‘মাসুদ রানা’ এবং ‘কুয়াশা’ সিরিজের বেশ কিছু বইয়ের লেখক হিসেবে শেখ আবদুল হাকিমকে মালিকানা স্বত্ব দিয়ে হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার অনুমতি পেয়েছেন সেবা প্রকাশনীর কাজী আনোয়ার হোসেনের পরিবার।
সোমবার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের আপিল বেঞ্চ তাদের লিভ টু আপিলে অনুমোদন দেয়। বেঞ্চের অপর দুই সদস্য- বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম।
আদালতে আনোয়ার হোসেনের পরিবারের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মুরাদ রেজা ও আইনজীবী এবিএম হামিদুল মেসবাহ। শেখ আবদুল হাকিমের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান ও আইনজীবী ইফতাবুল কামাল অয়ন।
গত বছর ১৩ ডিসেম্বর ‘মাসুদ রানা’ সিরিজের ২৬০টি এবং ‘কুয়াশা’ সিরিজের ৫০টি বইয়ের লেখক হিসেবে মালিকানা স্বত্ব শেখ আবদুল হাকিমকে দিয়ে কপিরাইট অফিসের দেওয়া সিদ্ধান্ত বহাল রেখে রায় দেয় হাই কোর্ট।
পরে প্রয়াত কাজী আনোয়ার হোসেনের দুই ছেলে ও এক মেয়ে পক্ষভুক্ত হয়ে হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেন। ওই আবেদনে তারা হাই কোর্টের রায় স্থগিত চান।
কপিরাইট অফিসের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে কাজী আনোয়ার হোসেনের করা রিট আবেদনে ২০২০ সালের ১০ সেপ্টেম্বর রুল দিয়েছিল হাই কোর্ট।
পরের বছর ১৩ ডিসেম্বর চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে হাই কোর্ট সেই রুল খারিজ করে এবং কপিরাইট অফিসের সিদ্ধান্তের ওপর থাকা স্থগিতাদেশ বাতিল করে রায় দেয়।
এই মামলা চলার মধ্যেই গত অগাস্ট মাসে ৭৪ বছর বয়সে মারা যান শেখ আবদুল হাকিম। তার মৃত্যুর চার মাস পর তার পক্ষে হাই কোর্টের রায় আসে।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে কাজী আনোয়ার হোসেন আপিলের আবেদন করার পর গত জানুয়ারিতে তিনিও মারা যান।
অধ্যাপক কাজী মোতাহার হোসেনের ছেলে কাজী আনোয়ার হোসেন ১৯৬৬ সালে সেবা প্রকাশনী প্রতিষ্ঠা করে ‘মাসুদ রানা’ সিরিজ লেখা শুরু করেন; দ্রুতই তা ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। অনেকের কাছেই তিনি হয়ে ওঠেন প্রিয় ‘কাজীদা’
পরবর্তীতে কাজী আনোয়ার হোসেন পারিশ্রমিকের বিনিময়ে অন্যদের দিয়ে ‘মাসুদ রানা’ লেখাতেন। তার মধ্যে শেখ আবদুল হাকিমও রয়েছেন।
তবে ‘বাজারজাত করার স্বার্থে’ অন্যদের লেখাগুলো কাজী আনোয়ার হোসেন নিজের নামে প্রকাশ করতেন।
শুরুতে কোনো আপত্তি না থাকলেও ২০১০ সালে মাসুদ রানা সিরিজের ২৬০টি বইয়ের মালিকানা স্বত্ব দাবি করে কাজী আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে কপিরাইট আইনের ৭১ ও ৮৯ ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলেন শেখ আবদুল হাকিম।
২০২০ সালের ২৯ জুলাই তিনি কপিরাইট অফিসে অভিযোগ দায়ের করেন। পরে তার পক্ষেই রায় দেয় কপিরাইট অফিস। এরপর বিষয়টি গড়ায় আদালতে।
আরও পড়ুন