শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৫১১ রানের প্রায় অসম্ভব রান তাড়ায় চট্টগ্রাম টেস্টের চতুর্থ দিন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ২৬৮।
Published : 02 Apr 2024, 09:59 AM
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ৫৩১
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১৭৮
শ্রীলঙ্কা ২য় ইনিংস: ৪০ ওভারে ১৫৭/৭ ইনিংস ঘোষণা
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৫১১) ৬৭ ওভারে ২৬৮/৭
প্রথম ইনিংসের ব্যাটিং ব্যর্থতায় চট্টগ্রাম টেস্টে অনেকটাই পিছিয়ে বাংলাদেশ। তৃতীয় দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৫৫ রানে এগিয়ে শ্রীলঙ্কা।
তবে দ্বিতীয়বার ব্যাটিংয়ে নেমে খুব একটা স্বস্তিতে নেই সফরকারীরা। ১০২ রান করতেই ড্রেসিং রুমে ফিরেছেন ৬ ব্যাটসম্যান। তাদের যত কমে সম্ভব অল আউট করার লক্ষ্যে মঙ্গলবার খেলতে নামবে বাংলাদেশ
শেষ স্বীকৃত ব্যাটসম্যান অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস অপরাজিত ৫০ বলে ৩৯ রানে। তার সঙ্গী ১৭ বলে ৩ রান করা প্রাবাথ।
বাংলাদেশের পক্ষে ৪ উইকেট নিয়েছেন হাসান মাহমুদ। অভিষেক টেস্টে দেশের দ্বিতীয় পেসার হিসেবে ৫ উইকেট নেওয়ার দুয়ারে তরুণ পেসার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (তৃতীয় দিন শেষে):
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ৫৩১
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১৭৮
শ্রীলঙ্কা ২য় ইনিংস: ২৫ ওভারে ১০২/৬ (মাদুশকা ৩৪, কারুনারাত্নে ৪, কুসাল ২, ম্যাথিউস ৩৯*, চান্দিমাল ৯, ধানাজয়া ১, কামিন্দু ৯, জায়াসুরিয়া ৩*; খালেদ ৯-২-২৯-২, হাসান ১১-৩-৫১-৪, সাকিব ৪-০-২০-০, তাইজুল ১-০-১-০)
আগের তিন ইনিংসে ব্যর্থতা ঝেড়ে শেষটিতে রানের দেখা পেলেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। দলের অন্য ব্যাটসম্যানদের হতাশার ভিড়ে দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে পঞ্চাশ করলেন শ্রীলঙ্কার অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান।
অবশ্য এবারও দ্রুত ফিরতে পারতেন তিনি, স্লিপে শাহাদাত হোসেন ক্যাচ নিতে পারলে থামতেন ৭ রানে।
৪ চারে ৬৭ বলে বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় ফিফটি করেছেন ম্যাথিউস। সব মিলিয়ে ১০৯ ম্যাচের ক্যারিয়ারে তার ৪১তম ফিফটি এটি।
বেঁচে যাওয়ার পর থেকে গোছানো ব্যাটিংয়ে রান করছেন তিনি। আরেক প্রান্তে প্রাবাথ জায়াসুরিয়াও ব্যাটিং করছেন আস্থার সঙ্গে। এর সঙ্গে উইকেটের আচরণও মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে বাংলাদেশের জন্য।
সকালের শুরুতেই দুই পেসার সৈয়দ খালেদ আহমেদ ও হাসান মাহমুদের বলে দেখা গেছে অসম বাউন্স। পরে দুই স্পিনার সাকিব আল হাসান ও তাইজুল ইসলাম আক্রমণে আসার পর পেয়েছেন টার্ন, সঙ্গে বাড়তি বাউন্সও করেছে কিছু ডেলিভারি।
