রোমাঞ্চ জাগিয়ে ড্র বুলাওয়ায়ো টেস্ট

টাফাদজওয়া সিগা ও ওয়েলিংটন মাসাকাদজার সপ্তম উইকেট জুটির দৃঢ়তায় ম্যাচ বাঁচাল জিম্বাবুয়ে।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Feb 2023, 04:47 PM
Updated : 8 Feb 2023, 04:47 PM

শেষ দিনের উইকেটে স্পিনারদের জন‍্য টার্ন মিলল বেশ, গ্রিপও করছিল বল। দারুণ বোলিংয়ে নাটকীয় জয়ের আশা জাগালেন গুডাকেশ মোটি ও রোস্টন চেইস। কিন্তু অভিষিক্ত টাফাদজওয়া সিগা ও ওয়েলিংটন মাসাকাদজার ব্যাটিং দৃঢ়তায় রোমাঞ্চের মৃত্যু। শেষ সেশনে ম্যাচ বাঁচিয়ে ফেলল জিম্বাবুয়ে। 

পঞ্চম দিনের শেষ ঘণ্টায় পরপর দুই ওভারে জিম্বাবুয়ের দুই উইকেট পতনে নাটকীয় কিছুর সম্ভাবনা জাগে। তবে শেষ পর্যন্ত ড্রই হয়েছে বুলাওয়ায়ো টেস্ট। 

রেমন রিফার ও জার্মেইন ব্ল্যাকউডের ফিফটিতে ৫ উইকেটে ২০৩ রান নিয়ে এ দিন দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জিম্বাবুয়ের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪৯ ওভারে ২৭২। স্বাগতিকরা ৬ উইকেটে করে ১৩৪ রান। 

৬ উইকেটের ৪টিই নেন বাঁহাতি স্পিনার মোটি, ২টি অফ স্পিনার চেইস। 

ওয়েস্ট ইন্ডিজ বুধবার ব্যাটিং শুরু করে বিনা উইকেটে ২১ রান নিয়ে। টেস্ট ইতিহাসে প্রথম জুটি হিসেবে টেস্টের পাঁচ দিনেই ব্যাটিং করার কীর্তি গড়া ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট ও তেজনারাইন চন্দরপল এবার ইনিংস বড় করতে পারেননি। 

প্রথম ইনিংসের ডাবল সেঞ্চুরিয়ান চন্দরপল এবার ১৫ রান করে বোল্ড হন ব্র্যাড ইভান্সের বলে। বাঁহাতি স্পিনার ওয়েলিংটন মাসাকাদাজার বলে এলবিডব্লিউ হন প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান ব্র্যাথওয়েট (২৫)। 

তৃতীয় উইকেটে ১০৭ রানের বড় জুটিতে দলকে এগিয়ে নেন রিফার ও ব্ল্যাকউড। দুজনই ফিফটির পরপর ক্যাচ দেন মাসাকাদজার বলে। ১০৬ বলে ৯ চারে গড়া রিফারের ৫৮ রানের ইনিংস। ৮৪ বলে ৫ চার ও এক ছক্কায় ৫৭ রান করেন ব্ল্যাকউড। 

চেইস টিকতে পারেননি। কাইল মেয়ার্স ও জশুয়া দা সিলভার ব্যাটে স্কোর দুইশ পেরুনোর পরপর ইনিংস ঘোষণা করে দেন ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক ব্র্যাথওয়েট। 

টেস্ট ইতিহাসে এক ম্যাচে তিন ইনিংস ঘোষণার নজির দেখা গেল এই নিয়ে সাত বার। আগের ছয় ম্যাচও ড্র হয়েছিল। 

রান তাড়ায় চতুর্থ ওভারেই টানুনুরওয়া মাকোনিকে হারায় জিম্বাবুয়ে। অভিষিক্ত ব্যাটসম্যানকে কট বিহাইন্ড করানো মোটি পরে ফিরিয়ে দেন আরেক ওপেনার ইনোসেন্ট কাইয়াকে। তিনি ক্যাচ দেন শর্ট মিডউইকেটে। 

চামু চিবাবার ৬০ বলে ৩১ রানের ইনিংস থামান চেইস। ক্রেইগ আরভিনকে টিকতে দেননি মোটি। তখন ২৩.২ ওভারে ৮৩ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে জিম্বাবুয়ে। 

টাফাদজওয়া সিগাকে নিয়ে এরপর প্রতিরোধ গড়েন প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান গ্যারি ব্যালান্স। দুই জনে কাটিয়ে দেন প্রায় ১৯ ওভার। এরপর জাগে নাটকীয়তার আভাস। 

পরপর দুই ওভারে বিদায় নেন ব্যালান্স ও ব্র্যাড ইভান্স। চেইসের লেগ সাইডের বাইরের বলে কিপারের গ্লাভসে ধরা পড়েন ব্যালান্স (৬৩ বলে ১৮)। মোটি এলবিডব্লিউ করে দেন ইভান্সকে। 

তখন ৪৩.৪ ওভারে জিম্বাবুয়ের রান ৬ উইকেটে ১২০। ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য তখনও সময় ছিল অনেকটা। নির্ধারিত ৪৯ ওভার পেরিয়ে যাওয়ার পরও দিনের খেলা বাকি ছিল ১৫ মিনিট। তেমন কিছু আর করে দেখাতে পারেননি ক্যারিবিয়ান বোলাররা। 

সপ্তম উইকেটে ১০.২ ওভারের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ম্যাচ বাঁচিয়ে ফেরেন সিগা (৮৩ বলে ২৪*) ও মাসাকাদজা (৩৬ বলে ০*)।   

প্রথম ইনিংসের ডাবল সেঞ্চুরির জন্য ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন চন্দরপল। 

একই মাঠে আগামী রোববার শুরু হবে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর: 

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ৪৪৭/৬ ডিক্লে. 

জিম্বাবুয়ে ১ম ইনিংস: ৩৭৯/৯ ডিক্লে. 

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২য় ইনিংস: ৬০ ওভারে ২০৩/৫ ডিক্লে. (আগের দিন ২১/০) (ব্র্যাথওয়েট ২৫, চন্দরপল ১৫, রিফার ৫৮, ব্ল্যাকউড ৫৭, চেইস ১৪, মেয়ার্স ১৭*, জশুয়া ৯*; নিয়াউচি ১৬-৫-৩৮-০, মাসাকাদজা ২৩-৫-৭১-৩, ইভান্স ১২-২-৪১-২, মাভুটা ৬-০-৩০-০, এনগারাভা ৩-০-১৯-০) 

জিম্বাবুয়ে ২ম ইনিংস: (লক্ষ্য ২৭২) ৫৪ ওভারে ১৩৪/৬ (কাইয়া ২৪, মাকোনি ৯, চিবাবা ৩১, আরভিন ১৭, ব্যালান্স ১৮, সিগা ২৪*, ইভান্স ০, মাসাকাদজা ০*; রোচ ৩-০-১৬-০, মোটি ২৪-৬-৫০-৪, জোসেফ ৫-০-১৯-০, হোল্ডার ৫-১-১৩-০, ব্র্যাথওয়েট ৪-০-১০-০, চেইস ১২-৬-৯-২, মেয়ার্স ১-০-৬-০) 

ফল: ড্র 

সিরিজ: দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথমটির পর ০-০ সমতা 

ম্যান অব দা ম্যাচ: তেজনারাইন চন্দরপল