ম্যাচের আগের দিন বিকেলের দৃশ্য। মাঠে ঢুকেই নিউ জিল্যান্ডের কয়েকজন ক্রিকেটার সরাসরি চলে যান পিচের কাছে। চটের কাভার উঁচিয়ে দেখতে শুরু করেন উইকেট। আঙুল দিয়ে টিপে পরখ করেও দেখেন দু-একজন। এসব দেখে মাঠের বাইরে থেকে তড়িঘড়ি করে ছুটে যান মাঠকর্মীরা। উইকেট দেখারও তো একটা নিয়ম আছে! কিউইরা বুঝতে পেরে সরে যান দ্রুত। পরে অবশ্য প্রথা মেনেই মাঠকর্মীরা কাভার পুরোপুরি সরিয়ে উইকেট দেখার সুযোগ করে দেন কিউইদের।
Published : 01 Sep 2021, 10:31 AM
দিনের প্রথম ভাগে বাংলাদেশের অনুশীলনেও উইকেট নিয়ে গবেষণা চলল বিস্তর। কোচ রাসেল ডমিঙ্গো ও অভিজ্ঞ ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান বেশ সময় নিয়ে বোঝার চেষ্টা করলেন উইকেটের ভেতর-বাহির। অন্য ক্রিকেটাররাও টুকটাক চোখ রাখলেন উইকেটে।
উইকেট নিয়ে আগ্রহ এমনিতে সব সিরিজে, সব ম্যাচেই থাকে। তবে ভেন্যু যখন মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়াম, সেই আগ্রহের পারদ থাকে আরও উঁচুতে। এখানকার উইকেট নানা সময়ে ধরা দেয় নানা রূপে। বাংলাদেশ-নিউ নিউ জিল্যান্ড সিরিজের প্রথম ম্যাচে বুধবার উইকেট কেমন থাকবে, সেটি নিয়েও চলছে জল্পনা।
এই ২২ গজের মূল চরিত্র মন্থর। সেখানে টার্ন কখনও থাকে, কখনও থাকে না। কখনও খানিকটা গ্রিপ করে, কখনও করে না, কখনও অনেক বেশিই করে। সবশেষ অস্ট্রেলিয়া সিরিজে উইকেট ছিল ব্যাটসম্যানদের জন্য বিভীষিকা। ব্যাটসম্যানদের দিকে বন্ধুদ্বের হাত বাড়ায় কম সময়ই।
বাংলাদেশ যদি যে কোনো মূল্যে কেবল জয়ই চায়, সেক্ষেত্রে ওই অস্ট্রেলিয়া সিরিজের মতো উইকেটই দেখা যাওয়ার কথা। তবে বিশ্বকাপের আগে এটিই শেষ সিরিজ। ব্যাটসম্যানদের প্রস্তুতি ও আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে নেওয়ার ভাবনাও থাকার কথা।
“ভালো উইকেটের আশা করছি আমি। আমরা জানি, ভালো ব্যাটিং উইকেটে ব্যাট করা ও ব্যাটিং লাইন-আপের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে নেওয়া কতটা গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি ম্যাচ জেতা ও জয়ের আত্মবিশ্বাস কতটা জরুরি, সেটাও জানি।”
“আমার ধারণা, মিরপুরের স্বাভাবিক ও ভালো উইকেটই পাওয়া যাবে এই সিরিজে, যেখানে ১৫০-১৬০ রান হবে ভালো স্কোর। এটাই হয়তো পরিস্থিতির দাবি এবং এই সিরিজটায় এমন কিছুর দিকেই তাকিয়ে থাকব আমরা।”
মিরপুরের উইকেট নিয়ে আগে থেকে করা ধারণা পরে উল্টে যাওয়ার নজির আছে অসংখ্য। এজন্যই হয়তো খোলা মন নিয়ে মাঠে নামতে চান অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ।
“উইকেট নিয়ে আমি সব সময় বলি যে, উইকেট অনুমান করা কঠিন। আমার মনে হয়, ইতিবাচক মানসিকতায় মাঠে নামা ভালো। আমরা ভালো উইকেট প্রত্যাশা করব। সেভাবেই ম্যাচে যাব। গিয়ে যেটা পাব, সেভাবেই আমাদের মানিয়ে নিতে হবে।”
“আমার মনে হয় ওই মাইন্ডসেট এখানে গুরুত্বপূর্ণ। আগে থেকেই ১২০-১৩০ রানের উইকেট ভেবে রাখলে নেতিবাচক মানসিকতা হয়। ইতিবাচক মানসিকতায় যাব যে এটা ভালো উইকেট হবে। আমাদের ব্যাটিং শক্তি আছে। ঠিকমতো খেলতে পারলে, আমরা ভালো স্কোর করব।”
নিউ জিল্যান্ড অবশ্য কঠিন ব্যাটিং পরীক্ষার মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। অস্ট্রেলিয়া সিরিজের মতো কিংবা আরও চ্যালেঞ্জিং উইকেট হলেও তারা চমকে যাবেন না, বলছেন অধিনায়ক টম ল্যাথাম।
“মাসখানেক আগে অস্ট্রেলিয়া যেরকম উইকেট পেয়েছে, আমরা সেরকম উইকেটের জন্যই অনেকটা প্রস্তুত। দেশে মাউন্ট মঙ্গানুই ও লিঙ্কনে খুব ভালো ক্যাম্প করে এসেছি আমরা। আমাদের প্রত্যাশার চেয়েও চ্যালেঞ্জিং উইকেটের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার চেষ্টা করেছি আমরা। এখানেও পাঁচ দিনে খুব ভালো অনুশীলন হয়েছে আমাদের। চেষ্টা করেছি এখানকার আবহাওয়া ও উইকেটের সঙ্গে যতটা সম্ভব মানিয়ে নিতে।”
“ম্যাচে উইকেট যেমনই থাকুক, মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। পাঁচ ম্যাচে আমরা জানি যে কোনো কোনো উইকেটে দুই-দিনটি ম্যাচও হবে। প্রতিটি ম্যাচের উইকেটে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে।”
শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে বিকেল চারটায় শুরু হবে ম্যাচ।