নিলামে অবিক্রিত থাকার পর কাউন্টি ক্রিকেট খেলতে ইংল্যান্ড যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন শার্দুল ঠাকুর, পরে চোট পাওয়া একজনর বদলে দল পেয়ে এখন তিনিই আইপিএলের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি।
Published : 28 Mar 2025, 12:51 PM
আইপিএলের নিলামে এবার অবিক্রিত ছিলেন শার্দুল ঠাকুর। ফাঁকা সময়টায় কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে খেলতে এসেক্সের সঙ্গে চুক্তি করে ফেলেছিলেন তিনি। সেই প্রস্তুতিই নিচ্ছিলেন। হঠাৎ করেই ডাক এলো আইপিএলের। বদলি হিসেবে যোগ দিলেন লাক্ষ্নৌ সুপার জায়ান্টসে। প্রথম ম্যাচ থেকে একাদশেও জায়গা করে নিলেন। দুই ম্যাচ শেষে এই পেসারই এখন আইপিএলের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি। তার মাথায় এখন ‘পার্পল ক্যাপ।’
দুই ম্যাচ দিয়েই যদিও সাফল্য-ব্যর্থতার বিচার করা বা সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির মানদণ্ড ঠিক করা কঠিন। তবে মৌসুমের শুরুটা তিনি করেছেন দুর্দান্ত। বিশেষ করে, বদলি হিসেবে দল পেয়ে এমন সাফল্য এই ৩৩ বছর বয়সে তাকে তুলে ধরছে নতুন করে।
আইপিএলের গত ৯টি আসরে ৫টি ভিন্ন দলে খেলেছেন শার্দুল। তবে গত দুটি আসর তিনি ভালো করতে পারেননি প্রত্যাশামতো। এবার নিলামে তাকে নেয়নি কোনো দল।
এবার রাঞ্জি ট্রফিতে অবশ্য দারুণ ফর্মে ছিলেন তিনি। মুম্বাইয়ের হয়ে শিকার করেন ৩৫ উইকেট। আইপিএলের সুযোগটি এসে যায় এরপরই। চোটের কারণে বাঁহাতি পেসার মহসিন খান ছিটকে পড়ায় বদলি হিসেবে শার্দুলকে দলে নেয় লাক্ষ্নৌ সুপার সুপার জায়ান্টস (এলএসজি)।
আইপিএল শুরুর দিন তাকে দলে নেওয়ার খবর জানানো হয় আনুষ্ঠানিকভাবে। শেষ সময়ে দল পেলেও প্রথম ম্যাচ থেকেই একাদশে জায়গা করে নেন তিনি। প্রথম ম্যাচে উইকেট শিকার করেন দুটি। দ্বিতীয় ম্যাচে বৃহস্পতিবার সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিপক্ষে দলের জয়ে চার উইকেট নিয়ে ম্যাচ-সেরা তিনি।
সর্বোচ্চ উইকেট শিকারের ‘পার্পল ক্যাপ’ মাথায় তুলে শার্দুল বললেন, নিলামে দল না পেয়ে হতাশ হলেও তিনি বাস্তবতা অনুধাবন করছিলেন। বদলি হিসেবে অন্য ফ্র্যাঞ্চাইজি থেকেও ডাক পাওয়ার কথাও জানালেন।
“দেখুন, আমার মনে হয়, এই ধরনের ব্যাপারগুলি ক্রিকেটে হতেই থাকে। নিলামে স্রেফ একটি বাজে দিন ছিল, কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি আমাকে নেয়নি। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে কয়েকটি চোটের ঘটনা ঘটে নানা দলে, কয়েক জায়গা থেকেই বলা হয়েছে আমি তাদের ক্যাম্পে যোগ দিতে পারি কি না। তবে এলএসজি আমাকে সবার আগে প্রস্তাব দিয়েছিল, তাদেরকে প্রাধান্য দিতেই হতো।”
“জাহির খানের (লাক্ষ্নৌর মেন্টর) সঙ্গে আগেও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছি। তিনি আমাকে ফোন করেছিলেন। এরকম হওয়ার সম্ভাবনা সবসময়ই ছিল। আমাকে গ্রহণ করতেই হতো। আমি সবসময়ই বলে থাকি, স্কিল আছে, প্রতিভা আছে… ব্যাপারটি স্রেফ ফর্ম ও বাজে দিনের… ক্রিকেটে এসবের মধ্য দিয়ে যেতেই হয়।”
কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে সাতটি ম্যাচ খেলার কথা ছিল শার্দুলের। তার প্রস্ততিপর্ব ছিল লাল বল ঘিরে। পরে লাক্ষ্নৌর মেন্টর ও সাবেক ভারতীয় পেসার জাহিরের ফোন পাওয়ার পর থেকেই আইপিএলের মানসিকতায় ঢুকে যান তিনি।
“আমরা যখন রাঞ্জি ট্রফি নকআউট খেলছিলাম, তখন জাহির খান ফোন করে বলেছিলেন যে আমাকে সম্ভাব্য পরিবর্ত হিসেবে দেখা হচ্ছে। তিনি বলেছিলেন, সবকিছুর বাইরে চলে না যেতে এবং পরিকল্পনা প্রস্তুত রাখতে। এটাও বলেছিলেন যে, পরিবর্তন হিসেবে দলে সুযোগ পেলে একাদশেও জায়গা পেতে পারি। ওই দিন থেকেই আইপিএলের মানসিকতায় ঢুকে যাই এবং আশা ফিরতে শুরু করে।”