দুটি ম্যাচে প্রথম দিনেই শুরু হয়ে গেছে ম্যাচের তৃতীয় ইনিংস।
Published : 31 Oct 2022, 07:40 PM
জাতীয় লিগে চতুর্থ রাউন্ডের প্রথম দিন বগুড়া ও বিকেএসপির মাঠে আধিপত্য দেখিয়েছেন বোলাররা। সিলেট ও খুলনায় ছড়ি ঘুরিয়েছেন ব্যাটসম্যানরা। দেখা মিলেছে তিন সেঞ্চুরির। আর তিন জন বোলার পেয়েছেন পাঁচ উইকেট।
বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে বোলারদের দাপট আর ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় প্রথম দিনেই শুরু হয়ে গেছে ম্যাচের তৃতীয় ইনিংস। ঘাসের উইকেটে ডিউক বলের সুবিধা কাজে লাগিয়ে শুরু থেকেই উইকেট শিকারে নামে ঢাকা ও রংপুরের বোলাররা।
তবে দ্বিতীয়বারে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন ঢাকার দুই ওপেনার আব্দুল মজিদ ও মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। প্রথম দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে ঢাকার সংগ্রহ বিনা উইকেটে ৮৮ রান। প্রথম ইনিংসের ১১ রানের লিডের সৌজন্যে ৯৯ রানে এগিয়ে তারা।
এর আগে ঢাকার প্রথম ইনিংস গুটিয়ে যায় ৮৪ রানে। জবাবে রংপুর অলআউট হয় ৭৩ রানে।
প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে মাত্র দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামা সোহেল রানার পেসে ধসে পড়ে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ঢাকা। স্রেফ ১৬ রানে চার উইকেট পড়ার পর ৪৬ রানের জুটিতে ধাক্কা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন শুভাগত হোম ও তাইবুর পারভেজ।
এ দুজন ছাড়া আর কেউ দুই অঙ্কের দেখা পাননি। সোহেল ২৫ রানে নেন ৫ উইকেট।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে আরও খারাপ অবস্থা হয় রংপুরের। ৩০ রানে ৬ উইকেট হারানো রংপুরের হাল কেউ ধরতে পারেননি।
তাদের বিপক্ষে প্রথম দেখায় দুই ইনিংস মিলে ৯ উইকেট নেওয়া সুমন খান এবার প্রথম ইনিংসে পেয়েছেন ৫ উইকেট। তৃতীয়বারের মতো ৫ উইকেট পেলেন ২২ বছর বয়সী এই পেসার।
শেষ বিকেলে ব্যাট হাতে দৃঢ়তা দেখানো মজিদ ও অঙ্কন ১৬ ওভারে গড়েছেন ৮৮ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি। মারমুখী ব্যাটিংয়ে ৫১ বলে ৫৪ রানে অপরাজিত মাহিদুল। মজিদ খেলছেন ৩৩ রান নিয়ে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (প্রথম দিন শেষে)
ঢাকা ১ম ইনিংস: ৩২.১ ওভারে ৮৪ (রনি ০, মজিদ ৯, মাহিদুল ৫, রকিবুল ০, তাইবুর ১৫, শুভাগত ২৮, নাদিফ ৪, সুমন ০, নাজমুল ০, শাকিল ৯, হোসেন ৪*; সোহেল ১০-৪-২৫-৫, রবিউল ৭-২-২০-০, মুশফিক ৭-০-১৮-০, আরিফুল ৬.১-৩-১০-৩, মামুন ২-১-১-২)
