল কেন? ফিলিস্তিনিদের পক্ষে এই প্রতিবাদের কারণ কি? পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলে এটা গণতন্ত্রের অংশ।
“অবাক লাগে, এই দেশ নাকি গণতন্ত্রের প্রবক্তা, এই দেশ নাকি মানবতার দেশ। মাঝে মাঝে মনে হয় মধ্যপ্রাচ্যের নিয়ন্ত্রণ এখন আর ওয়াশিংটনের হাতে নেই। এখন মনে হয় ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী সবচেয়ে বড় নেতা।”