এনসিএল টি-টোয়েন্টি
এনসিএল টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের প্রদর্শনীতে ৪ চার ও ১০ ছক্কায় ৫৩ বলে ১০০ রানের ইনিংস খেললেন জিসান আলম।
Published : 11 Dec 2024, 12:04 PM
ইনিংসের শুরুতে নিজেকে কিছুটা গুটিয়েই রাখলেন জিসান আলম। তবে পঞ্চাশ ছোঁয়ার পর অফ স্পিনার আরাফাত সানিকে বোলিংয়ে দেখেই যেন চোখ চকচক করে উঠল তার। প্রথম বলে দুই রান নেওয়ার পর বাকি পাঁচ ডেলিভারিতে বল আর মাঠেই রাখলেন না তরুণ ওপেনার। পাঁচটিই ছক্কা! পরের তিন বলে আরও দুটি ছক্কায় চোখের পলকে তিনি পৌঁছে গেলেন সেঞ্চুরির কাছে।
পরে নাজমুল ইসলামের ফুল লেংথ ডেলিভারি লং অফের দিকে ঠেলে রানের জন্য ছুটলেন। মাঝ ক্রিজে পৌঁছতেই বাতাসে হাত ঘুরিয়ে গর্জন করে উঠলেন তিনি। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির উদযাপন করলেন দুই হাত ছড়িয়ে আকাশপানে তাকিয়ে। হেলমেট খুলে ব্যাট উঁচিয়ে জবাব দিলেন অভিবাদনের।
জাতীয় ক্রিকেট লিগ (এনসিএল) টি-টোয়েন্টির উদ্বোধনী দিনেই বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের প্রদর্শনী মেলে ধরলেন সিলেটের হয়ে খেলতে নামা নারায়ণগঞ্জের তরুণ। ৪টি চারের সঙ্গে ১০টি ছক্কায় মাত্র ৫৩ বলে ১০০ রানের ইনিংস উপহার দিলেন তিনি।
নিজের ক্যারিয়ারে তো বটেই, নতুন করে শুরু হওয়া ঘরোয়া ক্রিকেটের এই টুর্নামেন্টের প্রথম শতরানও তারই।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বুধবার সকালে ঢাকার বিপক্ষে এই ইনিংস খেলেন জিসান। জাতীয় লিগের চার দিনের সংস্করণে ঢাকার হয়েই প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল তার। এবার দল বদলে যাওয়ার পর ঢাকার বোলারদের তিনি উপহার দিলেন তিক্ত অভিজ্ঞতা।
টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের আগের দুই ম্যাচে জিসানের রান ছিল ১৫। এ দিন টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে জিসানের শুরুটা তেমন স্বাচ্ছন্দ্যময় ছিল না। সিলেটের ইনিংসের মাঝ পথে ২৭ বলে ২৬ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি।
এরপর তোলেন ঝড়। পরের ১২ বলে ২৪ রান নিয়ে তিনি ৩৯ বলে পৌঁছে যান ক্যারিয়ারের প্রথম পঞ্চাশে। সেখান থেকে একশ ছুঁতে তার লাগে আর মাত্র ১৩ বল।
১৪তম ওভারে প্রথম আক্রমণে আসেন আরাফাত। প্রথম বলে ২ রান নেন জিসান। পরের তিন বলে লং অন, লং অফ ও লং অন দিয়ে ছক্কা মারেন তিনি। রাউন্ড দা উইকেট থেকে ওভার দা উইকেটে ফেরেন আরাফাত। কিন্তু কাজ হয়নি তাতে। পরপর দুটি ফুল টস পেয়ে ডিপ মিড উইকেট ও ডিপ এক্সট্রা কভার দিয়ে ছক্কায় ওড়ান জিসান।
পরে সুমন খানের প্রথম দুই বলের ঠিকানাও অভিন্ন। লং অন দিয়ে প্রথম ছক্কার পর দ্বিতীয়টি জিসান ওড়ান ডিপ কভার সীমানায়। ওই ওভারে ৯৯ রানে পৌঁছে যান ২০ বছর বয়সী ওপেনার। পরের ওভারে নাজমুলের বলে কাঙ্ক্ষিত সেই মুহূর্ত।
৫২ বলে সেঞ্চুরি ছোঁয়ার পর আর টিকতে পারেননি জিসান। নাজমুলের ইয়র্কারে বোল্ড হয়ে ড্রেসিং রুমের পথ ধরেন।
বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে টি-টোয়েন্টিতে পঞ্চম দ্রুততম শতরান এটি। ৪২ বলে সেঞ্চুরির রেকর্ড পারভেজ হোসেন ইমনের।
জিসানের ১০ ছক্বার চেয়ে দেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে এক ইনিংসে বেশি আছে কেবল তামিম ইকবাল ও নাজমুল হোসেন শান্তর (১১টি করে)।
বিধ্বংসী ইনিংসের পথে অমিত হাসানের সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে ৫৮ বলে ৯৫ রানের জুটি গড়েন জিসান। যেখানে অমিতের অবদান ২৫ বলে ২৬ রান।
শেষ দিকে মাহফুজুর রহমান রাব্বি ৪ চার ও ১ ছক্কায় ১৭ বলে ৩০ রানের ক্যামিও ইনিংস খেললে ৪ উইকেটে ২০৫ রানে থামে সিলেট।