জ্বর পুরোপুরি কমলে শ্রীলঙ্কায় পাঠানো হবে লিটনকে, লন্ডনে বিশেষজ্ঞ মতামতের ওপর নির্ভর করবে ইবাদতের বিশ্বকাপ খেলার সম্ভাবনা।
Published : 28 Aug 2023, 04:14 PM
এশিয়া কাপ খেলতে যাওয়ার অপেক্ষা বাড়ল লিটন দাসের। জ্বর পুরোপুরি না কমায় এখনও তিনি রওনা দিতে পারেননি শ্রীলঙ্কায়। তবে প্রথমবার জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া তানজিম হাসান উড়াল দিয়েছেন শ্রীলঙ্কার পথে। একই দিন চিকিৎসার জন্য লন্ডনের পথে আছেন ইবাদত হোসেন চৌধুরি।
এশিয়া কাপে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ শ্রীলঙ্কায়। এশিয়ান শ্রেষ্ঠত্বের আসরে অংশ নিতে রোববার দুপুরে ঢাকা ছেড়ে যায় বাংলাদেশ দল। অসুস্থতার কারণে দলের সঙ্গে যেতে পারেননি লিটন। ইবাদত ছিটকে যাওয়ায় দলে ডাক পাওয়া পেসার তানজিমও ছিলেন না সেই বহরে।
সোমবার দুপুরের ফ্লাইটে চলে গেছেন তানজিম। সুস্থ হয়ে উঠলে একইসঙ্গে যেতেন লিটনও। কিন্তু তা হয়ে ওঠেনি। বিসিবির প্রধান চিকিৎসক দেবাশিষ চৌধুরি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানালেন, লিটনকে নিয়ে অপেক্ষা চলছেই।
“লিটন দাসের জ্বর বাড়েনি। বরং আগের চেয়ে একটু কমেছে। তবে এখনই সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে না, কবে নাগাদ যেতে পারবে (শ্রীলঙ্কায়)। ওষুধ দিলে তো জ্বর কমে। তবে ওষুধ ছাড়া কমতে হবে। আমরা আপাতত সেটারই অপেক্ষা করছি। আজকের দিনটা দেখি।”
এশিয়া কাপের এবারের আসর শুরু হচ্ছে বুধবার। পরের দিন শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। সময় তাই খুবই কম। এর মধ্যে লিটন সুস্থ না হলে বাংলাদেশের স্কোয়াডে ওপেনার থাকবেন স্রেফ দুজন- মোহাম্মদ নাঈম শেখ ও তানজিদ হাসান। সেক্ষেত্রে প্রয়োজন পড়তে পারে বিকল্প ওপেনারের।
তবে আপাতত এমন কিছু নিয়ে ভাবছে না বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট। নির্বাচক হাবিবুল বাশার জানালেন, এখনই কোনো বিকল্প ওপেনার পাঠানোর পরিকল্পনা নেই তাদের।
হাঁটুর চোটের চিকিৎসার জন্য বিশেষজ্ঞ পরামর্শ নিতে সোমবার ভোরে লন্ডনের উদ্দেশে উড়াল দিয়েছেন ইবাদত। বিসিবির প্রধান চিকিৎসক দেবাশিষ চৌধুরি জানালেন, আপাতত বিশেষজ্ঞের মতামতের অপেক্ষায় তারা।
“লন্ডনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলবে ইবাদত। ওখানে ৩০ তারিখের (বুধবার) অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেওয়া আছে। আগে পরামর্শ করুক। তাদের মতামত শুনে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
“(যদি সার্জারির প্রয়োজন হয়) আমরা সব কিছুর জন্যই প্রস্তুত আছি। ওদের (লন্ডনের চিকিৎসকদের) সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কথা হবে। দেশে (ইবাদতকে) দেখার পর আমরা একটা মতামত দিয়েছি। ওদেরটাও শুনব। তারপর সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
গত মাসে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বোলিং করার সময় আম্পায়ারের সঙ্গে কনুইয়ের ধাক্কায় ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে যান ইবাদত। ওই চোটে ম্যাচ থেকে তো বটেই, সিরিজ থেকেও ছিটকে যান ২৯ বছর বয়সী পেসার।
এরপর পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় থাকায় জাতীয় দলের ফিটনেস ক্যাম্পে থাকতে পারেননি ইবাদত। তবে দ্রুত সুস্থতার আশায় তাকে এশিয়া কাপের স্কোয়াডে নেন নির্বাচকরা। দলের সঙ্গে অনুশীলনও করছিলেন তিনি। কিন্তু আশানুরূপ উন্নতি হয়নি তার চোটের।
কয়েক দফা স্ক্যান রিপোর্টের পর তাকে এশিয়া কাপ থেকে বাইরে রাখার পরামর্শ দেয় বিসিবির চিকিৎসা বিভাগ।
এসিএল চোট মানে সবসময়ই থাকে বড় দুর্ভাবনার জায়গা। অনেক সময় প্রয়োজন পড়ে অস্ত্রোপচারের। যদি শেষ পর্যন্ত অস্ত্রোপচার করাতেই হয়, তাহলে ছয় থেকে আট সপ্তাহের জন্য মাঠের বাইরে থাকতে হবে ইবাদতকে। ভেস্তে যাবে তার বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন। বাংলাদেশ দলের জন্যও তা হবে বড় এক ধাক্কা।
দল সংশ্লিষ্টরা অবশ্য এখনই তাকে পাওয়ার আশা ছাড়ছেন না। লন্ডনের বিশেষজ্ঞের মতামত জানার অপেক্ষায় আছেন সবাই, জানালেন নির্বাচক হাবিবুল বাশার।
“এসিএল চোটের ক্ষেত্রে সার্জারির প্রয়োজন হলে তো লম্বা সময় মাঠের বাইরে থাকতে হবে। সেক্ষেত্রে ইবাদতকে নিশ্চিতভাবেই বিশ্বকাপে পাব না আমরা। তবে সার্জারি না লাগলে কিন্তু বিশ্বকাপ খেলতে পারবে। আমরা সেটারই অপেক্ষা করছি। এখন লন্ডনে গেছে পরামর্শ নিতে। সেখান থেকে সিদ্ধান্ত আসুক।”
এশিয়া কাপের দল ঘোষণার আগে মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ৩২ জন ক্রিকেটারকে নিয়ে হয়েছে ফিটনেস ক্যাম্প। সেই তালিকা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেনি বিসিবি। হাবিবুল জানালেন, প্রয়োজন পড়লে ৩২ জনের ওই দল থেকেই বিকল্প বেছে নেবেন তারা।
“সার্জারি করাতে হলে, অর্থাৎ বিশ্বকাপে ইবাদতকে না পাওয়া গেলে বিকল্প নিয়ে ভাবতে হবে আমাদের। আমরা এরই মধ্যে ৩২ জনের একটা পুল তো তৈরি করেছি। সেখান থেকে টিম ম্যানেজমেন্টের আলোচনার পর সিদ্ধান্ত হবে, তার জায়গায় কাকে নেওয়া যায়। এখনই কিছু বলার সুযোগ নেই।”