এরই মধ্যে লিড প্রায় পাঁচশ ছুঁইছুঁই। চতুর্থ ইনিংসে তাই কঠিনতম চ্যালেঞ্জের সামনেই পড়তে হবে স্বাগতিকদের।
৩৩ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৬ উইকেটে ১২৫ রান। ম্যাথিউস ৭০ বলে ৫৪ ও জায়াসুরিয়া ৪৪ বলে ১১ রানে খেলছেন। তাদের লিড এখন ৪৭৮ রানের।
পঞ্চাশ ছুঁয়ে বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। সাকিব আল হাসানের লেগ স্টাম্পে পিচ করা ডেলিভারি বেশ বড় টার্নে ম্যাথিউসের রক্ষণ ফাঁকি দিয়ে আঘাত করে অফ স্টাম্পে।
৭৪ বলে ৫৬ রান করে ফিরলেন ম্যাথিউস। ক্রিজে নতুন ব্যাটসম্যান ভিশ্ব ফার্নান্দো। ৫৫ বলে ১৬ রানে খেলছেন প্রাবাথ জায়াসুরিয়া।
ম্যাথিউসের আউটের ডেলিভারিটি আনন্দের পাশাপাশি বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের জন্য নিশ্চিতভাবেই কঠিন বার্তা নিয়ে এসেছে। এই উইকেটেই অন্য প্রান্তে থাকা জায়াসুরিয়ার বাঁহাতি স্পিনও যে সামলাতে হবে তাদের।
৩৬ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৭ উইকেটে ১৩২ রান। তাদের লিড এখন ৪৮৫ রানের।
দ্রুত উইকেটের খোঁজে রিভিউ হারাল বাংলাদেশ। তাইজুল ইসলামের ভেতরে ঢোকা ডেলিভারি ভিশ্ব ফার্নান্দোর ব্যাট ফাঁকি দিয়ে আঘাত করে পেছনের প্যাডে। আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার। শুরুতে বাংলাদেশের ফিল্ডারদেরও তেমন উৎসাহী মনে হয়নি।
একদম শেষ মুহূর্তে রিভিউয়ের সংকেত দেন নাজমুল হোসেন শান্ত। রিপ্লেতে দেখা যায়, লেগ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে চলে যেত বল। তাই বিপদ ঘটেনি শূন্য রানে থাকা ভিশ্বর।
৩৮ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৭ উইকেটে ১৪২ রান। প্রাবাথ জায়াসুরিয়া ৬৩ বলে ২২ রানে খেলছেন। তাদের লিড এখন ৪৯৫ রানের।
চতুর্থ দিনের প্রথম ঘণ্টায় স্রেফ ১ উইকেট হারিয়ে ৪৮ রান করেছে শ্রীলঙ্কা। এরই মধ্যে ৫০০ ছাড়িয়েছে তাদের লিড।
৩৯ ওভারে সফরকারীদের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ১৫০ রান। ৫০৩ রানে এগিয়ে তারা। প্রাবাথ জায়াসুরিয়া ৬৬ বলে ২৭ ও ভিশ্ব ফার্নান্দো ১১ বলে ৬ রানে খেলছেন।
দিনের শুরুর ঘণ্টায় অসম বাউন্সের সঙ্গে টার্নের দেখাও মিলেছে। তাই বিশাল রানের বোঝার সঙ্গে উইকেটের চ্যালেঞ্জও যোগ হবে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসে।
মঙ্গলবার ১৫ ওভার ব্যাটিং করে ইনিংস ছেড়ে দিল শ্রীলঙ্কা। দ্বিতীয় ইনিংসে ৭ উইকেটে ১৫৭ রান করেছে তারা। প্রথম ইনিংসের ৩৫৩ রানের লিডসহ বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য দাঁড়িয়েছে ৫১১ রানের।
টেস্ট ইতিহাসে রান তাড়ার রেকর্ড ৪১৮ রানের। তাই ম্যাচ জিতে সিরিজে সমতা ফেরাতে ইতিহাসই গড়তে হবে বাংলাদেশকে। চতুর্থ ইনিংসে তাদের সর্বোচ্চ ৪১৩ রান, ২০০৮ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই।
চতুর্থ দিন ১ উইকেট হারিয়ে ৫৫ রান করেছে লঙ্কানরা। পঞ্চাশ ছুঁয়ে আউট হয়েছেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। প্রথম ইনিংসের মতো এবারও ২৮ রান করেছেন প্রাবাথ জায়াসুরিয়া।
