সেঞ্চুরির পর বাঁধনহারা উদযাপনই বলে দেয়, কতটা উচ্ছ্বসিত আন্দ্রে ফ্লেচার! টুর্নামেন্টে আগেও দুবার ম্যাচ-সেরা হয়েছেন তিনি। তবে এবার স্রেফ সেঞ্চুরি করা বা দলকে জেতানোর ব্যাপারই ছিল না, দলের কাছে দেওয়া প্রতিজ্ঞাকেও বাজি রেখে উইকেটে গিয়েছিলেন তিনি। সব পাওয়ার ম্যাচ শেষে প্রিমিয়ার ব্যাংক খুলনা টাইগার্সের ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যান বললেন, “আমি সুপার হ্যাপি।”
Published : 12 Feb 2022, 09:04 PM
প্লে অফ খেলতে হলে ম্যাচটি জিততেই হতো খুলনাকে। আগেই শীর্ষ দুই নিশ্চিত করে ফেলা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স বিশ্রাম দেয় অধিনায়ক ইমরুল কায়েসসহ কজনকে। তাতে খুলনার কাজ সহজ হতে পারত। কিন্তু হতে দেননি ফাফ দু প্লেসি। ভারপ্রাপ্ত অধিনায়কের সেঞ্চুরিতে কুমিল্লা তুলে ফেলে ১৮২ রান। ম্যাচের মাঝ বিরতিতে তাই বিদায়ের সুর বেজে ওঠার কথা খুলনার ড্রেসিং রুমে।
কিন্তু ফ্লেচারের অপরাজিত সেঞ্চুরিতে সেই ড্রেসিং রুমেই বেজে ওঠে আনন্দের ঝংকার। মেহেদি হাসানের সঙ্গে উদ্বোধনী জুটিতেই দলকে জয়ের কাছে নিয়ে যান তিনি। ৯ উইকেটের জয়ে শেষ দল হিসেবে তারা পা রাখে প্লে অফে।
ম্যাচের পর ফ্লেচার বললেন, চ্যালেঞ্জ জয়ের পথে তারা এগিয়ে গেছেন দারুণ পরিকল্পনা করে।
“সত্যি বলতে, আমাদের চাওয়া ছিল ১৬০-১৭০ রানে ওদেরকে আটকে রাখা। উইকেট ভালো, এই রান তাড়া করতে পারব বলে মনে হয়েছিল আমাদের। ১৮০ (১৮২) হয়ে যাওয়ার পর একটু অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। তবে নিজের ওপর আস্থা ছিল আমার। মেহেদি (হাসান) ভালো খেলেছে। আমরা ইতিবাচক থেকে এগিয়ে গেছি।”
“নিজের শক্তির জায়গায় খেলে গেছি। অপ্রয়োজনীয় ঝুঁকি নেইনি। জানতাম, সুনিল নারাইন ও বাঁহাতি স্পিনারটি (তানভির ইসলাম) ওদের ট্রাম্প কার্ড। মেহেদিকে বলছিলাম যে, ওদের ওভারে ৬ রান করে নিলেও অন্যদের ওভারে তা পুষিয়ে দেওয়া যাবে। বিশ্বাস করুন, আমি ‘সুপার হ্যাপি।”
বিপিএলে তার আগেও একটি সেঞ্চুরি ছিল সিলেট থান্ডারের হয়ে, তার এখনকার দল খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে। সেই ম্যাচেও জিতেছিল দল। এবারও নিজের সেঞ্চুরির চেয়ে তাকে বেশি তৃপ্তি দিচ্ছে দলের জয়।
“সত্যি বলতে, সেঞ্চুরির চেয়ে এটি (জয়) আমার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। মনে পড়ে, ছেলেদেরকে বলেছিলাম, ফাইনাল না খেলে টুর্নামেন্ট ছাড়ছি না। এখনও শেষ হয়ে যায়নি সম্ভাবনা। এখনই আত্মতুষ্টির কিছু নেই, কেবল প্লে অফে উঠলাম। বৃহত্তর ছবিটা দেখতে হবে।”
এই ইনিংসটি অবশ্য থামতে পারত ৭১ রানেই। মইন আলির বলে তাকে এলবিডব্লিউ দেন আম্পায়ার। তিনি ড্রেসিং রুমের দিকে হাঁটাও দেন। কিন্তু উইকেটে তার সঙ্গী মেহেদি থামান তাকে। রিভিউয়ে দেখা যায়, বল ছিল অফ স্টাম্পের বেশ বাইরে।
বেঁচে যাওয়ার সেই কৃতিত্ব মেহেদিকে দিলেন ফ্লেচার।
“দারুণ রিভিউ ছিল সেটি। আমার মনে হয়েছিল, আমি নিশ্চিত আউট। কিন্তু সে (মেহেদি) বলছিল, স্টাম্পের বাইরে ছিল বল। তার কথায় বিশ্বাস রাখি আমি। দারুণ ভাবনা ছিল এটা তার, কারণ আমি তখন খুব ভালোভাবে ছুটছিলাম। দলকে আরও দূর টেনে নিতে পেরে আমি খুশি।”