Published : 08 May 2024, 06:27 PM
টিকটকের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে যুক্তরাষ্ট্রে যে আইন পাস হয়েছিল, এবার সে আইনের বিরুদ্ধেই মামলা করেছে বাইটড্যান্স মালিকানাধীন কোম্পানিটি।
আদালতে জমা দেওয়া নথিতে, এই আইনকে টিকটক ও এর ১৭ কোটি মার্কিন ব্যবহারকারীর ‘বাক স্বাধীনতায় বড় আঘাত’ বলে আখ্যা দিয়েছে কোম্পানিটি।
কোম্পানি বলছে, যুক্তরাষ্ট্র শুধু ‘অনুমানমূলক ঝুঁকি’র কথা উল্লেখ করে এর পক্ষে সাফাই গাচ্ছে। পাশাপাশি, তারা আইনটি বাতিল করে দেওয়ার আহ্বানও জানায় আদালতকে।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার কথা উল্লেখ করে গত মাসে বিলটিকে আইনে পরিণত করার নথিতে স্বাক্ষর করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
এর আগে বেশ কয়েক বছর এ বিষয়ে ওয়াশিংটনে বিতর্ক চলেছে, যেখানে দাবি করা হয়, টিকটক চীনা মালিকানাধীন কোম্পানি হওয়ায় মার্কিন ব্যবহারকারীর ডেটা চীনের সরকারের হাতে যাওয়ার এমনকি সেগুলো ব্যবহার করে বিভিন্ন গুজব ছড়ানোর ঝুঁকিও রয়েছে।
এদিকে, টিকটক বরাবরই বলে আসছে, চীনা সরকারের সঙ্গে তাদের কোনও সম্পৃক্ততা নেই। আর এর মালিক কোম্পানি বাইটড্যান্স বলেছে, টিকটকের যুক্তরাষ্ট্র অংশের ব্যবসা বিক্রির কোনও পরিকল্পনা নেই তাদের।
অন্যদিকে, চীন সরকার আইনটির সমালোচনা করেছে বিদেশি কোম্পানির ওপর মার্কিন ‘গুণ্ডামি’ বলে। পাশাপাশি, কোম্পানি বিক্রির উদ্দেশ্যে নেওয়া যে কোনও পদক্ষেপের বিরোধিতা করার ইঙ্গিতও দিয়ে রেখেছে তারা।
মঙ্গলবার সংবাদকর্মীদের দেওয়া ব্রিফিংয়ে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কারিন জঁ-পিয়ে বলেন, আইনটি ‘নিষেধাজ্ঞা নয়, বরং অপসারণ’।
এদিকে, মার্কিন বিচার বিভাগ সম্পর্কে আরও তাকে প্রশ্ন করা হলেও তা নিয়ে বিবিসিকে মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।
মার্কিন আইনের আওতায়, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে বিভিন্ন অ্যাপ স্টোরে টিকটক নিষিদ্ধ হয়ে যাবে, যদি না এর মালিক কোম্পানি বাইটড্যান্স অ্যাপটির যুক্তরাষ্ট্র অংশের ব্যবসা অন্য কোথাও বিক্রি করে। এজন্য কোম্পানিটিকে ২৭০ দিনের সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। আর আলোচনায় অগ্রগতি হলে সে সময়সীমা আরও ৯০ দিন বাড়াতে পারেন বাইডেন।
মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের ‘ডিসি সার্কিট কোর্ট অফ আপিলস’-এর কাছে মামলায় টিকটক বলেছে, অ্যাপটি বিক্রির প্রয়োজনীয়তা ‘বাণিজ্যিক, প্রযুক্তিগত ও আইনগতভাবে একেবারেই সম্ভব নয়। এবং নিশ্চিতভাবে আইনের বেধে দেওয়া ২৭০ দিনের সময়সীমার মধ্যে তো নয়ই’।
টিকটক বলেছে, আইনটি তাদেরকে অন্যায়ভাবে একঘরে করে দিয়েছে। ফলে, মত প্রকাশের ক্ষেত্রে এমন এক দু-মুখো ব্যবস্থা সৃষ্টি হয়েছে, যেখানে একটি কোম্পানির জন্য এক ধরনের নিয়ম। আর বাকিদের জন্য আরেক ধরনের।
কোম্পানিটি আরও উল্লেখ করেছে, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও এর আগে একইরকম নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।