আগের দিনের ৪ উইকেটের সঙ্গে আর কিছু যোগ করতে পারেননি হাসান মাহমুদ। দুই ইনিংস মিলে ৬ উইকেটে সন্তুষ্ট থাকতে হলো অভিষিক্ত পেসারকে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ৫৩১
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১৭৮
শ্রীলঙ্কা ২য় ইনিংস: (আগের দিন ১০২/৬) ৪০ ওভারে ১৫৭/৭ ইনিংস ঘোষণা (ম্যাথিউস ৫৬, জায়াসুরিয়া ২৮*, ভিশ্ব ৮*; খালেদ ১১-২-৩৪-২, হাসান ১৫-২-৬৫-৪, সাকিব ১০-০-৩৯-১, তাইজুল ৪-০-১৩-০)
চট্টগ্রাম টেস্টের মাঝপথেই বাংলাদেশ ছেড়ে যাচ্ছেন দিনেশ চান্দিমাল। শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বলা হয়েছে 'ফ্যামিলি মেডিকেল ইমার্জেন্সি'র কারণে দ্রুততম সময়ের মধ্যে দেশে ফিরে যাচ্ছেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান।
তাকে ছাড়াই দ্বিতীয় ইনিংসে ফিল্ডিংয়ে নেমেছে শ্রীলঙ্কা।
ষষ্ঠ ওভারে আক্রমণে এসেই বাংলাদেশের বিপদের শঙ্কা জাগালেন প্রাবাথ জায়াসুরিয়া। তবে কুসাল মেন্ডিসের ব্যর্থতায় বেঁচে গেলেন জাকির হাসান।
অফ স্টাম্পের বাইরে পিচ করে টার্নের সঙ্গে কিছুটা নিচু হওয়া ডেলিভারি ঠিকঠাক খেলতে পারেননি বাঁহাতি ওপেনার। ব্যাটের বাইরের কানা ছুঁয়ে যাওয়া বল গ্লাভসে জমাতে পারেননি লঙ্কান উইকেটরক্ষক। ১০ রানে জীবন পান জাকির।
৮ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ কোনো উইকেট না হারিয়ে ৩১ রান। জাকির ২৪ বলে ১১ ও মাহমুদুল হাসান জয় ২৪ বলে ১৯ রানে খেলছেন।
প্রথম সেশনের ৩৭ মিনিটে কোনো বিপদ ঘটেনি বাংলাদেশের। ৮ ওভারে ৩১ রান করে অবিচ্ছিন্ন থেকেই মধ্যাহ্ন বিরতিতে গেলেন মাহমুদুল হাসান জয় ও জাকির হাসান। জাকির ২৪ বলে ১১ ও মাহমুদুল হাসান জয় ২৪ বলে ১৯ রানে অপরাজিত।
ষষ্ঠ ওভারে অবশ্য ভাঙতে পারত এই জুটি। প্রাবাথ জায়াসুরিয়ার বলে জাকিরের ক্যাচ ছেড়ে দেন উইকেটরক্ষক কুসাল মেন্ডিস। এর বাইরে বেশ কিছু ডেলিভারিতে অস্বস্তিতে ভোগেন দুই ওপেনারই। তবে শেষ পর্যন্ত উইকেট বাঁচিয়ে রাখতে পেরেছেন তারা।
দিনের শুরুতে ১৫ ওভার ব্যাটিং করে ইনিংস ঘোষণা করে শ্রীলঙ্কা। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের উইকেট হারিয়ে ৫৫ রান যোগ করে তারা। বাংলাদেশকে দেয় ৫১১ রানের প্রায় অসম্ভব এক লক্ষ্য।
জিততে বাংলাদেশের প্রয়োজন আরও ৪৮০ রান। ম্যাচ বাঁচাতে কাটিয়ে দিতে হবে আরও ৫ সেশন।
মধ্যাহ্ন বিরতির পর বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না মাহমুদুল হাসান জয়। দ্বিতীয় ওভারেই অহেতুক শট খেলার চেষ্টায় বোল্ড হয়ে ফিরলেন তরুণ ওপেনার।
প্রাবাথ জায়াসুরিয়ার জোরের ওপর করা আর্ম ডেলিভারি মিডল স্টাম্পের ওপর থেকে কাট খেলার চেষ্টা করেন জয়। কিন্তু সময়মতো ব্যাট নামাতে পারেননি। তাতেই বিপত্তি। এলোমেলো হয় স্টাম্প।
৩ চারে ৩২ বলে ২৪ রান করে ফিরেছেন জয়। সিরিজে এটিই তার সর্বোচ্চ। ৪ ইনিংসে তার সংগ্রহ সাকুল্যে ৫৭ রান।
