২৫ হাজার কোটি টাকার ভর্তুকির বিপরীতে ব্যাংকগুলো এখন পর্যন্ত সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকা পেয়েছে বন্ড আকারে।
Published : 30 Jan 2024, 11:17 PM
সার ও বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি বাবদ ব্যাংকের পাওনা অর্থ নগদ টাকার বদলে যে বন্ড আকারে দিয়েছে সরকার, সেই বন্ড ব্যাংকের মোট সিকিউরিটিজের হিসাবের বাইরে থাকবে বলে সিদ্ধান্ত দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
ভর্তুকির অর্থ পরিশোধে দেশে প্রথমবারের মত চালু করা বিশেষায়িত এই বন্ডের নাম ‘বাংলাদেশ সরকার স্পেশাল পারপাস বন্ড’।
বাণিজ্যক ব্যাংকগুলোর শেয়ার, বন্ড ও বিলে বিনিয়োগকে সম্মিলিতভাবে সিকিউরিটিজ বলা হয়। একটি ব্যাংক পুঁজিবাজার বা তার বাইরের সিকিউরিটিজে কত বিনিয়োগ করতে পারবে, তার একটি সীমা বেঁধে দেওয়া আছে।
আবার বিনিয়োগ করা বিল ও বন্ডের মধ্যে কি পরিমাণ একটি নির্দিষ্ট সময়ে পুনরায় বিক্রি করতে পারবে, তারও হার ঠিক করা থাকে। ওই সীমার মধ্যে থাকতে ব্যাংকগুলোকে প্রতিনিয়ত বিনিয়োগ ও বিক্রি সমন্বয় করতে হয়।
এখন যেসব ব্যাংক ভর্তুকি বাবদ বন্ড পেয়েছে, তাদের সিকিউরিটিজ সীমায় যাতে প্রভাব না পড়ে, সেজন্য এ সুবিধা দিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংক বুধবার সিদ্ধান্ত দেয়, “বাংলাদেশ সরকার স্পেশাল পারপাস বন্ড প্রাইমারি ডিলার ব্যাংকের ন্যূনতম হেল্ড ফর ট্রেডিং সিকিউরিটিজ হিসাবায়নের ক্ষেত্রে ব্যাংকের ধারণকৃত মোট সিকিউরিটিজ হিসাবায়নের বাইরে থাকবে। নন-প্রাইমারি ডিলার ব্যাংকের হেল্ড ফর ম্যাচুউরিটি পোর্টফোলিও-এর সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ সংক্রান্ত হিসাবায়নের বাইরে থাকবে।”
ব্যাংকের কাছে কোন সিকিউরিটিজ কী পরিমাণে আছে ও তার লেনদেন তথ্য প্রতি মাস শেষে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জানাতে হয়। এখন থেকে ‘বাংলাদেশ সরকার স্পেশাল পারপাস বন্ড’ এর তথ্য পৃথক ছক আকারে জানাতে হবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে।
২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত সময়ে সার ও বিদ্যুৎ খাতে সরকারের ভর্তুকি হিসেবে বকেয়া ছিল ২৫ হাজার কোটি টাকা। সরকারের পক্ষে ব্যাংকগুলো ওই অর্থ গ্রাহকদের পরিশোধ করেছে। পরবর্তীতে সরকারের কাছ থেকে ওই অর্থ পাওয়ার কথা ছিল ৩৫ ব্যাংকের। অর্থ না পেয়ে ব্যাংকগুলো তা ঋণে পরিবর্তন করে।
নগদ অর্থ না দিয়ে প্রথমবারের মতো ঋণ পরিশোধে সরকার ব্যাংকগুলোকে বন্ড ধরিয়ে দেয়। এই বন্ডের সুদহার ঠিক করা হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতি সূদহার, অর্থাৎ ৮ শতাংশ ধরে।
বতর্মানে সরকারের অন্যান্য ও বাজারে থাকা বিভিন্ন বন্ডের সুদহার সর্বোচ্চ সাড়ে ১১ শতাংশ।
এ বন্ডের মাধ্যমে এ যাবৎ সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করেছে সরকার। ব্যাংকগুলো এই বন্ড জামানত হিসেবে রেখে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে রেপোর মাধ্যমে অর্থ ধার নেওয়া বা বিক্রিও করতে পারে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শীর্ষ এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সার ও বিদ্যুত খাতের ভর্তুকির অবশিষ্ট অর্থ ধীরে ধীরে বন্ড আকারে পরিশোধ করবে সরকার। তুলে না নেওয়া পর্যন্ত নীতি সুদহার অনুযায়ী বন্ডের বিপরীতে সুদ দিতে থাকবে সরকার।