আয়ের পাশাপাশি গ্রাহক সংখ্যা বাড়লেও ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে যাওয়ায় এ বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে লোকসানে পড়ার কথা জানিয়েছে দেশের দ্বিতীয় বৃহৎ মোবাইল ফোন অপারেটর রবি।
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এপ্রিল-জুন সময়ের আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য প্রকাশ করে রবি জানিয়েছে এই তিন মাসে তাদের লোকসান হয়েছে ১৭২ কোটি টাকা।
এ বছরের জানুয়ারি-মার্চ সময়ে রবির মোট আয়ের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ১৮ দশমিক ৯ কোটি টাকা। দ্বিতীয় প্রান্তিকে তা ৪ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ১০৫ দশমিক ৪০ কোটি টাকা।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় হারে পরিবর্তনের কারণে ওই আয় থেকে রবি হারিয়েছে ১২ কোটি ২০ লাখ টাকা।
"বিনিময় হারের নেতিবাচক প্রভাব না থাকলে আলোচ্য প্রান্তিকে রবি'র মুনাফার পরিমাণ হতো ৮৬ দশমিক ১৩ কোটি টাকা।"
রবি’র ভারপ্রাপ্ত সিইও এবং সিএফও এম. রিয়াজ রশীদ বলেন, “মার্কিন ডলারের তুলনায় টাকার অবমূল্যায়নের ফলে আমাদের কষ্টার্জিত মুনাফা হারিয়ে যাওয়াটা দুঃখজনক।
"টেলিযোগযোগ সংশ্লিষ্ট সরঞ্জাম কেনার ক্ষেত্রে যেহেতু আমাদের আন্তর্জাতিক বাজারের ওপর নির্ভর করতে হয়, তাই বৈদেশিক লেনদেনের হারের অস্থিতিশীলতা আমাদের জন্য একটি উদ্বেগের বিষয়।"
সরবরাহ সংকটে গত কয়েক মাস ধরেই টাকার বিপরীতে ডলারের দর বাড়ছে। কিছুদিন স্থিতিশীল থাকার পর গত সপ্তাহ থেকে বাংলাদেশি টাকার বিপরীতে ডলারের দাম আবারও বাড়তে শুরু করে। বুধবার ব্যাংক থেকে ডলার কিনতেও ১০৬ টাকা লেগেছে, যা ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
রবি জানায়, এ বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে তাদের আয় গত বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় তা বেড়েছে ৩ দশমিক ৭ শতাংশ।
কোম্পানির ভাষ্য, এ বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে রবি’র শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) ঋণাত্মক ০ দশমিক ০২ টাকা। বৈদেশিক লেনদেনের নেতিবাচক হারের প্রভাব না পড়লে এ বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ইপিএস’র পরিমাণ হতো ০ দশমিক ১৬ টাকা। অন্যদিকে ২০২২ সালের প্রথম ছয় মাসে ইপিএস’র পরিমাণ হতো ০ দশমিক ২৫ টাকা।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রবি এ বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে সরকারী কোষাগারে জমা দিয়েছে ১ হাজার ৪৭৫ দশমিক ৩ কোটি টাকা যা ওই প্রান্তিকের মোট আয়ের ৭০ দশমিক ১ শতাংশ। একই প্রান্তিকে মূলধনী বিনিয়োগের পরিমাণ ৪৮৩ দশমিক ৪ কোটি টাকা।
২০২২ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে রবি’র মোট গ্রাহকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ কোটি ৪৫ লাখ। গত প্রান্তিকের তুলনায় এ বৃদ্ধির হার ০ দশমিক ৮ শতাংশ। গত বছরের একই প্রান্তিকে তুলনায় তা বৃদ্ধি পেয়েছে ৫ দশমিক ২ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রবির ইন্টারনেট গ্রাহকের সংখ্যা বেড়ে ৪ কোটি ৫ লাখে দাঁড়িয়েছে যা গত প্রান্তিকের তুলনায় ২ শতাংশ বেশি। গত বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় এ বৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ৮ শতাংশ।
ডলারের দর বাজারের উপর ছেড়ে দিল বাংলাদেশ ব্যাংকবাজার প্রতিযোগিতার আলোকে মূল্য নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত পদক্ষেপ আহ্বান করে রবি’র ভারপ্রাপ্ত সিইও রিয়াজ রশীদ বলেন, "আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, মূল্য নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করলে একইসাথে গ্রাহকবৃন্দ, অপারেটররা ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা সবাই উপকৃত হবে।
"এক্ষেত্রে আমরা যত দেরি করব, তীব্র প্রতিযোগীতার এই বাজারে তুলনামূলকভাবে ছোট অপারেটররা তত বেশি ভোগান্তির শিকার হবে।”
আরও খবর