১০ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১ উইকেটে ৩৮ রান। তিন নম্বরে নেমেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ২৭ বলে ১২ রানে খেলছেন জাকির হাসান।
বিরতির পর বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না জাকির হাসানও। পঞ্চাশ পেরোতেই দুই ওপেনারের উইকেট হারাল বাংলাদেশ।
ভিশ্ব ফার্নান্দোর অফ স্টাম্পের বাইরে করা ব্যাক অব লেংথ ডেলিভারি খোঁচা মেরে প্রথম স্লিপে ক্যাচ দিয়েছেন জাকির। ২ চারে ৩৯ বলে করেছেন ১৯ রান।
চার নম্বরে নেমেছেন সিরিজে বাংলাদেশের একমাত্র ছন্দে থাকা ব্যাটসম্যান মুমিনুল। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে চাপ সামাল দেওয়ার অভিযান শুরু করবেন তিনি।
১৫ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২ উইকেটে ৫১ রান।
দুই ওপেনারের বিদায়ের পর চাপ বাড়তে দেননি নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুমিনুল হক। উল্টো ইতিবাচক ব্যাটিংয়ে দ্রুত রান তুলছেন দুজনই। এরই মধ্যে ৪২ বলে ৩৪ রানের জুটি গড়েছেন তারা।
দ্বিতীয় সেশনের পানি পানের বিরতি পর্যন্ত ২২ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২ উইকেটে ৮৫ রান। মুমিনুল ২০ বলে ২১ ও শান্ত ৪১ বলে ১৬ রানে খেলছেন।
চার নম্বরে নেমে দ্বিতীয় বলে বাউন্ডারি মারেন মুমিনুল। পঞ্চম বলে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে মারেন ছক্কা। পরের ওভারে বোলারের মাথার ওপর দিয়ে চার মারেন শান্তও।
আরও একবার ব্যর্থ হলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। মুমিনুল হকের সঙ্গে জুটি গড়ে তোলার আভাস দিয়েও অল্পেই ফিরলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
লাহিরু কুমারার সোজা যাওয়া ডেলিভারি ভুল লাইনে খেলে বোল্ড হলেন শান্ত। ৫৫ বলে তিনি করেন ২০ রান। সিরিজে এটিই তার সর্বোচ্চ। ৪ ইনিংসে তার রান সাকুল্যে ৩২।
একশর আগে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে গেছে বাংলাদেশ।
পাঁচ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম বলেই কুমারার বাউন্সারে আঘাত পান সাকিব আল হাসান। নিয়ম অনুযায়ী কনকাশন পরীক্ষার পর আবার ব্যাটিং শুরু করেন কয়েক মাস ধরে চোখের সমস্যায় ভুগতে থাকা অভিজ্ঞ ক্রিকেটার।
২৭ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৯৫ রান। ৩৪ বলে ২৬ রানে অপরাজিত মুমিনুল।
চলতি সিরিজে এখন পর্যন্ত ৩০ উইকেট নিয়েছেন শ্রীলঙ্কার পেসাররা। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে লঙ্কান পেসারদের এটিই সর্বোচ্চ উইকেটের রেকর্ড।
২০১৪ সালে ইংল্যান্ড সফরের দুই ম্যাচে ২৯ উইকেট নিয়েছিলেন শামিন্দা ইরাঙ্গা, নুয়ান প্রদিপ, ধামিকা প্রাসাদরা।
প্রথম ম্যাচের মতো দ্বিতীয়টিতেও দ্বিতীয় ইনিংসে ফিফটি করলেন মুমিনুল হক। ওয়ানডে ঘরানার ব্যাটিংয়ে স্রেফ ৫৫ বলেই পঞ্চাশ ছুঁয়ে ফেললেন তিনি। টেস্ট ক্যারিয়ারে মুমিনুলের ১৮তম ফিফটি এটি।
