সিদ্দিক বাজারে বিস্ফোরণ: সড়কের একপাশ এখনও বন্ধ, যানজটে ভোগান্তি

“পর্যাপ্ত সাপোর্ট খুঁটি দেওয়ার পর ভবনটি ‘স্টেবল’ হয়েছে কি না, তা যাচাই করে বন্ধ সড়ক খুলে দেওয়ার ব্যাপারে জানানো যাবে।”

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 March 2023, 10:13 AM
Updated : 10 March 2023, 10:13 AM

পুরান ঢাকার সিদ্দিক বাজারে বিস্ফোরণের পর থেকে বন্ধ রয়েছে ক্যাফে কুইন ভবনের সামনের সড়কের একাংশ; অন্য পাশ দিয়ে দুই দিকের যানবাহন চলাচলে যানজটের ভোগান্তিতে পড়ছেন যাত্রী ও পথচারীরা।

বন্ধ সড়ক কবে খুলে দেওয়া হবে তা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না কেউ; তবে বিস্ফোরণে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটিতে পর্যাপ্ত সাপোর্ট খুঁটি দেওয়ার পর সেটি ‘স্টেবল’ হয়েছে কি না, তা যাচাই করা হবে। এরপরই বন্ধ সড়ক খুলে দেওয়ার ব্যাপারে জানানো হবে বলে রাজউকের কারিগরী কমিটির এক সদস্য জানাচ্ছেন।

ভবনটির সামনের সড়কের উভয় পাশে বেশ কয়েক গজ দূরত্বে রয়েছে ব্যারিকেড, বিস্ফোরণের ঘটনার পর চতুর্থ দিনেও সেখানে ব্যাপক জটলা রয়েছে মানুষের।

ভবনের সামনে ফিতা টাঙিয়ে ঘেরাও করে দেওয়া রয়েছে; কাউকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না সেখানে। ভবনের গায়ে ঝুলছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ব্যানার; বড় বড় করে সেখানে লেখা- ‘ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ’।

শুক্রবার রাজউকের কারিগরী কমিটির সদস্য রঙ্গন মণ্ডল বলেন, ঠেকনার কাজ শেষ করে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বলা যাবে ভবনটি কতটুকু ‘স্টেবল’ হয়েছে, গাড়ির কম্পন কতটুকু সহায়ক হয়েছে।

“প্রপিং চলছে, এই পর্যন্ত পাঁচটি সাপোর্ট খুঁটি বসানো সম্ভব হয়েছে। তবে ভেতরে ঠেকনা দেওয়ার মত সাপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে না। সাপোর্ট খুঁটি বসানোর পর ভবনটি কতটুকু স্টেবল হয়েছে, তা নির্ণয় করে সড়কের এই অংশ দিয়ে যানবাহন চলাচলের বিষয়ে জানানো যাবে।“

বংশাল থানার ওসি মুজিবুর রহমান বলেন, সড়কের পূর্ব অংশ দিয়ে এখন গাড়ি যাতায়াত করছে। কারিগরি কমিটি বলার পর বন্ধ সড়ক খুলে দেওয়া হবে।

মঙ্গলবার গুলিস্তানের ক্যাফে কুইন ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণে। ভবনটির প্রথম দুই তলার মেঝে ধসে পড়ে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ঘটনাস্থল থেকে ২০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে, হাসপাতালে মারা গেছেন দুইজন।

শুক্রবার চতুর্থ দিনেও ঘটনাস্থলে রয়েছে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সদস্যরা। উদ্ধার অভিযান না চললেও তারা সেখানে সতর্ক অবস্থানে থাকার কথা জানিয়েছেন।

ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা বিভাগীয় উপ-পরিচালক দিনমনি শর্মা বলেন, “আমাদের কোনো উদ্ধার কাজ এখন চলছে না। তবে আমরা ঘটনাস্থলে আছি, যে কোনো জরুরি প্রয়োজনে রেসপন্স করব।”

ঘটনাস্থলে নিখোঁজ রয়েছেন, এমন আর কারও তথ্য নিয়ে নতুন করে কেউ আসেননি বলে জানান এই কর্মকর্তা।

সাততলা ওই বাণিজ্যিক ভবনটির মালিক ছিলেন রেজাউর রহমান। এক সময় তিনি ক্যাফে কুইন নামে একটি রেস্তোরাঁ খুলেছিলেন ওই ভবনে, সেজন্য স্থানীয়রা ভবনটি ক্যাফে কুইন বিল্ডিং নামেই চেনেন।

রেজাউর মারা গেছেন অনেক দিন আগে। তার মৃত্যুর পর তিন ছেলে এর মালিক। মশিউর রহমান নামে রেজাউরের এক ছেলে দেশের বাইরে থাকেন। সবার বড় ওয়াহিদুর রহমান এবং সবার ছোট মতিউর রহমান ঢাকায় থাকেন। তারাই ভবনের দেখাশোনা করেন।

ঘনবসতিপূর্ণ পুরান ঢাকায় আংশিক বিধ্বস্ত এই ভবনটির এখন কী হবে, তা নিয়ে রয়েছে জিজ্ঞাসা।

রাজউক কর্মকর্তা রঙ্গন মণ্ডল বলেন, “স্টেবল করার পর ভবনটি রেট্রোফিটিং এর উপযোগী কিনা, তা পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে ৪৫ দিন সময় লাগবে। উপযোগী হলে রেট্রোফিটিং করতে অন্তত এক বছর লাগবে।”