দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেও পাকিস্তানকে জেতাতে পারলেন না ইফতিখার আহমেদ।
Published : 08 May 2023, 12:37 AM
পাকিস্তানের টপ অর্ডারের বিরল ব্যর্থতার দিনে মিডল অর্ডারের ব্যাটসম্যানদের সামনে সুযোগ আসে নায়ক হওয়ার। নিজের প্রথম ফিফটিতে সেই আশাও জাগান ইফতিখার আহমেদ। কিন্তু তার ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসও যথেষ্ট হলো না। মিলিত চেষ্টায় দারুণ এক জয়ে হোয়াইটওয়াশ এড়াল নিউ জিল্যান্ড।
করাচিতে পঞ্চম ও শেষ ওয়ানডেতে ৪৭ রানে জিতেছে সফরকারীরা। পাকিস্তান সিরিজ জিতেছে ৪-১ ব্যবধানে।
তিনশ রানের লক্ষ্য দিয়ে বাবর আজমের দলকে ২৫২ রানে থামিয়েছে নিউ জিল্যান্ড। এই হারে এক ম্যাচ পরেই আইসিসি ওয়ানডে র্যাঙ্কিয়ের চূড়া থেকে নেমে গেছে পাকিস্তান।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজের প্রথম সেঞ্চুরির আশা জাগানো ইফতিখার অপরাজিত থাকেন ৯৪ রানে। তার ৭২ বলের ইনিংস গড়া দুই ছক্কা ও আট চারে। সঙ্গীর অভাবে তিন অঙ্ক ছোঁয়ার আগে একরাশ হতাশা নিয়ে ফিরতে হয় এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানকে।
করাচি ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে রোববার টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালোই করে নিউ জিল্যান্ড। তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি ওপেনার টম ব্লান্ডেল ও তিনে নামা হেনরি নিকোলস।
তৃতীয় উইকেটে ৭৪ রানের জুটিতে দলকে টানেন উইল ইয়াং ও টম ল্যাথাম। সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগানো ওপেনারকে ফিরিয়ে মাথাব্যথার কারণ হয়ে ওঠা জুটি ভাঙেন শাদাব খান।
৯১ বলে দুই ছক্কা ও আট চারে ৮৭ রান করেন ইয়াং।
শুরু থেকে প্রায় এক ছন্দে খেলে যাওয়া ল্যাথামকে থামান উসামা মীর। এই সিরিজে নিউ জিল্যান্ডকে নেতৃত্ব দেওয়া কিপার-ব্যাটসম্যান পাঁচ চারে ৫৮ বলে করেন ৫৯ রান।
দ্রুত রান তোলা মার্ক চাপম্যান ছিলেন ফিফটির পথে। কট বিহাইন্ডের রিভিউ নিয়ে তাকে থামায় পাকিস্তান। ৩৩ বলে পাঁচ চার ও দুই ছক্কায় ৪৩ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন চাপম্যান।
কার্যকর দুটি ক্যামিও ইনিংস খেলেন কোল ম্যাকনকি ও রাচিন রবীন্দ্র। তবে একদম শেষে গিয়ে ভাটা পড়ে রানের গতিতে। ১৬ রানে শেষ চার উইকেট হারিয়ে ৩ বল বাকি থাকতেই গুটিয়ে যায় নিউ জিল্যান্ডের ইনিংস।
রান তাড়ায় পাকিস্তানের শুরুটা ছিল ভীষণ সাবধানী। অনেকটা সময় নেওয়া শান মাসুদ থিতুই হতে পারেননি। ম্যাট হেনরির ডেলিভারি স্টাম্পে টেনে আনা এই ওপেনার ২০ বলে করেন ৭ রান।
নিজের শততম ওয়ানডেতে ব্যর্থ বাবর। পাকিস্তান অধিনায়ক ৫ বল খেলে করেন ১ রান। হেনরি শিপলির বলে স্টাইলিশ এই ব্যাটসম্যান ধরা পড়েন ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে।
দলের বিপদে হাল ধরতে পারেননি মোহাম্মদ রিজওয়ান। অনেকটা সময় ক্রিজে থাকা ফখর জামান স্বভাববিরুদ্ধ মন্থর ব্যাটিংয়ে ৬৪ বলে থামেন ৩৩ রান করে।
১৯তম ওভারে ৬৬ রানে প্রথম চার ব্যাটসম্যানকে হারানো পাকিস্তানের সামনে তখন বড় হারের শঙ্কা। আঘা সালমান ও ইফতিখারের ব্যাটে ধাক্কা সামাল দেয় স্বাগতিকরা।
সালমানকে ফিরিয়ে ৯৭ রানের জুটি ভাঙেন শিপলি। স্পিনিং অলরাউন্ডার ৫৭ বলে করেন ৫৭ রান। এরপর প্রায় একাই খেলেন ইফতিখার।
তাকে খুব একটা সঙ্গ দিতে পারেননি শাদাব ও উসামা। শূন্য রানে ফেরেন শাহিন শাহ আফ্রিদি।
৪৭তম ওভারের প্রথম বলে দুই রান নেওয়ার চেষ্টায় হারিস রউফ রান আউট হলে ২৩ বল বাকি থাকতেই গুটিয়ে যায় পাকিস্তানের ইনিংস।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নিউ জিল্যান্ড: ৪৯.৩ ওভারে ২৯৯ (ইয়াং ৮৭, ব্লান্ডেল ১৫, নিকোলস ২৩, ল্যাথাম ৫৯, চাপম্যান ৪৩, ম্যাকনকি ২৬, রবীন্দ্র ২৮, মিল্ন ৪, শিপলি ৩, হেনরি ৪ *, সোধি ২; আফ্রিদি ১০-০-৪৬-৩, রউফ ৮.৩-০-৪৫-১, ওয়াসিম ৮.৩-১-২৪-১, উসামা ৮-০-৫৩-২, সালমান ৮-০-৬০-০, শাদাব ৯-০-৬৭-২)
পাকিস্তান: ৪৬.১ ওভারে ২৫২ (ফখর ৩৩, মাসুদ ৭, বাবর ১, রিজওয়ান ৯, সালমান ৫৭, ইফতিখার ৯৪*, শাদাব ১৪, উসামা ২০, আফ্রিদ ০, ওয়াসিম ৬, রউফ ১; মিল্ন ৮-০-৩৪-১, হেনরি ৮.১-১-৪৭-১, শিপলি ৯-১-৩৪-৩, সোধি ১০-০-৬০-১, রবীন্দ্র ১০-০-৬৫-৩, ম্যাকনকি ১-০-৭-০)
ফল: নিউ জিল্যান্ড ৪৭ রানে জয়ী
সিরিজ: ৫ ম্যাচের সিরিজে পাকিস্তান ৪-১ ব্যবধানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: হেনরি শিপলি
ম্যান অব দা সিরিজ: ফখর জামান