ফিফটি করার পর অবশ্য টিকতে পারেননি বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। প্রাবাথ জায়াসুরিয়ার লেগ স্টাম্পে করা ডেলিভারি সুইপ করার চেষ্টায় ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ দিলেন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান।
তার বিদায়ে ভাঙল সাকিব আল হাসানের সঙ্গে গড়া ৪১ বলে ৩৮ রানের জুটি। ছয় নম্বরে নেমেছেন লিটন কুমার দাস।
মধ্যাহ্ন বিরতির পর তুলনামূলক দ্রুত রান করলেও উইকেট টিকিয়ে রাখতে পারেনি বাংলাদেশ। ২৬ ওভারে ৯৫ রান করতে ড্রেসিং রুমে ফিরেছেন ৪ ব্যাটসম্যান।
চা বিরতি পর্যন্ত ৩৪ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ১৩২ রান। প্রায় অসম্ভব এক জয় থেকে ৩৭৯ রান দূরে স্বাগতিকরা।
দ্বিতীয় সেশনের শুরুতেই ড্রেসিং রুমে ফেরেন মাহমুদুল হাসান জয়। পরে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি জাকির হাসান। আরও একবার হতাশ করে নাজমুল হোসেন শান্তও ফেরেন অল্পেই।
চার নম্বরে নামা মুমিনুল হক ওয়ানডে ঘরানার ব্যাটিংয়ে এগোচ্ছিলেন বেশ ভালোভাবেই। কিন্তু বিরতির ঠিক আগের ওভারে অহেতুক শট খেলে উইকেট ছুড়ে আসেন পঞ্চাশ রানের ইনিংস খেলা অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান।
সাকিব আল হাসান ১৭ বলে ১৪ ও লিটন কুমার দাস ৫ বলে ০ রানে শেষ সেশনের খেলা শুরু করবেন।
আসিথা ফার্নান্দো, ভিশ্ব ফার্নান্দোদের শর্ট বলে অস্বস্তিতে পড়ছেন সাকিব আল হাসান। আরও একবার বাউন্সারে মাথায় আঘাত পেয়েছেন অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার। তবে গুরুতর কিছু হয়নি।
ক্রিজে গিয়ে প্রথম বলেই লাহিরু কুমারার বাউন্সার সাকিবের মাথায় লাগে। প্রায় ঘণ্টাখানেক ব্যাটিংয়ের পর ভিশ্ব আরেকটি বাউন্সার লেগেছে তার হেলমেটে। তবে এবার মূলত ব্যাটের ওপরের কানা ছুঁয়ে হেলমেটে আঘাত করেছে বল।
নিয়ম অনুযায়ী, ফিজিও এসে কনকাশন পরীক্ষা করেছেন সাকিবের। একইসঙ্গে পরীক্ষা করা হয়েছে তার হেলমেটও। সব স্বাভাবিক থাকায় আবার খেলা শুরু করেছেন সাকিব।
এরই মধ্যে ৩০ পেরিয়েছেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। ইনিংসের সপ্তম রান নেওয়ার সময় তিনি টেস্ট ক্রিকেটে চট্টগ্রামের মাঠে পূর্ণ করেছেন ১ হাজার রান। এই মাঠে এক হাজার রান করা অন্য তিন জন মুশফিকুর রহিম, মুমিনুল হক ও তামিম ইকবাল।
৪৪ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ১৭৭ রান। সাকিব ৪৬ বলে ৩৪ ও লিটন কুমার দাস ৩৬ বলে ২৫ রানে খেলছেন। দুজনের জুটির সংগ্রহ ৪৫ রান।
চাপ সামলে দিনের শেষ সেশনে প্রতিরোধ গড়েছেন সাকিব আল হাসান ও লিটন কুমার দাস। ইতিবাচক ব্যাটিংয়ের এরই মধ্যে পঞ্চম উইকেট জুটিতে দুজন মিলে যোগ করেছেন পঞ্চাশ রান।
