৮ ইনিংসে ৫ সেঞ্চুরির সঙ্গে ৮৮ রানের ইনিংস, ৩৮৯.৫০ গড়ে মোট ৭৭৯ রান করে কারুন নায়ার শেষ করলেন টুর্নামেন্ট।
Published : 19 Jan 2025, 10:32 AM
কোনো ব্যাটসম্যান ২৭ রানে আউট হতেই পারেন। সেটি আলাদা করে উল্লেখযোগ্য হওয়ার কথা নয়। কিন্তু কারুন নায়ারের ব্যাটে এমনই রানের সুনামি ছুটেছিল যে, তার আউট হওয়াও এখন বড় খবর। ভিজায় হাজারে ট্রফিতে অপ্রতিরোধ্য পথচলায় ছুটতে থাকা ভারতীয় ব্যাটসম্যান ফাইনালে আউট হয়েছেন ২৭ রানে।
ভারতের ৫০ ওভারের ম্যাচের টুর্নামেন্ট ভিজায় হাজারে ট্রফির ফাইনালে শনিবার কারুনের সাবেক দল কর্নাটকার কাছে ৩৬ রানে হেরেছে তার বর্তমান দল বিদার্ভা।
ফাইনালের আগে ৭ ইনিংসে ৫ সেঞ্চুরি ও ১টি ফিফটিতে কারুনের রান ছিল ৭৫২। স্রেফ একটি ইনিংসে আউট হওয়ায় তার গড়ও ছিল ৭৫২। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে আউট না হয়ে টানা সবচেয়ে বেশি রানের বিশ্বরেকর্ডও তিনি গড়ে ফেলেন এই পরিক্রমায়।
ভাদোদরায় শনিবার দিন-রাতের ফাইনাল ম্যাচে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা কর্নাটকা ৫০ ওভারে তোলে ৩৪৮ রান। কারুনের মতোই অসাধারণ টুর্নামেন্ট কাটানো মায়াঙ্ক আগারওয়াল ফাইনালে করতে পারেন কেবল ৩২ রান। ৬৭ রানে ৩ উইকেট হারানো দলকে এগিয়ে নেয় রাভিচান্দ্রান স্মারানের সেঞ্চুরি। পাঁচে নেমে ৯২ বলে ১০১ রানের ইনিংস খেলেন ২১ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান।
এছাড়াও কৃষ্ণান শ্রিজিত করেন ৭৪ বলে ৭৮, সাতে নেমে অভিনাভ মানোহার করেন ৪২ বলে ৭৯।
শেষ ১০ ওভারে ১০৪ রান তোলে তারা।
রান তাড়ায় বিদার্ভার ওপেনার ধ্রুব শোরে খেলেন ১১১ বলে ১১০ রানের ইনিংস। তিনি টুর্নামেন্ট শেষ করলেন টানা তিন সেঞ্চুরিতে।
টপ ও মিডল অর্ডারে অন্য সবাই রানের দেখা পেলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি কেউ। তিনে নামা কারুন ২৭ রান করে বোল্ড হন ভারতের টেস্ট পেসার প্রাসিধ কৃষ্ণার বলে।
পরে জিতেশ শার্মা ফেরেন ৩৪ রানে। আটে নেমে হার্শ দুবে ৫টি করে চার ও ছক্কায় ৩০ বলে ৬৩ রান করে ম্যাচ একটু জমিয়ে তোলেন। তবে শেষ পর্যন্ত পারেনি বিদার্ভা।
পঞ্চমবার ভিজায় হাজারে ট্রফি জয় করে কর্নাটকা।
কারুন এই টুর্নামেন্ট শুরু করেন জাম্মু ও কাশ্মীরের বিপক্ষে ১০৮ বলে ১১২ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে। পরের ম্যাচে দলের লক্ষ্য মাত্র ৮১। সেখানে তিনি অপরাজিত থাকেন ৪৪ রানে।
পরের ম্যাচে খেলেন লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংস, ১০৭ বলে অপরাজিত ১৬৩। সেই ধারা ধরে রাখেন পরের ম্যাচে ১০৩ বলে অপরাজিত ১১১ করে।
টুর্নামেন্টে প্রথম আউট হন তিনি উত্তর প্রদেশের বিপক্ষে। সেদিন জয়ের কাছে গিয়ে ফিরে যান ১০১ বলে ১১২ রান করে।
এরপর মিজোরামের বিপক্ষে ৭৩ রান তাড়ায় তাকে ব্যাটিংয়ে নামতে হয়নি। পরের ম্যাচে আবার অফরাজিত থাকেন ৮২ বলে ১২২ রান করে।
সেমি-ফাইনালে তিনি ব্যাটিংয়ে নামার সুযোগ পান ৩৫তম ওভারে। সেখান থেকে সেঞ্চুরি করতে না পারলেও বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে অপরাজিত থাকেন ৬৪ বলে ৮৮ রান করে।
ফাইনালে তার সেসবের পুনরাবৃত্তি করতে পারলেন না। টুর্নামেন্টে তার ব্যাটিং গড় ৭৫২ থেকে নেমে হয়ে গেল ৩৮৯.৫০।
১২৪.০১ স্ট্রাইক রেটে ৭৭৯ রান করে ম্যান অব দা টুর্নামেন্ট তিনিই।
অনেক দিন ধরে ভারতীয় দলের বাইরে থাকা আরেক ব্যাটসম্যান মায়াঙ্ক আগারওয়ালও দুর্দান্ত খেলেছেন এই আসরে। ১০ ইনিংসে ৪ সেঞ্চুরিতে ৬৫১ রান করেছেন তিনি ৯০ গড় ও ১০৭.৬০ স্ট্রাইক রেটে। তার পরও তিনি আড়ালে পড়ে গেছেন, এতটাই অতিমানবীয় ছিল কারুনের পারফরম্যান্স।
তাকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ভারতীয় দলে নেওয়ার দাবিও উঠেছিল চারপাশ থেকে। যদিও দলে শেষ পর্যন্ত জায়গা হয়নি ৩৩ বছর বয়সী ব্যাটসম্যানের। তবে তাকে নিয়ে জোর আলোচনা হয়েছে, দল ঘোষণার সময় জানান প্রধান নির্বাচক আজিত আগারকার।