চলতি বিপিএলে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসে ৮টি করে চার-ছক্কায় ১১৬ রানের ইনিংস খেললেন চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের তরুণ ওপেনার।
Published : 20 Feb 2024, 02:46 PM
জেসন হোল্ডারের ফুল লেংথ ডেলিভারি কভার পয়েন্টের দিকে ঠেলেই রানের জন্য ছুটলেন তানজিদ হাসান। পপিং ক্রিজের কাছাকাছি পৌঁছেই প্রসারিত করলেন দুই হাত। এক হাতে উঁচিয়ে ধরলেন ব্যাট, আরেক হাতে হেলমেট। বিস্তৃত হাসিতেই যেন স্পষ্ট ফুটে উঠল, বড় অর্জন ধরা দিয়েছে তার ব্যাটে।
খুলনা টাইগার্সের বোলারদের ওপর ঝড় বইয়ে তানজিদ খেলেছেন ১১৬ রানের ইনিংস। ইনিংস শুরু করতে নেমে তিনি আউট হয়েছেন ১৯তম ওভারের প্রথম বলে। ততক্ষণে ৬৫ বলের ইনিংসে মেরেছেন ৮টি করে চার ও ছক্কা।
৩২ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে এটিই তার প্রথম সেঞ্চুরি। আগের সর্বোচ্চ ২০২১ সালের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে শাইনপুকুর স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে করা অপরাজিত ৭৯ রান।
বিপিএলে শতকের স্বাদ পাওয়া সপ্তম বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান তিনি। দেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে এক ইনিংসে তানজিদের চেয়ে বেশি রান করেছেন স্রেফ দুজন - তামিম ইকবাল (১৪১) ও সাব্বির রহমান (১২২)।
এই জায়গাটিতেই ঘাটতি ছিল তানজিদের। বড় ইনিংস তিনি খেলতে পারছিলেন না। এবারের আসরের তৃতীয় ম্যাচে তিনি আউট হন ৪৯ রানে। এক ম্যাচ পর আউট হন ফিফটি করেই। পরে আরেক ম্যাচে ফেরেন ৪১ রানে। এছাড়াও আরও চার ইনিংসে স্পর্শ করেন দু অঙ্ক। কিন্তু ইনিংসগুলোকে রূপ দিতে পারছিলেন না পূর্ণতায়।
অবশেষে গত শনিবার দুর্দান্ত ঢাকার বিপক্ষে ৫১ বলে ৭০ রানের ইনিংস তিনি খেলেন। বিপিএলে যা ছিল তার সর্বোচ্চ। পরের ম্যাচেই নিজেকে ছাড়িয়ে পৌঁছে গেলেন শতরানের সীমানায়।
এই ইনিংসে আপাতত টুর্নামেন্টের রান সংগ্রহেও সবার ওপরে তিনি। ১১ ইনিংসে তার সংগ্রহ ৩৮২ রান।
জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার খুলনার দুই বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ ও আরিফ আহমেদের ওপর দিয়েই তাণ্ডব চালান তানজিদ। দুজনের ২৫ বলে করেন নিজের ইনিংসের অর্ধেক রান (৫৮)। নাসুমের ৮ বলে দুটি করে চার-ছক্কায় তিনি নেন ২৪ রান। আরিফের বলে মারেন তিনটি ছক্কা, ১৭ বলে করেন ৩৪ রান।
ইনিংসের প্রথম দুই ওভারে বাউন্ডারির দেখা পাননি তানজিদ। তৃতীয় ওভারে পার্নেলের বলে মারেন দুটি চার। পরের ওভারে ওয়াইড লং অন দিয়ে নাসুমকে মারেন ম্যাচের প্রথম ছক্কা। পরের দুই বলে আসে বাউন্ডারি।
পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে হোল্ডারের বলে সোজা বোলারের মাথার ওপর দিয়ে ছক্কায় ওড়ান ২৩ বছর বয়সী ওপেনার। দশম ওভারে আরিফের বলে এক রান নিয়ে পা রাখেন পঞ্চাশে। তখন পর্যন্ত ৩২ বলে ৪ চারের সঙ্গে ৩টি ছক্কা মারেন তিনি।
সেখান থেকে একশতে যেতে তার লাগে স্রেফ ২৬ বল। আরও ৩টি চারের পাশাপাশি মারেন ৪টি ছক্কা।
পঞ্চাশ ছোঁয়ার পরের ওভারে মুকিদুল ইসলামের বলে দুটি চারের মাঝে একটি ছক্কা মারেন তানজিদ। আরিফ ও নাসুমের বলে একটি করে ছক্কা মেরে আশিতে পৌঁছে যান তিনি। সেখান থেকে সেঞ্চুরিতে যেতে বেশি বল নেননি তিনি লাগেনি তার।
৯২ রানে আরিফের বলে লং অন দিয়ে ছক্কায় তিন অঙ্কের আরও কাছে পৌঁছে যান বাঁহাতি ওপেনার। পরে তিন বলের মধ্যে পেয়ে যান শতকের জাদুকরী স্পর্শ। সেঞ্চুরি পেরিয়েও একটি করে চার-ছক্কা মারেন তিনি।
তানজিদের সেঞ্চুরির ম্যাচে চট্টগ্রামের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৬ রান করেন টম ব্রুস। দুজনের তৃতীয় উইকেট জুটিতে আসে ৬১ বলে ১১০ রান।
৪ উইকেটে ১৯২ রানে থামে প্রথম পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচ খেলতে নামা চট্টগ্রাম।