জাপান থেকে এক কার্গো এলএনজি কেনার সিদ্ধান্ত

প্রতি এমএমবিটিইউর জন্য ১৬ দশমিক ৫০ ডলার খরচ ধরে এক কার্গো এলএনজির জন্য খরচ হবে মোট ৬৯০ কোটি ৪২ লাখ ৯ হাজার ৩১২ টাকা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Feb 2023, 11:01 AM
Updated : 15 Feb 2023, 11:01 AM

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি বিশেষ বিধানের আওতায় জাপান থেকে আরও এক কার্গো বা ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

প্রতি এমএমবিটিইউর জন্য ১৬ দশমিক ৫০ ডলার খরচ ধরে এক কার্গো এলএনজির জন্য খরচ হবে মোট ৬৯০ কোটি ৪২ লাখ ৯ হাজার ৩১২ টাকা।

বুধবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় এই ক্রয়প্রস্তাব অনুমোদন পায়। পরে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান।

তিনি বলেন, মাস্টার সেল অ্যান্ড পার্চেজ অ্যাগ্রিমেন্ট বা মিলিত ক্রয়-বিক্রয় চুক্তিতে (এমএসপিএ) স্বাক্ষর করা প্রতিষ্ঠান থেকে কোটেশন সংগ্রহের প্রক্রিয়ায় এ এলএনজি আমদানির সিদ্ধান্ত হয়েছে।

জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অধীন পেট্রোবাংলার মাধ্যমে এই এলএনজি আমদানি করা হবে জাপানের এমএম জেরা করপোরেশন কাছ থেকে।

Also Read: আট মাস পর এলএনজির খোলা বাজারে বাংলাদেশ

আন্তর্জাতিক বাজারে উচ্চমূল্যের কারণে প্রায় আট মাস খোলা বাজার থেকে এলএনজি কেনা বন্ধ রেখেছিল সরকার। দাম কিছুটা কমে আসায় দেশের চাহিদার কথা মাথায় রেখে গত ১ ফেব্রুয়ারি এক কার্গো এলএনজি কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়।

পেট্রোবাংলার এক কর্মকর্তা তখন জানিয়েছিলেন, ফরাসি কোম্পানি টোটালএনার্জিস থেকে এক কার্গো (৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ) এলএনজি কেনা হচ্ছে, যা ফেব্রুয়ারির শেষ নাগাদ দেশে পৌঁছাবে। প্রতি ইউনিট এলএনজির দাম পড়বে ২০ ডলারের কাছাকাছি।

এর আগে সিঙ্গাপুরের ভিটল এনার্জির কাছ থেকে ২০২২ সালের মে মাসের শেষ দিকে সবশেষ এক কার্গো এলএনজি কিনেছিল সরকার, যেখানে প্রতি ইউনিটের দাম পড়েছিল ২৫ দশমিক ৭৫ ডলার।

দেশে নতুন শিল্প কারখানা বাড়তে থাকায় গ্যাসের চাহিদা মেটাতে ২০২২ সালের প্রথম ছয় মাসে আন্তর্জাতিক খোলা বাজার থেকে নয় কার্গো এলএনজি আমদানি করেছিল সরকার।

পরে একদিকে ডলার সংকট, অন্যদিকে এলএনজির মূল্য বেড়ে যাওয়ার কারণে খোলা বাজার থেকে এলএনজি কেনা বন্ধ করে দেওয়া হয়।

ফলে দেশে একই সঙ্গে গ্যাস ও বিদ্যুতের সংকট দেখা দেয়। জুলাই থেকে ফিরে আসে লোডশেডিং, গ্যাসের অভাবে অনেক পোশাক কারখানা বন্ধ রাখতে হয়। তবে ডিসেম্বরে শীত শুরু হওয়ায় গ্যাস ও বিদ্যুতের চাহিদা কমে আসে; পরিস্থিতির উন্নতি ঘটে।

গত জানুয়ারিতে বিদ্যুৎ কেন্দ্র, শিল্প ও বাণিজ্যিক গ্রাহকদের জন্য গ্যাসের দাম এক লাফে ১৭৮ শতাংশ বাড়ানো হয়; যা ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হওয়ার কথা ছিল।

তবে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ফেব্রুয়ারিতে নতুন দাম কার্যকর না করে খোলা বাজার থেকে আমদানি করা এলএনজি সঞ্চালন লাইনে মিশ্রণ করার পর দাম বাড়ানোর কথা বলেছেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

রাসায়নিক কেনার সিদ্ধান্ত

সভায় শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে বাংলাদেশ কেমিকেল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের (বিসিআইসি) ডিএপি ফার্টিলাইজাইর কোম্পানির জন্য আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ২০ হাজার টন ফসফরিক এসিড আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

যার প্রতি টনের মূল্য ৫৫৯ দশমিক ৫ ডলার, গতবার যা কেনা হয়েছিল ৬৮৮ দশমিক ৫ ডলারে। এবার মোট ব্যয় হবে ১১৯ কোটি ৪৯ লাখ ৮০ হাজার ১০০ টাকা। মেসার্স সান ইন্টারন্যাশনাল এই রাসায়নিক সরবরাহ করবে।

বিসিআইসির আরেক কোম্পানি টিএসপি কমপ্লেক্স লিমিটেডের জন্য আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ২৫ হাজার টন রক ফসফেট আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এবার প্রতি টনের মূল্য পড়ছে ৩২৯ দশমিক ৮৫ মার্কিন, যা আগে ছিল ৩৩৪ মার্কন ডলার। এবার মোট ব্যয় হবে ৮৮ কোটি ৬ লাখ ১৭ হাজার ৩৮ টাকা। ঢাকার মেসার্স এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিয়াল এই রাসায়নিক সরবরাহ করবে।

তেল ও মসুর ডাল কেনার সিদ্ধান্ত

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এর জন্য ১ কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার প্রস্তাব অনুমোদন পেয়েছে এদিন।

প্রতি লিটার তেলের দাম ধরা হয়েছে ১৭৪ দশমিক ৫ টাকা; আগের কেনাকাটায় খরচ হয়েছিল ১৭৬ দশমিক ৮৮ টাকা। এবার ব্যয় হবে মোট ১৯১ কোটি ৯৬ লাখ ১০ হাজার টাকা। দেশীয় কোম্পানি সিটি এডিবল ওয়েল ওই তেল সরবরাহ করবে।

আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রর মাধ্যমে তুরস্ক থেকে ৮ হাজার টন মসুর ডাল কিনবে টিসিবি। প্রতি টনের মূল্য ধরা হয়েছে ৮৫৮ মার্কিন ডলার, মোট ক্রয়মূল্য ধরা হয়েছে ৭৩ কোটি ৪৪ লাখ ৪৮ হাজার টাকা।

ঠিকাদার নিয়োগ

পল্লী সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ শীর্ষক স্থানীয় সরকারের প্রকল্পের আওতায় ঝলাকাঠির নলছিটিতে ৭৩০ মিটার সেতু নির্মাণের কাজ যৌথভাবে এম এম বিল্ডার্স ইঞ্জিনিয়ারিং এবং এমএস পোদ্দার এন্টারপ্রাইজকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ সেতুর জন্য নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১২৩ কোটি ৯ লাখ ৭১ হাজার টাকা।