রংপুর ১ম ইনিংস: ২৯.৪ ওভারে ৭৩ (মাইশুকুর ১, মামুন ২, তানবীর ০, নাইম ২, নাসির ১৪, শুভ ৮, আকবর ০, আরিফুল ১৯, রবিউল ১৬*, মুশফিক ৪, সোহেল ০; সুমন ১৩.৪-২-৩৩-৫, শাকিল ৫.৫-৩-৪-৩, হোসেন ৫-১-২০-০, শুভাগত ০.১-০-০-০, তাইবুর ৫-০-১৪-১)
ঢাকা ২য় ইনিংস: ১৬ ওভারে ৮৮/০ (মজিদ ৩৩*, মাহিদুল ৫৪*; সোহেল ৩-০-১০-০, মুশফিক ৪-০-৩০-০, রবিউল ৩-০-২৫-০, শুভ ৪-০-১৪-০, মামুন ২-০-৮-০)
জুনায়েদ-জহুরুলের সেঞ্চুরিতে রাজশাহীর স্বপ্নের দিন
বগুড়ার ঠিক বিপরীত অবস্থা খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে। বরিশাল ও রাজশাহীর ম্যাচে সারা দিনেও পড়েনি কোনো উইকেট। নির্বিঘ্নে কাটিয়ে দিয়েছেন রাজশাহীর দুই ওপেনার জুনায়েদ সিদ্দিকী ও জহুরুল ইসলাম। দুজনই হাঁকিয়েছেন সেঞ্চুরি।
প্রথম দিন শেষে খুলনার সংগ্রহ বিনা উইকেটে ২৪২ রান।
প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে ১৮তম সেঞ্চুরিতে ১০৯ রানে অপরাজিত রয়েছেন বাঁহাতি জুনায়েদ। ৩০৬ বলের ইনিংসে এখন পর্যন্ত মেরেছেন ১৩টি চার। ডানহাতি জহুরুল ২৩৪ বলে ১২টি চার ও একটি ছক্কায় করেছেন ১২৭ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (প্রথম দিন শেষে)
রাজশাহী ১ম ইনিংস: ৯০ ওভার ২৪২/০ (জহুরুল ১২৭*, জুনায়েদ ১০৯*; রাব্বি ১৪-২-৪৪-০, রুয়েল ১৬-৬-৪০-০, তানভির ২৬-০-৮১-০, সোহাগ ১৭-৭-৪২-০, মইন ১০-৩-১১-০, আশরাফুল ৭-০-২০-০)
জাকিরের সেঞ্চুরিতে বড় সংগ্রহের পথে সিলেট
ঘরের মাঠে চট্টগ্রামের বোলারদের ওপর ছড়ি ঘোরাচ্ছেন সিলেটের ব্যাটসম্যানরা।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম দিন শেষে স্বাগতিক দলের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ৩৫১ রান। অপরাজিত সেঞ্চুরিতে দলকে বড় সংগ্রহের পথে এগিয়ে নিচ্ছেন অধিনায়ক জাকির হাসান।
ব্যাটিং বান্ধব উইকেটে টস জিতে ব্যাটিং নিতে দ্বিতীয়বার ভাবেননি সিলেট অধিনায়ক জাকির। উদ্বোধনী জুটিতে ৯৪ রান যোগ করেন ইমতিয়াজ হোসেন ও তৌফিক খান তুষার। এই মাঠেই রংপুরের বিপক্ষে ৬২ বলে ৯২ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তৌফিক। এবার চট্টগ্রামের সঙ্গে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৬৩ বলে ৬৮ রান।
ফিফটির আশা জাগিয়েও পারেননি অভিজ্ঞ ইমতিয়াজ। আউট হয়েছেন ৩৯ রানে। এরপর অমিত হাসান ১৬ ও আল আমিন জুনিয়র ফেরেন ২৫ রান করে। দিনের বাকি অংশে আর বিপদ ঘটতে দেননি জাকির ও আসাদুল্লা হিল গালিব।
প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে দ্বাদশ সেঞ্চুরিতে উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান জাকির ১২টি চার ও ১টি ছক্কায় ১৩২ রানে অপরাজিত আছেন। গালিব খেলছেন ৪৬ রান নিয়ে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (প্রথম দিন শেষে)
