বিপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচে দারুণ বোলিংয়ে সিলেট স্ট্রাইকার্সের জয়ের ভিত গড়ে দিয়েছেন পেসার রেজাউর রহমান রাজা
Published : 06 Jan 2023, 08:18 PM
পাওয়ার প্লে শেষ হতেই রেজাউর রহমান রাজার হাতে বল তুলে দিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। সাফল্য পেতে সময় লাগল না এই পেসারের। ওভারের দ্বিতীয় বলেই খাটো লেংথের ডেলিভারিতে অনেকটা বিপাকে ফেলেই শুভাগত হোমের উইকেট আদায় করে নিলেন রাজা।
পরের তিন ওভারে আরও তিনবার সাফল্যের আনন্দে মেতে উঠলেন সিলেট স্ট্রাইকার্সের তরুণ পেসার। পৌষের মিষ্টি রোদের দুপুরে গতি ও বাউন্সের পসরা সাজিয়ে স্রেফ ১৪ রান দিয়ে নিলেন তিনি ৪ উইকেট। এমন বোলিংয়ের পর সিলেটের অনায়াস জয়ে ম্যাচ সেরায় তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না আর কেউ।
ঘরোয়া ক্রিকেটে উইকেটে বল পিচ করার গতির সঞ্চার করতে পারার জন্য পরিচিত রয়েছে রাজার। পাশাপাশি তার হঠাৎ লাফিয়ে ওঠা ডেলিভারিও মাথা ব্যথার কারণ হয় ব্যাটসম্যানদের জন্য। মিরপুরের মন্থর উইকেটেও বিপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচে এই সবকিছুই তিনি করেছেন। হাতেনাতে পেয়েছেন সাফল্য।
সপ্তম ওভারে যখন বল হাতে নেন রাজা, স্রেফ ২১ রানে ২ উইকেট হারিয়ে তখন এমনিতে ধুঁকছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। রাজা তাদেরকে ঠেলে দেন আরও বিপদে।
ডিপ পয়েন্ট সীমানায় ফিল্ডার রেখে ওভারের দ্বিতীয় বলটি অফ স্টাম্পের বাইরে খাটো লেংথে করেন রাজা। ফাঁদে পা দেন শুভাগত। শরীরের দূর থেকে খেলতে গিয়ে ধরা পড়েন তৌহিদ হৃদয়ের হাতে।
উইকেট পেলেও রাজাকে সরিয়ে নেন মাশরাফি। ১১তম ওভারে ফিরে আবারও রাজার গতির জয়। এবার জোরের ওপর বাউন্সার করেন রাজা। উসমান খান সজোরে চালালেও বল লাগে তার ব্যাটের কানায়। অনেকটা লাফিয়ে উঠে এক হাতে ক্যাচটি নেন উইকেটকিপার মুশফিকুর রহিম।
রাজার পরের দুই উইকেটেও গতি ও বাউন্সের জয়। জোরের ওপর আসা বাউন্সার পুল করতে গিয়ে হাওয়ায় ভাসিয়ে দেন উন্মুক্ত চাঁদ। স্কয়ার লেগে দাঁড়িয়ে নিরাপদে ক্যাচ নেন কলিন অ্যাকারম্যান। পরে ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে থার্ড ম্যানে ক্যাচ দিয়ে আউট হন নিহাদউজ্জামান।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে ২৩ বছর বয়সী পেসার বললেন, বাড়তি কিছু না ভেবে তার ভাবনায় ছিল নিজের পরিকল্পনা বোলিং করা।
“আমার চেষ্টা ছিল ভালো কিছু করার। প্রক্রিয়া অনুযায়ী বোলিং করেছি। দলের একটি নির্দিষ্ট পরিকল্পনা ছিল। সেটি মাথায় রেখে করেছি। ভালো করতে পেরে ভালো লাগছে। এটা আমার জন্য, দলের জন্যও অনুপ্রেরণার। লিগের শুরুতে এমন পারফরম্যান্স দলের জন্যও ভালো।”
প্রায় দুই বছর ধরেই দেশের পরিচিত মুখ রাজা। সবশেষ ভারত সিরিজসহ জাতীয় দলের সঙ্গে বেশ কয়েকটি সিরিজেই ছিলেন তিনি। তবে প্রতিবারই তাকে নেওয়া হয়েছে টেস্ট ক্রিকেটের জন্য। সীমিত ওভারের ক্রিকেটের দলে তাকে দেখা যায়নি।
এবারের বিপিএলে প্রথম ম্যাচেই সাদা বলে নিজের সামর্থ্যের জানান দিলেন সিলেটের এই পেসার। তবে তিনি ভিন্ন সংস্করণের বোলিংয়ে খুব বেশি ভিন্নতা দেখেন না।
“আসলে বলের (সাদা-লাল বল) পার্থক্য খুব বেশি না, শুধু একটু লাইন-লেন্থ একটু বদলাতে হয়। সাদা বলে আসলে হয়তো একটু ভেরিয়েশন করা লাগে। সাদা বল-লাল বল আমার কাছে খুব একটা আলাদা মনে হয় না। আমি চেষ্টা করছি, উইকেট অনুযায়ী বোলিং করার।”
জাতীয় দলের সঙ্গে থেকে, বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ডের সঙ্গে কাজ করে, অনুশীলন সুযোগ-সুবিধায় থেকে নিজেকে সমৃদ্ধ করার সুযোগ যে মিলছে, এটিও বললেন রাজা।
“জাতীয় দলের সঙ্গে থাকাটা আমার জন্য বড় সুযোগ। ড্রেসিংরুম থেকেও অনেক কিছু শেখা যায়। অ্যালান ডোনাল্ড, তিনি একজন বিশ্বমানের বোলার ছিলেন। আমাদের এখানে কোচ তিনি, তার থেকে অনেক কিছু শেখার চেষ্টা করছি। যত দিন জাতীয় দলে ছিলাম আমার জন্য ভালো হয়েছে। অনেক কিছু শিখেছি।”