“আমি মনে করি আলু ও দেশি পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির জন্য দেশের বড় বড় ব্যবসায়ীরা দায়ী,” অভিযোগ শ্যাম বাজার কৃষি পণ্য আড়ত ও বণিক সমিতির সভাপতি মো. সাইদের।
Published : 03 Nov 2023, 12:14 AM
ঊর্ধ্বমুখী সবজির বাজারে তেঁতে উঠছে পেঁয়াজ ও আলুর দাম। বাড়তে বাড়তে দেশি পেঁয়াজের কেজি গিয়ে ঠেকেছে ১৪০ টাকায় এবং ভারতীয় পেঁয়াজ মানভেদে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়।
ঢাকার বাজারে এর সঙ্গে চড়ছে আলুর দামও। সবশেষ হরতাল-অবরোধের সুযোগ নিয়ে এক সপ্তাহের ব্যবধানে ১০ টাকা বেড়ে আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে।
পেঁয়াজের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা ভারতের রপ্তানিতে ৪০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্কায়নের কথা বলছেন।
বৃহস্পতিবার ঢাকার মিরপুর ১, মিরপুর ১১ এবং মহাখালী কাঁচাবাজার ঘুরে খুচরায় এমন দর দেখা গেছে।
মিরপুর ১১ (পূরবী) এর খুচরা ব্যবসায়ী মো. হৃদয় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পাইকারি বাজারে গত এক সপ্তাহে কেজিতে প্রায় ১০ টাকা বেড়ে যাওয়ায় প্রতিকেজি আলু ৬০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে।
পেঁয়াজের বিষয়ে তিনি বলেন, এক সপ্তাহ আগেও দেশি পেঁয়াজ বিক্রি করেছেন কেজিপ্রতি ১১০ টাকায়। গত তিন দিন ধরে পাইকারিতে দাম বেড়ে এখন খুচরায় ১৪০ টাকায় বিক্রি না করলে পোষাবে না।
অপর দুই কাঁচাবাজারের খুচরা দোকানেও একই দামে রান্নার এ দুই নিত্যপণ্য একই দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
মিরপুর ১ পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ীরা বলেন, পেঁয়াজের দাম বেড়েছে আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের দাম বাড়ায়। নিজেদের চাহিদা সামাল দিতে দেশটি অতিরিক্ত ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে।
মায়ের দোয়া এন্টারপ্রাইজ এর মালিক সিদ্দিকুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ভারতীয় পেঁয়াজে শুল্কারোপের জন্য আপনাআপনিই বেড়ে যাচ্ছে দেশি পেঁয়াজের দাম। কারণ ব্যবসায়ী ও ভোক্তারা মনে করেন এ দুই ধরনের পেঁয়াজের কেজিতে অন্তত ১৫-২০ টাকার ব্যবধান থাকে। এটা ভোক্তারাও মেনে নেন।
একই বাজারের পাইকারি আলু বিক্রেতা শাহ আলী বোগদাদী এন্টার প্রাইজ এর ব্যবস্থাপক মো. তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, “বছরের এই সময়ে প্রতিবছর আলুর দাম কিছুটা বাড়ে। কারণ এই সময়ে নতুন আলুর চাষ শুরু হয়। নতুন চাষের জন্য উল্লেখযোগ্য একটা অংশ বীজ আলুর জন্য প্রয়োজন হয়। ওই বীজ সরবরাহে একটা চাহিদা সৃষ্টি হয়।
এছাড়া এবছর বর্ষার শেষ সময়ে অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে সবজি চাষের উল্লেখযোগ্য একটা অংশ পঁচে গেছে। এতে সবজি সরবরাহে ঘাটতিতে বাজারে আলুর চাহিদা আরও বেড়ে গেছে।
এটিকেই মজুতদার ও ব্যবসায়ীদের অনেকে সুযোগ হিসেবে নিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পাইকারি মোকাম শ্যাম বাজার কৃষি পণ্য আড়ত ও বণিক সমিতির সভাপতি মো. সাইদের অভিযোগ, “আমি মনে করি আলু ও দেশি পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির জন্য দেশের বড় বড় ব্যবসায়ীরা দায়ী।
“যেসব বড় বড় ব্যবসায়ী পেঁয়াজ কিনে রেখেছিলেন তারা ভারতীয় পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ার সুযোগ নিচ্ছেন। এই সুযোগ নিয়ে অতিরিক্ত মুনাফাখোররা পেঁয়াজের বাজার অস্থিতিশীল করে তুলেছে।”
এটি ‘একটি বড় সিন্ডিকেট’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, সাধারণের স্বার্থে এ সিন্ডিকেট খুঁজে বের করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত সরকারের।