বিরতির এই সময়টা কীভাবে কাজে লাগাতে চান, জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধান কোচ।
Published : 22 Aug 2022, 05:41 PM
শ্রীধরন শ্রীরামের নিয়োগে রাসেল ডমিঙ্গো বিস্মিত হয়েছেন কী না, জানা গেল না। তবে টি-টোয়েন্টি কোচিং থেকে নিজের ‘আপাত ছুটি’ বাংলাদেশের প্রধান কোচের কাছে মনে হচ্ছে 'দারুণ আইডিয়া।' অপ্রত্যাশিতভাবে পাওয়া সময়টা ওয়ানডে ও টেস্ট দলের উন্নতির জন্য ব্যয় করতে চান তিনি।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সোমবার গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান জানান, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত এই সংস্করণের দলের সঙ্গে থাকবেন না ডমিঙ্গো। সে সময় তার পাশেই ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকান কোচ।
ডমিঙ্গোর কোচিংয়ে দেশের মাটিতে অস্ট্রেলিয়া, নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। তবে স্পিন মঞ্চে পাওয়া সেই জয় ততটা গুরুত্ব পাচ্ছে না। বরং টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভরাডুবি এবং টানা ব্যর্থতাই থাকছে আলোচনায়।
ফল হওয়া সবশেষ ১৫ ম্যাচে বাংলাদেশের জয় মাত্র দুটি। ব্যর্থতার চক্রে থাকা দলটি সবশেষ সিরিজে হেরেছে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। এই সংস্করণে তাই নতুন করে শুরু করতে চায় বাংলাদেশ। এর শুরুটা হচ্ছে এশিয়া কাপ দিয়ে। যেখানে গেম প্ল্যানের মতো ব্যাপারগুলো দেখবেন সম্প্রতি দায়িত্ব পাওয়া টেকনিক্যাল কনসালটেন্ট শ্রীরাম।
এসব নিয়ে কোনো অসন্তোষ নেই ডমিঙ্গোর কথায়। বরং ইতিবাচক সিদ্ধান্ত হিসেবেই দেখার কথা বললেন তিনি।
“আমার মনে হয়, এটা দারুণ একটা আইডিয়া। এটা আমাকে টেস্ট ম্যাচ ও ৫০ ওভারের ক্রিকেটে আরও বেশি মনোযোগ দেওয়ার সুযোগ করে দেবে। টি-টোয়েন্টিতে আমাদের দারুণ কিছু ফল আছে, বাজে ফলও আছে কিছু। আমার মনে হয় না, এই সংস্করণে নতুন পন্থা খারাপ কোনো আইডিয়া। এই ব্যাপারে আমার মন খুবই খোলা। এটা আমার দল নিয়ে নয়, আমাকে নিয়ে নয়। আমি এখানে দলকে আরও ভালো অবস্থায় নেওয়ার জন্য।”
“এটা আমাকে আসন্ন ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ নিয়ে আরও পরিষ্কারভাবে ভাবার সুযোগ করে দেবে। আমরা জানি, টেস্ট দলকে নিয়ে অনেক কাজ করতে হবে। এটা আমাকে পরিবারের সঙ্গে কিছুটা সময় কাটানোরও সুযোগ করে দেবে। গত বছর আমি কেবল পাঁচ সপ্তাহ বাড়ি থাকতে পেরেছিলাম। পরিবার আমার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। এভাবে টিকে থাকা খুব কঠিন, টুর্নামেন্টে সতেজ হয়ে আসা, ভালো মনোভাব নিয়ে আসা খুব কঠিন।”
ব্যস্ত সময় কাটাবেন ক্রিকেটাররা। এশিয়া কাপের পর বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চে খেলা। এই সময়ে কী বিরতি সত্যিই প্রয়োজন ছিল ডমিঙ্গোর?
“অবশ্যই। দক্ষিণ আফ্রিকার অভিজ্ঞতা থেকে আমি শিখেছি, মানসিক ফিটনেস খেলোয়াড় ও স্টাফদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। এটা এমন কিছু যা অতীতে এখানে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। এই ছেলেরা প্রচুর ক্রিকেট খেলে, যখন আমি দক্ষিণ আফ্রিকার কোচ ছিলাম তার চেয়ে বেশি। মানসিক ক্লান্তিতে পারফরম্যান্সে অবনতি হতে পারে।”
“এর মধ্যে আমাদের অনেক ক্রিকেট ম্যাচ ও সফর ছিল। আগামী বছর আরও অনেক খেলা আছে। আর স্রেফ খেলাই না, অনুশীলন, প্রস্তুতি, ভ্রমণ, সবই আছে এর মধ্যে।”
আপাতত কেবল টি-টোয়েন্টিই খেলবে বাংলাদেশ। বছরের শেষ দিকে দেশের মাটিতে ভারতের বিপক্ষে খেলবে টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজ। এই সময়টা কীভাবে কাটাতে চান, জানালেন বাংলাদেশের প্রধান কোচ।
“আবার টেস্ট ও ওয়ানডে খেলার আগে আমাদের হাতে বেশ সময় আছে। আমার মনে হয়, এখানে কিছুটা অদল-বদল করার সুযোগ আছে। জেমিকে ডেভেলপমেন্ট নিয়ে কাজ করার কথা বলা হচ্ছে। সামনের দিকে এগিয়ে যেতে এটা আমাকে কোচিং স্টাফ নিয়ে ভাবার সুযোগ করে দিচ্ছে। ব্যাটিং কোচ হিসেব কাকে চাই, সেটা আমি জানি। যখন তাকে পাওয়া যাবে না, তখন জেমি আসতে পারে। আগামী কয়েক মাসে আমাকে অনেক কিছু নিয়েই ভাবতে হবে। আমি সত্যিই বিশ্বাস করি, ৫০ ওভারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ভালো সম্ভাবনা আছে। দলটা ভালো খেলছে, আমাদের ভালো খেলোয়াড় আছে।”
“আমি ‘এ’ দলের সঙ্গে দুবাই যাব। অনেক টেস্ট খেলোয়াড় সেখানে থাকবে। তামিম ইকবাল, মুমিনুল হক, নাজমুল হোসেন শান্তরা অনেক দিন ধরে খেলছে না। এটা তাদের জন্য দারুণ একটা সুযোগ হবে। আগামী নভেম্বরে আমি এনসিএল দেখব। এগুলো আমার পরিকল্পনায় আছে।”