বৃহৎ করদাতা ইউনিটের প্রাক্তন কমিশনার ওয়াহিদা রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে ‘ক্ষমতার অপব্যবহার এবং অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে’ সরকারের ক্ষতি সাধন করার অভিযোগ আনা হয়েছে মামলায়।
Published : 11 Jun 2024, 06:43 PM
চার মোবাইল ফোন কোম্পানির ১৫২ কোটি টাকার ভ্যাট সংক্রান্ত সুদ মওকুফের অভিযোগে একটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মামলায় ‘ক্ষমতার অপব্যবহার এবং অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে’ সরকারের ক্ষতি সাধন এবং আত্মসাতের অভিযোগে এনবিআরের বৃহৎ করদাতা ইউনিটের প্রাক্তন কমিশনার ওয়াহিদা রহমান চৌধুরীকে আসামি করা হয়েছে।
দুদকের সহকারী পরিচালক মো. শাহআলম শেখ মঙ্গলবার দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ মামলাটি দায়ের করেন। পরে এক ব্রিফিংয়ে বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ওয়াহিদা রহমান চারটি মোবাইল অপারেটর কোম্পানির মধ্যে গ্রামীণফোন লিমিটেডের ছয়টি নথিতে ৫৮ কোটি ৬৪ লাখ ৮৮ হাজার ৬৯৭ টাকা, বাংলালিংক ডিজিটাল কমিউনিকেশন লিমিটেডের সাতটি নথিতে ৫৭ কোটি ৮৮ লাখ ৫৩ হাজার ৫১ টাকা, রবি আজিয়াটার ১৪ কোটি ৯৪ লাখ ১৬ হাজার ৬৮৮ টাকা এবং এয়ারটেল বাংলাদেশ লিমিটেডকে ২০ কোটি ৫৩ লাখ ৩০ হাজার ৯৫২ টাকাসহ মোট ১৫২ কোটি ৮৯ হাজার ৩৯০ টাকা অপরিশোধিত সুদ মওকুফ করেন।
দুদক বলছে, স্থান ও স্থাপনার উপর আইনানুগভাবে ভ্যাট প্রযোজ্য হওয়ায় তা মেনে নিয়ে মোবাইল অপারেটরগুলো দাবিকৃত ভ্যাট পরিশোধের বিষয়ে ‘অলটারনেটিভ ডিসপিউট রেজুলেশন’ (এডিআর) সভায় সম্মত হয়েছিল এবং ১৮৯ কোটি ৭৪ লাখ ১৫ হাজার ৪৩০ টাকা পরিশোধও করেছিল। কিন্তু ওই রাজস্ব নির্ধারিত কর মেয়াদে পরিশোধ না করায় মূসক আইন অনুযায়ী প্রদেয় সুদের পরিমাণ হয় ১৫২ কোটি ৮৯ লাখ ৩৯০ টাকা।
মূল্য সংযোজন কর আইন, ১৯৯১ এর ধারা ৩৭(৩) অনুসারে সুদ আদায়ের জন্য নথি উপস্থাপন করা হলে তৎকালীন কমিশনার ওয়াহিদা রহমান চৌধুরী অতি দ্রুত সুদের হিসাব করার নির্দেশ দেন। তারপর তিনি কিছু যুক্তি প্রদর্শন করে ‘ক্ষমতার অপব্যবহার ও অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে একক নির্বাহী আদেশে অসৎ উদ্দেশ্যে’ সুদ আদায় করার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে মামলায়।
এজাহারে বলা হয়, ১৫২ কোটি টাকা সুদ আইনানুগভাবে আদায়যোগ্য ছিল। কিন্তু ওয়াহিদা রহমান চৌধুরী ওই সুদ আদায় না করার একক নির্বাহী সিদ্ধান্ত দিলে সরকারের ১৫২ কোটি ৮৯ হাজার ৩৯০ টাকা আদায় বাধাগ্রস্ত হয়।
ওয়াহিদা রহমানের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ২১৮/৪০৯ ধারা ও ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় মামলা করা হয়।
অভিযোগের বিষয়ে প্রশ্ন করলে ওয়াহিদা রহমান চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “যেসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে সেগুলো এখনো বিচারাধীন। এটা এনবিআরও জানে।”
এ বিষয়ে মোবাইল অপারেটরদের ভাষ্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানতে পরেনি।