সিলেট ১ম ইনিংস: ৯০ ওভারে ৩৫১/৪ (ইমতিয়াজ ৩৯, তৌফিক ৬৮, অমিত ১৬, জাকির ১৩২*, আলআমিন ২৫, গালিব ৪৬*; মিশু ১৪-৫-৪৬-০, নোমান ১৩-২-৬১-১, সৈকত ৪-০-১৯-০, মুরাদ ২৮-১-১১০-২, রনি ২৯-৫-৯০-১, তাসামুল ২-০-৬-০)
বিকেএসপিতে ২৩ উইকেটের দিন
বগুড়ার মতো বিকেএসপিতেও দাপট দেখিয়েছে বোলাররা। খুলনা ও ঢাকা মেট্রোর মধ্যকার ম্যাচের মতো প্রথম দিনেই শুরু হয়ে গেছে তৃতীয় ইনিংস, পড়েছে ২৩টি উইকেট।
প্রথম ইনিংসে স্রেফ ৬৪ রানে গুটিয়ে যায় খুলনা। জবাব দিতে নেমে ঢাকা মেট্রো করতে পারে ১১৮ রান।
পরেও ব্যর্থতা পিছু ফেলতে পারেনি খুলনার ব্যাটসম্যানরা। ৫৪ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে দলটি ৮ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলেছে। ইনিংস পরাজয় এড়াতেই আরও ৪৬ রান করতে হবে তাদের।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে সতীর্থদের আসা যাওয়ার মাঝে সর্বোচ্চ ১৭ রানে অপরাজিত থাকেন খুলনার জিয়াউর রহমান।
ঢাকা মেট্রোর পক্ষে ৪ উইকেট নেন ডানহাতি পেসার একেএস স্বাধীন। এছাড়া শরিফউল্লাহ, কাজী অনিক ও রাকিবুল হাসানের শিকার ২টি করে উইকেট।
ব্যাট হাতে ঢাকা মেট্রোর শুরুটাও ছিল ভয়াবহ। স্রেফ ৯ রানের মধ্যে সাজঘরে ফিরে যান চার ব্যাটসম্যান। সেখান থেকে মার্শাল আইয়ুবের ৩০ এবং অন্যদের ছোট ছোট অবদানে ১০০ পেরোয় মেট্রো।
বল হাতে খুলনার পক্ষে ৫ উইকেট নেন অফস্পিনার শেখ মেহেদি হাসান। প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে পঞ্চমবার ৫ উইকেট পেলেন তিনি।
ইনিংস পরাজয় এড়ানো এবং দলকে শক্ত অবস্থানে নেওয়ার চ্যালেঞ্জে দ্বিতীয় দিন ব্যাটিংয়ে নামবেন খুলনার টিপু সুলতান ও ইমরানউজ্জামান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (প্রথম দিন শেষে)
খুলনা ১ম ইনিংস: ৩২.২ ওভারে ৬৪ (অমিত ১, রবি ১৫, ইমরুল ০, নাহিদুল ৯, জাওয়াদ ৯, জিয়াউর ১৭*, ইমরানউজ্জামান ০, টিপু ১, আশিকুর ১, হালিম ০; রনি ৬-২-৮-০, শরিফউল্লাহ ৪-২-৯-২, রাকিবুল ১২-৪-১৭-২, কাজী অনিক ৬-২-১৩-২, স্বাধীন ৪.২-১-১২-৪)
ঢাকা মেট্রো ১ম ইনিংস: ৩৯.৩ ওভারে ১১৮ (আজমির ০, জাহিদুজ্জামান ০, আইচ ২, মার্শাল ৩০, শামসুর ০, বিপ্লব ১৫, শরিফউল্লাহ ২৮, রনি ৭, কাজী অনিক ২০, রাকিবুল ৪*, স্বাধীন ৭; আশিকুর ১১-৪-২৫-২, জিয়াউর ৬-৩-১৮-২, শেখ মেহেদি ১৪.৩-৪-৪৪-৫, হালিম ৭-২-১৫-১, রবি ১-০-১৩-০)
খুলনা ২য় ইনিংস: ৯ ওভারে ৮/৩ (অমিত ১, রবি ১, টিপু ০*, ইমরুল ৪, ইমরানউজ্জামান ২*; রনি ৪-০-৭-২, শরিফউল্লাহ ৪-৩-১-১, রাকিবুল ১-১-০-০)