বিপিএলের গত আসরে সবার নিচে থাকা চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স এবার টুর্নামেন্ট শেষ করেছে চতুর্থ হয়ে।
Published : 26 Feb 2024, 07:17 PM
প্রথম পর্বে ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে দুই ম্যাচেই জয়ী দলের নাম চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। কিন্তু প্লে-অফে বরিশালের সঙ্গে তেমন লড়াই করতেই পারেনি তারা। বড় পরাজয়ে এলিমিনেটর ম্যাচে বেজে যায় তাদের বিদায়ঘণ্টা। তবে ফাইনালে ওঠার লড়াই থেকে ছিটকে গেলেও টুর্নামেন্টে নিজেদের সার্বিক পারফরম্যান্সে খুশি চট্টগ্রাম অধিনায়ক শুভাগত হোম।
গত আসরের রানার্স-আপ সিলেট স্ট্রাইকার্সকে হারিয়ে এবারের যাত্রা শুরু করেছিল চট্টগ্রাম। এরপর ছন্দ ধরে রেখে বরিশালের বিপক্ষে দুই জয় ছাড়াও খুলনা টাইগার্স, দুর্দান্ত ঢাকার সঙ্গেও দারুণ পারফর্ম করে তারা। প্রথম পর্বে ১২ ম্যাচে ৭ জয়ে তৃতীয় দল হিসেবে নিশ্চিত হয় তাদের প্লে-অফের টিকেট।
প্লেয়ার্স ড্রাফটের পর তাদের নিয়ে বাজি ধরার লোক খুব একটা ছিল না। দলে বড় নাম নেই তেমন কোনো। তারুণ্যে ভর করেই মূলত সাজানো হয় স্কোয়াড। পরে সম্মিলিত পারফরম্যান্সেই মেলে সাফল্য।
টুর্নামেন্টের শুরুর দিকে আভিশকা ফার্নান্দো, নাজিবউল্লাহ জাদরানরা এগিয়ে নেন দলকে। আসরের মাঝামাঝি সময়ে ছন্দে ফিরে বিধ্বংসী সেঞ্চুরি করেন তানজিদ হাসান। সব মিলিয়ে দলের সর্বোচ্চ ৩৮৪ রান আসে তার ব্যাট থেকে। কিউই কিপার-ব্যাটসম্যান টম ব্রুসও রাখেন ধারাবাহিকতার ছাপ।
বোলিংয়ে বিলাল খান, শহিদুল ইসলামদের সঙ্গে শুভাগতও গুরুত্বপূর্ণ সময়ে অবদান রাখেন।
টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যাওয়ার পর সোমবার সংবাদ সম্মেলনে নিজেদের সামগ্রিক পারফরম্যান্সে তৃপ্তিই ফুটে উঠল চট্টগ্রাম অধিনায়কের কণ্ঠে।
“পুরো টুর্নামেন্টের ব্যাপারে বলব যে, আমি সন্তুষ্ট। আমরা যেভাবে ক্রিকেট খেলেছি, প্লে-অফে খেলেছি। প্লে-অফে হয়তো সেভাবে পারফর্ম করতে পারিনি। তবে ছেলেরা যেভাবে খেলেছে, আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে পারফর্ম করে আমাদের মোমেন্টাম এনে দিয়েছে। আমি খুশি।”
গত আসরেও শুভাগতর নেতৃত্বে খেলেছে চট্টগ্রাম। সেবার ১২ ম্যাচে স্রেফ ৩ জয়ে সবার নিচে থেকে শেষ হয়েছিল তাদের যাত্রা। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে পরের বছরেই প্লে-অফ খেলল তারা।
বছর ঘুরতেই দলের পারফরম্যান্সের এই উন্নতির পেছনে দলীয় বন্ধনের কথা বলেন চট্টগ্রাম অধিনায়ক।
“আমার মনে হয়, গত বছরের চেয়ে এবারের দলটা অনেকটা গোছানো। যারা খেলেছে, সবাই নিজেদের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছে এই বছর। আমাদের দলের বন্ধন খুব ভালো ছিল। হয়তো খুব বেশি নামি ক্রিকেটার ছিল না, তবে আমাদের দলীয় ঐক্য ভালো ছিল। সেই হিসেবে ফলটা এসেছে আমাদের পক্ষে।”
প্রথম পর্বে শেষ দুই ম্যাচ জেতার সুখস্মৃতি নিয়েই প্লে-অফে মাঠে নামে চট্টগ্রাম। বরিশালের বিপক্ষে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে সেই ছন্দ ধরে রাখতে পারেনি তারা। মূলত প্রথম ইনিংসেই নির্ধারণ হয়ে যায় ম্যাচের ভাগ্য। তুলনামূলক ভালো ব্যাটিং উইকেটে তারা করে স্রেফ ১৩৫ রান।
ম্যাচ শেষে শুভাগতও বললেন, ব্যাটিংয়ে যথেষ্ট রান করতে পারেননি তারা।
“আমরা টসের আগে যখন দেখলাম উইকেট খুব ভালো ছিল, শক্ত ছিল। আমরা সেভাবে কাজে লাগাতে পারিনি। আমাদের টপ-অর্ডার যারা ছিল, তারা পাওয়ার প্লে কাজে লাগাতে পারেনি। আমরা দ্রুত উইকেটও হারিয়েছি কিছু। এটা আমাদের জন্য হতাশাজনক যে, এরকম উইকেটেও একটা ভালো সংগ্রহ পাইনি।”
চট্টগ্রামের বড় রান না পাওয়ার পেছনে বড় কারণ তানজিদের নিষ্প্রভ দিন। আগের ৪ ম্যাচে ২৪০ রান করা বাঁহাতি ওপেনার এদিন ফিরেছেন স্রেফ ২ রান করে। শেষটা ভালো না হলেও সব মিলিয়ে দলের সেরা ব্যাটসম্যান তিনিই। এলিমিনেটর ম্যাচ পর্যন্ত টুর্নামেন্টের রানের তালিকায় তার অবস্থান দুই নম্বরে।
তরুণ এই ব্যাটসম্যানের প্রশংসা করতেও ভুললেন না শুভাগত।
“খুব ভালো ব্যাটিং করেছে। হয়তো শুরুর দিকে সেভাবে নিজেকে মেলে ধরতে পারেনি। যত দিন গেছে নিজেকে মেলে ধরেছে। দলের প্রতি ভালো অবদান ছিল। টপ অর্ডারে ওর অবদান ভালো ছিল। আজকে হয়তো সেভাবে অবদান রাখতে পারেনি। আমি চাইব, এভাবেই তার কাজটা করে যাক এবং পারফরম্যান্স ধরে রাখুক।”