আদানির বিদ্যুৎ মার্চেই আসছে: প্রতিমন্ত্রী

পেছানোর কথা উঠলেও ফেব্রুয়ারি থেকেই গ্যাসের নতুন দর কর্যকর হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নসরুল হামিদ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Feb 2023, 03:11 PM
Updated : 5 Feb 2023, 03:11 PM

আগের সূচি অনুযায়ী আগামী মার্চ থেকেই ভারতের আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎ আসা শুরু হবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

‘শেয়ার দরে কারচুপি’ নিয়ে শোরগোল ওঠার পর টালমাটাল হয়ে পড়া আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়লার দাম বেশি বলে খবর বেরিয়েছে। এজন্য ছয় বছর আগে আদানি পাওয়ারের সঙ্গে করা চুক্তি পর্যালোচনায় বাংলাদেশের তরফে সম্প্রতি চিঠি দেওয়া হয়েছে।

এমন খবরের মধ্যে রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রতিমন্ত্রী ভারতীয় এ কোম্পানির বিদ্যুৎ আসা নিয়ে কথা বলেন।

আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে পরীক্ষামূলক সরবরাহ শুরু হবে বলেও জানান তিনি।

নসরুল হামিদ বলেন, আদানি গ্রুপের উৎপাদিত বিদ্যুৎ নিয়ে যেসব কথা হচ্ছে, তার ভিত্তি নেই। আগামী মার্চে ভারত থেকে আদানি গ্রুপের উৎপাদিত বিদ্যুৎ আসবে। প্রতিযোগিতামূলক বাজার দরেই এ বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। এ নিয়ে কোনো সংশয়ের সুযোগ নেই।

এদিকে পেছানোর কথা উঠলেও ফেব্রুয়ারি থেকেই শিল্প, বাণিজ্য ও বিদ্যুৎকেন্দ্রের গ্রাহকদের জন্য গ্যাসের নতুন দর কর্যকর হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

এক প্রশ্নের জবাবে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, এ মাসে খোলা বাজার থেকে এলএনজি এসে যাচ্ছে। সুতরাং গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত আর পেছাচ্ছে না। গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি পেছাবে এই নিশ্চিয়তা কেউ দেয়নি।

বিদ্যুতের সরবরাহ ঠিক রাখতে আদানি গ্রুপের কোম্পানি আদানি পাওয়ারের কাছ থেকে বিদ্যুৎ কিনতে ২০১৭ সালের ৫ নভেম্বর চুক্তি করে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ বিভাগ। চুক্তির আওতায় আদানি ঝাড়খণ্ডে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করে বাংলাদেশে সরবরাহ করবে।

বাংলাদেশ লাগোয়া রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের পাশেই ঝাড়খণ্ড রাজ্য। সেখান থেকে বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও বগুড়ার সঞ্চালন লাইন হয়ে আসবে আদানির বিদ্যুৎ।

গত জানুয়ারির শুরুতে একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে ওই বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিদর্শন করে আসেন প্রতিমন্ত্রী। তখনও দুই পক্ষের আলোচনার ভিত্তিতে মার্চে বিদ্যুৎ আসার খবর দিয়েছিলেন তিনি।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিনিয়োগ ফার্ম হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের এক প্রতিবেদনে এক দশক ধরে পুঁজিবাজারে শেয়ার নিয়ন্ত্রণ ও আর্থিক প্রতারণার অভিযোগের তথ্য প্রকাশ করা হয় আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে। এরপর থেকে আদানি গ্রুপের শেয়ারের ক্রমাগত দরপতন হচ্ছে।

শীর্ষ ধনীর তালিকাতেও অবনমন হয় গৌতম আদানির; গত কয়েকদিন ধরে কোম্পানিটি নিয়ে সরব আলোচনাও ডালপালা মেলেছে।

এরমধ্যেই বাংলাদেশে বিদ্যুৎ দিতে গিয়ে কৃষি জমির ওপর দিয়ে সঞ্চালন লাইন নির্মাণ চ্যালেঞ্জ করে ভারতের আদালতের দ্বারস্ত হয়েছেন কয়েকজন কৃষক।

অপরদিকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিদ্যুতের দাম পুনর্বিবেচনায় চিঠি দেওয়া হয়েছে বলেও আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম রয়টার্সে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়।

এসব ঘটনার প্রেক্ষাপটে সাংবাদিকরা আদানির বিদ্যুৎ নিয়ে কোনো পক্ষের অবস্থানের পরিবর্তন হয়েছে কি না প্রতিমন্ত্রীর কাছে জানতে চান।

এসময় আগের চুক্তির আওতায় এ বিদ্যুৎ আমদানি নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই জানিয়ে তিনি বলেন, “মার্চের প্রথম সপ্তাহে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হবে। মার্চে প্রথম ইউনিট থেকে আসবে ৭৫০ মেগাওয়াট। দ্বিতীয় ইউনিট থেকে আরও ৭৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসবে এপ্রিল মাসে।“

Also Read: কয়লার দাম পর্যালোচনায় আদানিকে চিঠি বাংলাদেশের