গত বছর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষেও শেষ ওভারে ১০ রানের সমীকরণে বাংলাদেশকে জিতিয়েছিলেন হাসান মাহমুদ, এবারও তাই তার ওপর ভরসা ছিল শেখ মেহেদি হাসানের।
Published : 16 Dec 2024, 01:16 PM
শেষ ওভারে যখন হাসান মাহমুদের হাতে বল, শেখ মেহেদি হাসানের তখন মনে পড়ছিল চেমসফোর্ডের ম্যাচটি। গত বছর সেই ওয়ানডেতে শেষ ওভারে আয়ারল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল ১০ রান। দারুণ বোলিংয়ে দলকে জিতিয়েছিলেন হাসান। এবার সেন্ট ভিনসেন্টেও শেষ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রয়োজন ছিল ১০ রান। হাসানের ওপর তাই সবটুকু ভরসাই ছিল মেহেদির। হাসান দলকে হাসিয়েছেন আবার।
টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের সাত রানের জয়ে ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করে ম্যান অব দা ম্যাচ শেখ মেহেদি। তবে শেষ ওভারে যদি হাসান গড়বড় করতেন, তাহলে বদলে যেতে পারত ম্যাচের ফল ও ম্যাচের সেরাও। বিধ্বংসী ইনিংস উপহার দেওয়া রভম্যান পাওয়েল তখনও ছিলেন ক্রিজে।
কিন্তু শেষ ওভারে ‘ডেথ’ বোলিংয়ের দুর্দান্ত প্রদর্শনী মেলে ধরেন হাসান। বিশেষ করে, পাওয়েলের জন্য যে পরিকল্পনা ছিল, সেটা দারুণভাবে বাস্তবায়ন করেন তিনি।
শেষ ওভারের প্রথম বলে এক রান নেন আলজারি জোসেফ। স্ট্রাইক পান পাওয়েল। এবার নিখুঁত এখন ওয়াইড ইয়র্কার করেন হাসান। ব্যাটেই লাগাতে পারেননি পাওয়েল। পরের বলটি আবার অফ স্টাম্পের বেশ বাইরে ফুল লেংথ করেন হাসান। মরিয়া পাওয়েল ব্যাট চালিয়ে দেন। ব্যাটের কানায় লেগে বল যায় কিপারের গ্লাভসে। এক বল পর জোসেফকেও বোল্ড করে ম্যাচ শেষ করে দেন হাসান।
আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে সেই ম্যাচেও শেষ ওভারে জোড়া শিকার ধরেছিলেন হাসান। বাংলাদেশ জিতেছিল ৫ রানে। এবারের জয়ের পর সেই ম্যাচের কথা মনে করিয়ে দিলেন শেখ মেহেদি।
“হাসান আবারও প্রমাণ করেছে। আমার মনে আছে, আয়ারল্যান্ড সিরিজে হাসান ডেথ ওভারে একটি ম্যাচ জিতিয়েছিল। ওই অনুভূতি আমার চলে আসছিল যে হাসান পারবে। হাসানের বিশ্বাস ছিল কি না, জানি না। আমার নিজের ভেতর বিশ্বাসটা ছিল যে, হাসান হয়তো বা ম্যাচটা শেষ করবে। হাসান শেষ ওভারে অসাধারণ বোলিং করেছে।”
হাসান যেমন শেষটা দারুণ করেছেন, তেমনি শুরুতে ক্যারিবিয়ানদের চেপে ধরেছেন শেখ মেহেদি। চার ওভারের দুর্দানত স্পেলে ১৩ রানে চার উইকেট শিকার করে প্রতিপক্ষকে প্রবল চাপে ফেলে দেন তিনি।
টি-টোয়েন্টিতে তার ১৫৯ ম্যাচের ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং এটি। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে চার উইকেটের স্বাদ পেলেন তিনি প্রথমবার।
চার উইকেটের আগে ব্যাট হাতেও অপরাজিত ২৬ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। ম্যাচের পর এই অলরাউন্ডার বললেন, নিজের প্রক্রিয়ায় থেকেই সফল তিনি।
“নতুন বলে আমি সবসময়ই বোলিং করি। সাধারণত যেভাবে বল করি, সেই প্রক্রিয়াটায় ছিলাম এবং ওদের ডানহাতি ব্যাটসম্যান ছিল, তবে আমার পরিকল্পনা ছিল যাতে ওদেরকে এই উইকেটে আরামে ও সহজে শট খেলতে না দেই। ওরা তো আসলে অনেক শক্তিশালী। ওভাবেই পরিকল্পনা করে বল করেছি।”
জয় দিয়ে শুরুর পর এখন সিরিজ জয়ের আশাবাদ মেহেদির কণ্ঠে।
“টেস্ট সিরিজে আমরা জয় দিয়ে শুরু করেছিলাম। ওয়ানডে ভালো শুরু করেও ধরে রাখতে পারিনি। বিজয়ের মাসে টি-টোয়েন্টিতে শুরুটা ভালো হলো। সামনে আরও দুটি ম্যাচ আছে। সিরিজ জেতার জন্য যা কিছু করতে হবে, প্রস্তুত আছে সবাই।”
সিরিজের পরের ম্যাচ বুধবার বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টায়।