৬০০ বলের ম্যাচ শেষ ২১২ বলেই, মিরপুর ইতিহাস গড়া রান উৎসবের পরদিনই ফিরে এলো ব্যাটসম্যানদের দুঃস্বপ্নের দিন।
Published : 10 Mar 2025, 01:44 PM
দশম ওভারের তৃতীয় বল উড়িয়ে মারলেন তানজিদ হাসান। লং অফ দিয়ে বল সীমানার ওপারে যেতেই হাত মেলালেন দুই ব্যাটসম্যান, এগিয়ে এলেন ফিল্ডাররাও। একসঙ্গে মাঠ ছেড়ে গেলেন সবাই। অথচ ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে এ দিনের অন্য দুই ম্যাচে তখনও প্রথম ইনিংসই শেষ হয়নি!
মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সোমবার এক দিনের ম্যাচকে যেন টি-টোয়েন্টিই বানিয়ে ফেলল লেজেন্ডস অব রুপগঞ্জ। তাই তো সকালে শুরু ম্যাচের ফয়সালা হয়ে গেল দুপুর গড়াতেই।
এই মাঠেই আগের দিন ৪২২ রান তুলে ইতিহাস গড়েছিল প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। দেশের ক্রিকেট দেখেছিল লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে প্রথম চারশ রানের স্কোর। পরদিনই সেখানে দুঃস্বপ্নের ঘোরে পড়ল শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব।
শাইনপুকুরকে মাত্র ৬৯ রানে গুঁড়িয়ে কোনো উইকেট না হারিয়েই জিতে যায় জাতীয় দল ও আশপাশের একঝাঁক তারকা ক্রিকেটার নিয়ে গড়া রুপগঞ্জ।
সবমিলিয়ে ম্যাচে খেলা হয়েছে মোটে ২১২ বল। রান তাড়ায় ২৪৩ বল বাকি থাকতে ম্যাচ জিতে গেছে আকবর আলির নেতৃত্বাধীন দল।
প্রিমিয়ার লিগের লিস্ট ‘এ’ যুগে এর চেয়ে বেশি বল বাকি রেখে জয়ের নজির আছে তিনটি। গত বছর গাজী টায়ার্স ক্রিকেট একাডেমিকে ৪০ রানে অলআউট করে ২৬২ বল বাকি রেখে জিতে গিয়েছিল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। দেশের লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটেরও রেকর্ড এটি।
এবারের লিগে নিজেদের প্রথম ম্যাচেও গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সকে ৯৩ রানে গুটিয়ে দিয়ে ১০ উইকেটে জিতেছিল রুপগঞ্জ। মাঝে ধানমন্ডি স্পোর্টস ক্লাবের কাছে হেরে যায় তারা।
জয়ে ফেরার ম্যাচে টস জিতে শাইনপুকুরকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় রুপগঞ্জ। ধীরেসুস্থে শুরু করে প্রথম ৮ ওভারে কোনো উইকেট পড়তে দেননি মইনুল ইসলাম ও নিয়ন জামান।
নবম ওভারে আক্রমণে এসে উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন শেখ মেহেদি হাসান। এরপর বাঁহাতি স্পিনে উইকেট শিকারে যোগ দেন তানভির ইসলাম।
দুজনের ঘূর্ণিতে মাত্র ১২ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে শাইনপুকুর। সেখান থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি তারা। দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে তাদের লেজ মুড়িয়ে দেন রেজাউর রহমান রাজা।
দুই ওপেনার ছাড়া শাইনপুকুরের হয়ে দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেন শুধু দশ নম্বরে নামা আল ফাহাদ।
৩টি করে উইকেট নেন তানভির ও রাজা। মেহেদির ঝুলিতে জমা পড়ে ২ উইকেট।
ছোট লক্ষ্যে ম্যাচ শেষ করতে বেশি সময় নেননি তানজিদ ও সাইফ হাসান। অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ৫৭ বলে ৭৫ রান নিয়ে মাঠ ছাড়েন তারা।
৪ চার ও ২ ছক্কায় ৩৭ বলে ৩৯ রান করেন সাইফ। তানজিদের ব্যাট থেকে আসে ৪ চার ও ১ ছক্কায় ২০ বলে ৩৫ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব: ২৫.৫ ওভারে ৬৯ (মইনুল ১৮, নিয়ন ১৪, অনিক ২, রহিম ৫, রাফসান ০, ফারজান ১০, শরিফুল ৪, জুবায়ের ২, আলি ১, ফাহাদ ১০, আনোয়ার ১*; শরিফুল ৪-০-৯-০, রাজা ৬.৫-০-২৮-৩, তানভির ৭-১-১৫-৩, মেহেদি ৬-১-১৪-২, সাইফ ২-০-৩-১)
লেজেন্ডস অব রুপগঞ্জ: ৯.৩ ওভারে ৭৫/০ (ফাহাদ ৪-০-৩২-০, আলি ৩-০-১৬-০, আনোয়ার ১.৩-০-১৮-০, রহিম ১-০-৮-০)
ফল: লেজেন্ডস অব রুপগঞ্জ ১০ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: তানভির ইসলাম