আট মাস পর এলএনজির খোলা বাজারে বাংলাদেশ

আমদানি করা এ গ্যাস ফেব্রুয়ারির শেষ নাগাদ দেশে পৌঁছাবে বলে আশা করছে সরকার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Feb 2023, 05:59 PM
Updated : 1 Feb 2023, 05:59 PM

আন্তর্জাতিক বাজারে উচ্চমূল্যের কারণে মাঝে আট মাস কেনা থেকে বিরত থাকার পর আবার খোলা বাজার থেকে এলএনজি কিনতে যাচ্ছে সরকার।

বুধবার সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে জ্বালানি বিভাগের এক কার্গো এলএনজি কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

যোগাযোগ করা হলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান জানান, বৈঠকে খোলা বাজার থেকে এলএনজি কেনা সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব ‘পাস হয়েছে’।

এ প্রস্তাবের বিষয়ে আরও তথ্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, “যেহেতু কাগজপত্র আমার সামনে নেই, তাই এর চেয়ে বিস্তারিত কিছু বলতে পারছি না।”

সচরাচর সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী কিংবা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন অতিরিক্ত সচিব এর বিষয়বস্তু সম্পর্কে ব্রিফিং করেন।

তবে এদিনের বৈঠক সম্পর্কে আগে কিছু্ই জানানো হয়নি, ব্রিফিং বা সংবাদ সম্মেলনও হয়নি বৈঠকের পর।

এলএনজি আমদানি সম্পর্কে জানতে জ্বালানি বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা যুগ্ম সচিব (উন্নয়ন ২) জাকির হোসেনের যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রশ্ন শুনে আর উত্তর দেননি। এক ঘণ্টা পরে যোগাযোগ করতে বললেও পরে আর ফোন ধরেননি।

বুধবারের ক্রয় সংক্রান্ত বৈঠকের এলএনজি কেনার প্রস্তাবের বিষয়ে জানতে চাইলে পেট্রোবাংলার এক কর্মকর্তা জানান, ফরাসি কোম্পানি টোটালএনার্জিস এর কাছ থেকে এক কার্গো (৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ) এলএনজি কেনা হচ্ছে, যা ফেব্রুয়ারির শেষ নাগাদ দেশে পৌঁছাবে। এ কেনাকাটায় প্রতি ইউনিট এলএনজির দাম পড়বে ২০ ডলারের কাছাকাছি।

এর আগে সিঙ্গাপুরের ভিটল এনার্জির কাছ থেকে ২০২২ সালের মে মাসের শেষ দিকে সবশেষ এক কার্গো এলএনজি কিনেছিল সরকার, যেখানে প্রতি ইউনিটের দাম পড়েছে ২৫ দশমিক ৭৫ ডলার করে।

দেশে নতুন শিল্প কারখানা বাড়তে থাকায় গ্যাসের চাহিদা মেটাতে ২০২২ সালের প্রথম ছয় মাসে নয় কার্গো (প্রতি কার্গোতে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ) এলএনজি আমদানি করেছিল সরকার। পরে একদিকে ডলার সংকট, অন্যদিকে এলএনজির মূল্য বেড়ে যাওয়ার কারণে একপর্যায়ে আমদানি বন্ধ করে দেওয়া হয়।

ফলে দেশে একই সঙ্গে গ্যাস ও বিদ্যুতের সংকট দেখা দেয়। জুলাই থেকে ফিরে আসে লোডশেডিং, গ্যাসের অভাবে অনেক পোশাক কারখানা বন্ধ রাখতে হয়। তবে ডিসেম্বরে শীত শুরু হওয়ায় গ্যাস ও বিদ্যুতের চাহিদা কমে আসে; পরিস্থিতির উন্নতি ঘটে।

নতুন করে আবার এলএনজি আনার লক্ষ্যে গত জানুয়ারিতে গ্যাসের দাম বিদ্যুৎ কেন্দ্র, শিল্প ও বাণিজ্যিক গ্রাহকদের জন্য গ্যাসের দাম এক লাফে ১৭৮ শতাংশ বাড়ানো হয়; যা ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হওয়ার কথা ছিল।

তবে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ফেব্রুয়ারিতে নতুন দাম কার্যকর না করে খোলা বাজার থেকে আমদানি করা এলএনজি সঞ্চালন লাইনে মিশ্রণ করার পর দাম বাড়ানোর কথা বলেছেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।