প্রার্থীদের আয়ের উৎস, পেশা, মামলা, দায়ের তথ্য প্রচারের বাধ্যবাধকতা আছে।
Published : 04 Dec 2023, 12:02 AM
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রার্থীদের দাখিল করা হলফনামায় কোনো আপত্তি থাকলে মনোনয়নপত্র বাছাই কিংবা আপিলের সময় তা তুলে ধরতে পরামর্শ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
সংস্থাটির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, হলফনামা সবার জন্য উন্মুক্ত। কোনো প্রার্থীর অসত্য তথ্য নিয়ে আপত্তি তুলতে চাইলে মনোনয়নপত্র বাছাই কিংবা আপিলের সময় যে কেউ উত্থাপন করতে পারেন।
“নির্বাচনের পরে আপত্তি উঠলে তখন কমিশনের তেমন কিছু করার থাকে না। তবে আদালতের পথ সবসময় খোলা।”
প্রার্থীদের আয়ের উৎস, পেশা, মামলা, দায়-দেনাসহ হলফনামায় দেওয়া তথ্য প্রকাশ ও প্রচারের ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রয়েছে। ভোটারদের কাছে হলফনামা তুলে ধরতে শিগগিরই তা নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে বলে জানান অশোক কুমার।
হলফনামার তথ্য জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকলেও তা স্বউদ্যোগে যাচাই-বাছাই করে না ইসি।
এবার ৩০০ আসনের জন্য মোট ২ হাজার ৭১২টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। ৭ জানুয়ারি ভোটের দিন রেখে ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের শেষ দিন সোমবার।
বাছাই শেষে রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ৫ থেকে ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন কমিশনে আপিল করা যাবে। সেই আবেদন নিষ্পত্তি করা হবে ১০-১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে। এরপর প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা যাবে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
পরদিন প্রতীক বরাদ্দ হলে প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিক প্রচারে নামতে পারবেন, যা চলবে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত।
হলফনামায় মিথ্যা লিখলে ভোটের পর ইসির ‘করার কিছু থাকে না’
গাজীপুরে আওয়ামী লীগের কমিটি ঘোষণার পর মন্ত্রী-এমপির সামনেই ভাঙচুর
প্রার্থীকে হলফনামার মাধ্যমে ৮ ধরনের তথ্য ও কাগজপত্র জমা দিতে হয়-
>> অর্জিত সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা;
>> প্রার্থীর বিরুদ্ধে বর্তমানে কোনো ফৌজদারি মামলা আছে কি না, তার সঠিক তথ্য।
>> অতীতে প্রার্থীর বিরুদ্ধে দায়ের করা কোনো ফৌজদারি মামলার রেকর্ড আছে কি না, থাকলে তার রায় কি ছিল?
>> পেশা
>> আয়ের উৎস বা উৎস
>> প্রার্থীর নিজের ও অন্যান্য নির্ভরশীলদের পরিসম্পদ ও আয়ের বিবরণী আইনজীবীর মাধ্যমে প্রত্যয়ন করলেও গ্রহণযোগ্য হবে।
>> এর আগে জাতীয় সংসদের সদস্য ছিলেন কি না এবং থাকলে ভোটারদেরকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি কতটা অর্জন সম্ভব হয়েছিল।
>> কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান হতে প্রার্থী একক বা যৌথভাবে বা তার ওপর নির্ভরশীল সদস্যের নেওয়া ঋণের পরিমাণ
হলফনামার তিনটি কপি প্রার্থীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়। এর একটি মনোনয়নপত্রের সঙ্গে রাখা হয়, একটি রিটার্নিং অফিসারের অফিসের বাইরে টাঙ্গিয়ে দিতে হয় এবং একটি একজন কর্মকর্তার কাছে রাখতে হয়, যাতে আগ্রহী কেউ ফটোকপি করতে চাইলে ফেরত দেওয়ার শর্তে নিতে পারেন।
নির্বাচনে কারা প্রার্থী হতে পারবেন, কারা পারবেন না
সাকা চৌধুরীর পক্ষে ‘সাফাই’: বন গবেষণার পরিচালকের বিরুদ্ধে মামলা
হলফনামায় ভুল তথ্য দিলে: গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুসারে, হলফনামার মাধ্যমে প্রার্থী তথ্য না দিলে বা দাখিলকৃত হলফনামায় কোনো অসত্য তথ্য দিলে বা হলফনামায় কোনো তথ্যের সমর্থনে সার্টিফিকেট, দলিল দাখিল না করলে রিটার্নিং অফিসার নিজ উদ্যোগ অথবা কোনো ব্যক্তির উত্থাপিত আপত্তির পরিপ্রেক্ষিতে সংক্ষিপ্ত তদন্ত পরিচালনা করতে পারবেন এবং কোনো মনোনয়নপত্র বাতিল করতে পারবেন।
এছাড়া হলফনামা দাখিল না করলে বা আদেশের বিধানবলী যথাযথভাবে প্রতিপালন না করলে ইসি বাছাই পর্যায়ে [আরপিও ১৪(৩)(সি)] সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির প্রার্থিতা বাতিল করতে পারবে।
তাছাড়া হলফনামায় প্রদত্ত কোনো তথ্য মিথ্যা বা ভুল প্রমাণিত হলে তা ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধি অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে বিবেচিত হবে।
যাছাইয়ের সময় ব্যবস্থা নেওয়া হলেও নির্বাচিত হয়ে যাওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়ায় জটিলতা রয়েছে।
এর আগে নির্বাচন কমিশনার আলমগীর বলেছিলেন, “মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় কেউ চ্যালেঞ্জ করলে ইসি তা যাচাই করে দেখে। যাচাইয়ে যদি প্রমাণিত হয়, তাহলে তার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। এই ক্ষমতা ইসির আছে।”