চলতি ম্যাচে এটিই বাংলাদেশের প্রথম পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটি। আর সিরিজের দুই ম্যাচের ৪ ইনিংস মিলিয়ে স্রেফ দ্বিতীয়। প্রথম টেস্টে সপ্তম উইকেটে ৬৬ রান যোগ করেছিলেন মুমিনুল হক ও মেহেদী হাসান মিরাজ।
দ্বিতীয় সেশনের শেষ দিকে জোট বাঁধেন সাকিব ও লিটন। পরে শেষ সেশনে শুরু হয় তাদের মূল লড়াই। শ্রীলঙ্কার বোলারদের চ্যালেঞ্জের সামনে এখন পর্যন্ত দারুণভাবে এগিয়ে চলেছেন দুই ব্যাটসম্যান।
৪৭ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ১৮৪ রান। সাকিব ৪৯ বলে ৩৫ ও লিটন ৫১ বলে ৩১ রানে খেলছেন।
জমে ওঠা পঞ্চম উইকেট জুটি ভাঙলেন কামিন্দু মেন্ডিস। তবে এর বড় কৃতিত্ব পাবেন নিশান মাদুশকা। দারুণ রিফ্লেক্সে গালিতে অসাধারণ ক্যাচ নিয়ে সাকিব আল হাসানের বিদায়ঘণ্টা বাজালেন তিনি।
কামিন্দুর অফ স্টাম্পের বাইরে পিচ করে বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারি দূর থেকে খোঁচা মারেন সাকিব। গতি নিয়ে গালির দিকে যাওয়া বল বাতাসে ছোঁ মেরে নিজের আয়ত্বে নেন মাদুশকা। বিদায় নিশ্চিত হয় সাকিবের।
৩ চারে ৫৩ বলে ৩৬ রান করে ফিরলেন সাকিব। তার চোখে-মুখে ছিল স্পষ্ট হতাশার অভিব্যক্তি। সাকিবের বিদায়ে ভাঙল ৬১ রানের জুটি।
ক্রিজে নতুন ব্যাটসম্যান শাহাদাত হোসেন। ৬৩ বলে ৩৫ রানে খেলছেন লিটন কুমার দাস।
৫০ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ১৯৩ রান।
সাকিব আল হাসান ফেরার পর বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না লিটন কুমার দাস। দুইশ রানের আগে ৬ উইকেট হারিয়ে বড় পরাজয়ের শঙ্কায় বাংলাদেশ।
লাহিরু কুমারার শর্ট ডেলিভারি পুল করার চেষ্টায় লিটনের ব্যাটের নিচের কানায় লাগে। সামনে এগিয়ে দারুণ ক্যাচ নেন উইকেটরক্ষক কুসাল মেন্ডিস।
৭২ বলে ৩৮ রান করে ফিরলেন লিটন। ক্রিজে দুই নতুন ব্যাটসম্যান শাহাদাত হোসেন ও মেহেদী হাসান মিরাজ।
৫৩ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ১৯৮ রান।
প্রাবাথ জায়াসুরিয়ার শর্ট ডেলিভারি কাট করলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। দ্বিতীয় স্লিপের হাত ঘেঁষে যাওয়া বলে ২ রান নিলেন দুই ব্যাটসম্যান। বাংলাদেশ পূর্ণ করল ২০০ রান।
টেস্ট ক্রিকেটে পাঁচ ইনিংস পর দুইশ রান করল বাংলাদেশ। গত ডিসেম্বরে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ইনিংস ও চলতি সিরিজে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন ইনিংসে টানা দুইশ রানের নিচে গুটিয়ে গিয়েছিল তারা।
৫৪ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ২০০ রান। প্রায় অসম্ভব জয় থেকে ৩১১ রান দূরে তারা। শ্রীলঙ্কার প্রয়োজন আর ৪ উইকেট। দিনের খেলা এখনও বাকি এক ঘণ্টা।
মেহেদী হাসান মিরাজ ও শাহাদাত হোসেনের জুটি ভাঙতে ৪ ওভারে ভিন্ন চার বোলার ব্যবহার করলেন ধানাঞ্জয়া ডি সিলভা। চতুর্থ বোলার কামিন্দু মেন্ডিস এনে দিলেন সাফল্য।
সাকিব আল হাসানকে ফিরিয়ে পঞ্চম উইকেট জুটি ভাঙার পর শাহাদাতকে আউট করে সপ্তম উইকেট জুটি ভাঙলেন কামিন্দু। অফ স্পিনে ক্রিজে আটকে গিয়ে এলবিডব্লিউ হলেন ৩৪ বলে ১৫ রান করা শাহাদাত। রিভিউ নিয়েও লাভ হয়নি তার।
