উপাচার্য বলেন, “আমরা তো নোটিস দিয়েছি হল ছাড়ার জন্য। কিন্তু ছাত্রীদের প্রতিবাদের মুখে ও দাবির প্রেক্ষিতে প্রভোস্ট অনুমতি দিতে বাধ্য হয়েছেন।”
Published : 17 Jul 2024, 05:18 PM
বিকালের মধ্যে ছাত্রীদের হল ছাড়ার নির্দেশ থাকলেও প্রাধ্যক্ষকে অফিস কক্ষে তালাবন্ধ করে রেখে শেষ পর্যন্ত হলে থাকার অনুমতি আদায় করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সাদেকা হালিম বুধবার বিকালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা তো নোটিস দিয়েছি হল ছাড়ার জন্য। কিন্তু ছাত্রীদের প্রতিবাদের মুখে ও দাবির প্রেক্ষিতে প্রভোস্ট অনুমতি দিতে বাধ্য হয়েছেন।”
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার পর ইউজিসির সিদ্ধান্ত মেনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বুধবার সকালে সব ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে। সেই সঙ্গে একমাত্র ছাত্রী হল বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের বিকাল ৪টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
বুধবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের কনফারেন্স রুমে এক জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
এরপর হল না ছাড়ার দাবি নিয়ে দুপুর সোয়া ২টার দিকে প্রাধ্যক্ষের অফিস রুমের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন আবাসিক ছাত্রীরা। হলে থাকার দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন তারা।
ওই সময় ছাত্রীদের তোপের মুখে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক দীপিকা রানী সরকার মৌখিকভাবে বলেন, “যারা হলে থাকতে চায় তারা থাকতে পারবে, আর যারা চলে যেতে চায় তারা চলেও যেতে পারবে।”
প্রাধ্যাক্ষের মৌখিক সিদ্ধান্ত মানা হবে না জানিয়ে ছাত্রীরা প্রশাসনের হল ছাড়ার নির্দেশনা প্রত্যাহার করে লিখিত বিজ্ঞপ্তি দাবি করে।
কিন্তু অধ্যাপক দীপিকা রানী লিখিত বিজ্ঞপ্তি দিতে সম্মত না হলে ছাত্রীরা একত্রিত হয়ে প্রাধ্যক্ষ এবং কয়েকজন হাউস টিউটরকে অফিস রুমের ভেতরে রেখে দরজায় তালা ঝুলিয়ে দেয়।
এরপর বিকাল পৌনে ৪টার দিকে প্রাধ্যক্ষ ছাত্রীদের হলে থাকার অনুমতি দিয়ে লিখিত বিজ্ঞপ্তি দেন।
সেখানে বলা হয়, “জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের আবাসিক ছাত্রীদের সকল দাবি মেনে নিয়ে তাদের হলে অবস্থানের পূর্ণ অনুমতি দেওয়া হল। পাশাপাশি গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ, লিফট, ইন্টারনেট ক্যান্টিনসহ পূর্বের ন্যায় নিরাপত্তা অব্যাহত থাকবে।”
লিখিত বিজ্ঞপ্তি পাওয়ার পরপরই ছাত্রীরা তালা খুলে শিক্ষকদের মুক্ত করে দেন।
এ ঘটনায় উপাচার্যের অধ্যাপক সাদেকা হলিমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “হলের সর্বশেষ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী এখন তারা থাকতে চাইলে থাকতে পারে।”
আবাসিক ছাত্রী জয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা হলে থাকব কি-না সেই সিদ্ধান্ত আমরা নিজেরা নেব। প্রশাসন আমাদের ব্যাপারে অন্যায় সিদ্ধান্ত কেন নেবে? আমরা হলেই অবস্থান করব। আমাদের নিরাপত্তা প্রশাসনকেই নিশ্চিত করতে হবে।”
এ বিষয়ে কথা বলতে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক দীপিকা রানী সরকারকে ফোন করা হলে তিনি কেটে দেন।