ফাইনালে ওঠার ম্যাচে ১৫ বলে অপরাজিত ৩৪ রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংস। আরও কয়েকটি ম্যাচে দলের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। এবারের বিপিএলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের সাফল্যে উল্লেখযোগ্য অবদান শামসুর রহমানের। অথচ এই ব্যাটসম্যানকে দলে নিতেই চাননি কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। অকপটে তা স্বীকার করে শামসুরকে দলে নেওয়ার কৃতিত্ব কোচ পুরোটাই দিলেন তামিম ইকবালকে।
Published : 07 Feb 2019, 06:16 PM
এবারের বিপিএলের নিলামে কোনো দলের আগ্রহ ছিল না শামসুরকে নিয়ে। গত মৌসুমে রংপুর রাইডার্সে থাকলেও খেলার সুযোগ পাননি। এবার নিলামে নেয়নি কোনো দল। পরে বিপিএল শুরুর কদিন আগে তাকে দলে নেয় কুমিল্লা। সেই শামসুরই এখন টুর্নামেন্টের অন্যতম আলোচিত পারফরমার!
খুব বড় ইনিংস এখনও খেলতে পারেননি শামসুর। তবে পরিস্থিতির দাবি দারুণ ভাবে মিটিয়ে কয়েকটি ম্যাচে খেলেছেন এমন ইনিংস, ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেওয়ায় যা রেখেছে বড় ভূমিকা। অন্তত পাঁচটি ম্যাচে দলের জয়ে তার ছিল সরাসরি অবদান। সব মিলিয়ে ২১০ রান করেছেন ৩৫ গড় ও ১৩৬.৩৬ স্ট্রাইক রেটে, তার ক্যারিয়ার গড় ও স্ট্রাইক রেটের চেয়ে অনেক বেশি।
শামসুরের পারফরম্যান্সের ওজন বেশি আরেকটি কারণেও। ব্যাটিং অর্ডারে কোনো থিতু জায়গা নেই তার। দলের প্রয়োজন অনুযায়ী খেলেছেন একেক ম্যাচে একেক পজিশনে। ঘরোয়া ক্রিকেটের অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান মিটিয়েছেন পজিশন ও পরিস্থিতির দাবি।
ফাইনালের আগে শামসুরের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা সালাউদ্দিনের কণ্ঠে। কুমিল্লা কোচ এই পারফরম্যান্সের কৃতিত্ব দিলেন শামসুরকেই। আর তাকে দলে নেওয়ার কৃতিত্ব দিলেন তামিমকে।
৩০ বছর বয়সী শামসুর স্মরণীয় কিছু মূহুর্ত উপহার দিয়েছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্টেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সেঞ্চুরি আছে তার। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩০৮ রান তাড়ায় খেলেছিলেন ৯৬ রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংস। তৃতীয় ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে করেছিলেন ৪৯ বলে ৬২। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করেছিলেন ফিফটি।
এমন শুরুর পরও তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার থমকে আছে ৬ টেস্ট, ১০ ওয়ানডে ও ৯টি টি-টোয়েন্টিতেই। দেশের হয়ে সবশেষ খেলেছেন সেই ২০১৪ সালের নভেম্বরে। বাংলাদেশের বাস্তবতায় এত লম্বা বিরতির পর আবার দলে ফেরা কঠিন, বিশেষ করে বয়স তিরিশ পেরিয়ে গেলে।
তবে সালাউদ্দিনের বিশ্বাস, এভাবে পারফর্ম করে গেলে শামসুরের সুযোগ আছে আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার।
“সে যদি ক্রিকেট নিয়ে আরেকটু সিরিয়াস হয়, তার এখনও সুযোগ আছে জাতীয় দলে ফিরে আসার। সে ফ্রি স্ট্রোক প্লেয়ার। সবচেয়ে বড় ব্যাপার, সে চাপ নিতে পারে। তাকে আমরা যে পজিশনেই খেলিয়েছি, সেখানেই সে সফল হয়েছে। সে কার্যকর একজন ক্রিকেটার। পরবর্তীতে সে কিভাবে এগোবে, সেটা তার ওপরই নির্ভর করবে।”