নানক বলেন, “কেউ আমাদেরকে চোখ রাঙাবে সেই সুযোগ আর নাই। আমাদের বাজার পরিধি বিশ্বের অনেক দেশে ছড়িয়ে গেছে। কাজেই এটা নিয়ে চিন্তা করার কারণ নেই।“
Published : 13 May 2024, 05:37 PM
যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্ব থেকে নির্ভরতা কমিয়ে এনে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের বাজার এখন সারাবিশ্বে বিস্তৃত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক।
তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ এখন কারো চোখ রাঙানিতে ‘ভয় পায় না’।
পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর প্রতিনিধি দল সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্যে সাক্ষাত করে।
সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি কমে যাওয়া নিয়ে প্রশ্নে নানাক বলেন, “যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্ব অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। বাংলাদেশও বিশ্ব অর্থনীতি থেকে আলাদা পথে হাঁটতে পারে না। সে কারণে আমেরিকাসহ সব বাজারে রপ্তানি কমে গেছে। তবে পোশাক শিল্প এখন আর আমেরিকার বাজারের ওপর নির্ভরশীল নয়।
“কেউ আমাদেরকে চোখ রাঙাবে সেই সুযোগ আর নাই। আমাদের বাজার পরিধি বিশ্বের অনেক দেশে ছড়িয়ে গেছে। কাজেই এটা নিয়ে চিন্তা করার কারণ নেই।“
আসন্ন বাজেট সামনে রেখে পোশাক শিল্পের বিভিন্ন সমস্যা এ সময় মন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন বিজিএমইএ সভাপতি এসএম মান্নান কচি।
তিনি বলেন, “ইউক্রেইন রাশিয়া যুদ্ধের কারণে পণ্যের মূল্য কমে যাওয়া পশ্চিমা বিশ্বে রপ্তানিতে নেতিবাচক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। রানা প্লাজা দুর্ঘটনার সময় পোশাক শিল্পের রপ্তানি ছিল ২৩ বিলিয়ন ডলার। আজকে ৪৭ বিলিয়ন ও ২১৫টি গ্রিন ফ্যাক্টরি হয়েছে। বিশ্বের যে কোনো দেশের সঙ্গে আমরা প্রতিযোগিতা সক্ষমতা নিয়ে চ্যালেঞ্জ করতে পারি। আজকে ৪৭ বিলিয়ন রপ্তানি হচ্ছে।
“এখন যুদ্ধের কারণে নতুন সংকট। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। মজুরি বাড়লেও পোশাকের ন্যায্যমূল্য নেই। তাই নতুন প্রযুক্তি সংযোজন করে এগিয়ে যেতে হবে।“
বাজেট নিয়ে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, “বাজেটে নগদ সহায়তা থাকবে না বলে শোনা যাচ্ছে। যেভাবেই হোক, প্রণোদনা দিয়ে এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হবে। নীতি সহায়তা আমরা চাই। ছোট ও মাঝারি শিল্পগুলোকে স্বল্প সুদে ঋণ চাই। নগদ সহায়তা থেকে ১০ শতাংশ করে যেন কেটে নেওয়া না হয়।“
সারা পৃথিবীতে এক্সিট পলিসি থাকলেও বাংলাদেশে যে নেই, সে কথা তুলে ধরে কচি বলেন, “এক্সিট পলিসি না করা গেলে এক্সপোর্ট ক্রেডিট গ্যারান্টি চালু করুন। ভারতে এটা চালু আছে। একটা পলিসি আপনারা নেবেন বলে আশা করছি।“
শিল্পাঞ্চলের বাইরে নতুন কারখানা নির্মাণ বন্ধ করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন. “বাংলাদেশ ব্যাংক, সর্কুলার দিয়েছে যে অর্থনৈতিক অঞ্চল ছাড়া শিল্প করা যাবে না। অনেকগুলো শিল্পাঞ্চলের কাজ শেষ হয়নি। মীরেরসরাইতে ৪৬টি গার্মেন্টস হবে। কিন্তু সেটা প্রস্তুত হয়নি। অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রস্তুত করার আগে এটা করবেন না। এই সার্কুলারটি স্থগিত করে বিনিয়োগের সুযোগ দিন।“
পোশাক শ্রমিকদের জন্য রেশনিংয়ের ব্যবস্থা করারও দাবি জানান বিজিএমইএ সভাপতি। এবং অডিটের ক্ষেত্রে এনবিআর কর্মকর্তাদের হয়রানি বন্ধে ব্যবস্থা নিতেও অনুরোধ জানান তিনি।
এ প্রসঙ্গে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বলেন, এনবিআর কর্মকর্তাদের হয়রানির খবর তার কানে এসেছে। সামনের মন্ত্রিসভার বৈঠকে তিনি বিষয়টি তুলবেন।
এছাড়া পোশাক শ্রমিকদের জন্য রেশনিংয়ের ব্যবস্থার উদ্যোগ নেওয়ার কথা সরকারপ্রধান আট বছর আগে বললেও এখনও কেন কাজটি হয়নি তা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন নানক।
সচিবালয়ে বিজিএমইএর কয়েকজন নেতা ও মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।