প্রথমবারের মত মেলায় প্রবেশ করতে দর্শনার্থীদের জন্য ‘ই-টিকেটিংয়ের’ ব্যবস্থা করা হয়েছে।
Published : 31 Dec 2024, 04:39 PM
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাফল্য গাঁথা তুলে ধরতে এবারের বাণিজ্য মেলায় থাকছে ‘জুলাই চত্বর ও ‘ছত্রিশ চত্বর’।
পাশাপাশি দেশের তরুণ সমাজকে রপ্তানি বাণিজ্যে উদ্বুদ্ধ করতে তৈরি করা হয়েছে ‘ইয়ুথ প্যাভিলিয়ন’; প্রথমবারের মত মেলায় প্রবেশ করতে দর্শনার্থীদের জন্য ‘ই-টিকেটিংয়ের’ ব্যবস্থা করতে উদ্বোধন করা হয়েছে অ্যাপস।
মঙ্গলবার দুপুরে মেলা প্রাঙ্গণে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন এ তথ্য জানিয়েছেন।
ইংরেজি নতুন বছরের প্রথম দিন থেকে শুরু হচ্ছে মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। রাজধানীর পূর্বাচলে বুধবার সকাল ১০টায় প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস মেলার উদ্বোধন ঘোষণা করবেন।
দেশে পণ্য প্রদর্শনীর সবচেয়ে বড় মেলাটি প্রতিবছরের শুরুর দিন উদ্বোধন করা হয়। বছর কয়েক থেকে এটি হচ্ছে পূর্বাচলে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী এক্সিবিশন সেন্টারে (বিবিসিএফইসি)।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছ, মাসব্যাপী মেলাটি সকাল ১০টায় শুরু হয়ে চলবে রাত ৯টা ; আর সাপ্তাহিক ছুটির দিনে মেলা চলবে রাত ১০ টা পর্যন্ত।
ই-টিকেটিং অ্যাপস উদ্বোধন
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মেলা প্রাঙ্গনে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিনের উপস্থিতিতে, বাণিজ্য মেলায় যাত্রী পরিবহনে বিশেষ ছাড় দিতে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো ও অ্যাপস্ভিত্তিক সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান ‘উবার’র মধ্যে এমওইউ সই হয়েছে।
পরে বাণিজ্য উপদেষ্টা ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় প্রবেশের জন্য ই-টিকেটিং অ্যাপসের উদ্বোধন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে, মেলায় প্রথমবারের মত অনলাইনে বিভিন্ন ক্যাটাগরির স্টল-প্যাভিলিয়ন স্পেস বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার কথা বিবেবচনায় বিআরটিসির বাস সার্ভিসের পাশাপাশি যুক্ত হচ্ছে বিশেষ ছাড়ে ‘উবার’ সার্ভিস।
মেলায় সম্ভাবনাময় সেক্টর ও পণ্যভিত্তিক সেমিনার আয়োজনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এ বছর। বিদেশি উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠানের জন্য থাকছে স্বতন্ত্র সোর্সিং কর্নার, ইলেক্ট্রনিক্স ও ফার্নিচার জোন।
বয়সভিত্তিক দর্শনার্থীদের জন্য তৈরি করা হয়েছে প্রযুক্তি কর্নার, সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য সিটিং কর্নার। শিশুদের জন্য মেলায় শিশু পার্কও থাকছে।
বিভিন্ন ক্যাটাগরির ৩৬১টি প্যাভিলিয়ন, স্টল, রেঁস্তোরা দেশীয় উৎপাদক-রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানসহ সাধারণ ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান এবং বিদেশি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে শতভাগ স্বচ্ছতায় বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বাণিজ্য উপদেষ্টা।
বাণিজ্য মেলার পর্দা উঠছে বুধবার, উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা
দেশীয় বস্ত্র, মেশিনারিজ, কার্পেট, কসমেটিক্স এ্যান্ড বিউটি এইডস, ইলেকট্রিক্যাল এ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক্সস, ফার্নিচার, পাট ও পাটজাত পণ্য, গৃহ সামগ্রী, চামড়া ও আর্টিফিসিয়াল চামড়া ও জুতাসহ চামড়াজাত পণ্য, স্পোর্টস গুডস, স্যানিটারিওয়্যার, খেলনা, স্টেশনারি, ক্রোকারিজ,প্লাস্টিক, মেলামাইন পলিমার, হারবাল,টয়লেট্রিজ, ইমিটেশন জুয়েলারি, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, ফাস্টফুড, হস্তশিল্পজাত পণ্য, হোম ডেকর ইত্যাদি পণ্য মেলায় বিক্রির জন্য রাখা হবে।
বাংলাদেশসহ মোট আটটি দেশ এতে অংশ নিচ্ছে। অন্য দেশগুলো হল- ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, হংকং ও মালয়েশিয়া।
এবারে মেলায় ৩৬২টি স্টল ও প্যাভিলিয়ন থাকছে। এর মধ্যে ৩৫১টিই দেশীয় প্রতিষ্ঠানের স্টল-প্যাভিলিয়ন। আর বাকি ১১টি স্টল থাকবে সাতটি দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে, এক্সিবিশন সেন্টারের দক্ষিণ-পূর্ব পাশে জুলাই চত্বর, দক্ষিণ-পশ্চিম পাশে কালচারাল সেন্টার, টেকনোলজি কর্নার, রিক্রিয়েশন কর্নার এবং সেন্টারের উত্তর-পূর্ব (৬ একর) পাশে শিশু পার্ক ও উত্তর-পশ্চিম পাশে ছত্রিশ চত্বর ও নামাজ ঘর স্থাপন করা হয়েছে।
মেলার সার্বিক নিরাপত্তা এবং দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে মেলা প্রাঙ্গণে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, র্যাব, গোয়েন্দা সংস্থাসহ অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত থাকবেন।
মেলার নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রাঙ্গণের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান, প্রবেশ গেইট, পার্কিং এরিয়া এবং সংশ্লিষ্ট সব এলাকায় ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসানো হয়েছে।
খাদ্য দ্রব্যের মান নিয়ন্ত্রণের জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ গঠিত টিম মেলা চলাকালীন প্রতিদিন ভেজাল বিরোধী মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবে।
মেলায় আসা দর্শনার্থীদের জন্য চিকিৎসকও রাখা হয়েছে।
এছাড়া মেলার থাকবে পর্যাপ্ত কার পার্কিংয়ের সুবিধা। ৫ শতাধিক গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রাখা দ্বিতল কার পার্কিং বিল্ডিং ছাড়াও এক্সিবিশন হলের বাইরে ৬ একর জমিতে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
মেলার সার্বিক কার্যক্রম মনিটরিংয়ের জন্য মেলায় স্থাপন করা হয়েছে একটি কন্ট্রোল রুম এবং তথ্য কেন্দ্র। ব্যাংকিং সার্ভিসের জন্য মেলায় পর্যাপ্ত সংখ্যক ব্যাংক বুথও থাকছে।
এছাড়ামা ও শিশুদের জন্য মেলায় রাখা হয়েছে মা ও শিশু কেন্দ্র। দর্শনার্থী এবং বয়স্কদের জন্য সিটিং কর্নারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।