শাহাদাতের বিদায়ে ভাঙল ৪৭ রানের সপ্তম উইকেট জুটি। জয় থেকে স্রেফ ৩ উইকেট দূরে শ্রীলঙ্কা।
৬২ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ২৪৭ রান। ৩০ বলে ২৯ রানে খেলছেন মিরাজ। নতুন ব্যাটসম্যান তাইজুল ইসলাম৷
বাংলাদেশকে দ্রুত গুটিয়ে দেওয়ার চেষ্টায় একটি রিভিউ হারাল শ্রীলঙ্কা। ভিশ্ব ফার্নান্দোর অফ স্টাম্পের বাইরের বল দূর থেকে খেলার চেষ্টা করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। বদলি উইকেটরক্ষক সাদিরা সামারাউইক্রামা বল গ্লাভসে জমাতেই জোরাল আবেদন। তাতে সাড়া দেননি আম্পায়ার। রিভিউ নেয় শ্রীলঙ্কা। রিপ্লেতে দেখা যায়, ব্যাট ও বলের মধ্যে দূরত্ব ছিল স্পষ্ট। তাই বিপদ ঘটেনি মিরাজের৷
পরের ওভারে কামিন্দু মেন্ডিসের বলে লফটেড শটে বাউন্ডারি মেরে দলের আড়াইশ পূর্ণ করেন তাইজুল ইসলাম।
৬৪ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ২৫৩ রান। মিরাজ ৩৮ বলে ৩১ ও তাইজুল ৭ বলে ৮ রানে খেলছেন।
চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে উন্নতি করেছে বাংলাদেশ। তবুও চোখ রাঙাচ্ছে বড় পরাজয়ের শঙ্কা।
চতুর্থ দিন শেষে ৫১১ রানের লক্ষ্যে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ২৬৮ রান।
জয়ের জন্য পঞ্চম ও শেষ দিনে স্বাগতিকদের প্রয়োজন ২৪৩ রান। ম্যাচ বাঁচাতে কাটিয়ে দিতে হবে পুরো একটা দিন। শেষ ৩ উইকেট নিয়ে দুটিই প্রায় অসম্ভব একটি কাজ।
মেহেদী হাসান মিরাজ ৪৯ বলে ৪৪ ও তাইজুল ইসলাম ১৪ বলে ১০ রানে শেষ দিনের খেলা শুরু করবেন। শেষ বিকেলে জুটি বেধে দুজন যোগ করেছেন ২৫ রান। বাংলাদেশ কত দূর যাবে তা নির্ভর করছে এই দুইজনের উপরই।
৬ উইকেটে ১০২ রান নিয়ে মঙ্গলবারের খেলা শুরু করা শ্রীলঙ্কা আর ১ উইকেট হারিয়ে ৫৫ রান যোগ করে ইনিংস ঘোষণা করে।
বিশাল লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে আগের তিন ইনিংসের চেয়ে তুলনামূলক ভালো করলেও তাতে ম্যাচ জেতা বা পরাজয় এড়ানোর কোনো সম্ভাবনা জাগাতে পারেনি স্বাগতিকরা।
আউট হওয়া সাত ব্যাটসম্যানের সবাই দুই অঙ্ক ছুঁয়েছেন। কিন্তু পঞ্চাশ করতে পেরেছেন শুধু মুমিনুল হক। তিনিও ইনিংস বড় করতে পারেননি।
নিয়মিত বিরতিতে উইকেট নিয়ে আরও একটি বড় জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েই চতুর্থ দিনের খেলা শেষ করেছে শ্রীলঙ্কা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ৫৩১
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১৭৮
শ্রীলঙ্কা ২য় ইনিংস: ১৫৭/৭ ইনিংস ঘোষণা
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৫১১) ৬৭ ওভারে ২৬৮/৭ (জয় ২৪, জাকির ১৯, শান্ত ২০, মুমিনুল ৫০, সাকিব ৩৬, লিটন ৩৮, শাহাদাত ১৫, মিরাজ ৪৪*, তাইজুল ১০*; ভিশ্ব ১০-০-৩৯-১, আসিথা ১২-১-৫২-০, কুমারা ১১-২-৪১-২, জায়াসুরিয়া ২০-১-৭৯-২, ধানাঞ্জয়া ৭-১-২৫-০, কামিন্দু ৭-০-২২-২)