দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে এ ব্যাপারে চিঠি পাঠিয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট।
Published : 25 Aug 2024, 09:08 PM
পদ্মা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাত ও এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সেইসঙ্গে নাফিজ সরাফাতের স্ত্রী আঞ্জুমান আরা সাহিদ ও নজরুল ইসলামের স্ত্রী নাছরিন ইসলামের ব্যাংক হিসাবও অবরুদ্ধ রাখতে বলা হয়েছে।
দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে বৃহস্পতিবার এ ব্যাপারে নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট- বিএফআইইউ।
বিএফআইইউ চিঠিতে বলেছে, “উল্লিখিত ব্যক্তি ও তাদের ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নামে কোনো হিসাব পরিচালিত হয়ে থাকলে সেই হিসাবের লেনদেন মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ২৩ (১) (গ) ধারার আওতায় ৩০ দিনের জন্য স্থগিত রাখা এবং তাদের নামে কোনো লকার থাকলে তার ব্যবহার ৩০ দিনের জন্য বন্ধ করার নির্দেশনা দেওয়া হল।”
এর আগে বৃহস্পতিবার পুঁজিবাজারে নাফিজ সরাফাতের বিও হিসাব অবরুদ্ধের নির্দেশ দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন-বিএসইসি।
নাফিজ সরাফাত পদ্মা ব্যাংকের (সাবেক ফারমার্স ব্যাংক) সাবেক চেয়ারম্যান। তিনি সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান রেইসের মালিকানার সঙ্গে যুক্ত।
কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান নাফিজ সরাফাত হোটেল ব্যবসা, বিদ্যুৎ, মোবাইলের টাওয়ার, মিডিয়াসহ বিভিন্ন খাতে ব্যবসার বিস্তার ঘটিয়েছেন গত এক দশকে।
অনিয়ম আর ঋণ কেলেঙ্কারিতে ফারমার্স ব্যাংক বন্ধ হওয়ার উপক্রম হলে মালিকানা ও ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন ঘটে ২০১৭ সালে। সে সময় চাপের মুখে চেয়ারম্যানের পদ ছাড়েন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সাবেক সদস্য মহীউদ্দীন খান আলমগীর।
পরের বছর ব্যাংকের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন চৌধুরী নাফিজ সরাফাত; পরিচালনা পর্ষদে পরিবর্তনের পর ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে ফারমার্স ব্যাংকের নাম হয় পদ্মা ব্যাংক। কিন্তু সার্বিক অবস্থার কোনো উন্নতি না হওয়ায় এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হওয়ার চুক্তি সই করে পদ্মা ব্যাংক।
আওয়ামী লীগ সরকারের গত তিন মেয়াদে আর্থিক খাতের একাধিক অনিয়মে বার বার নাম এলেও পার পেয়ে যান নাফিজ সরাফাত। সরকার পতনের পর গত ১৬ অগাস্ট ব্যাংক দখল ও পুঁজিবাজার থেকে অর্থ লোপাটের মাধ্যমে ৮০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগের অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
অপরদিকে ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) ও এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান। ২০০৯ সাল থেকে তিনি বিএবির চেয়ারম্যান।
ব্যাংক থেকে নানা সময় চাঁদা তোলার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে ব্যাংক কোম্পানি আইন পরিবর্তন করে উদ্যোক্তাদের সুবিধা বাড়ানো ও নীতি পরিবর্তনে ভূমিকা রাখার অভিযোগও রয়েছে।
আরও পড়ুন-