বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের মামলার রায় ঘোষণার আগে আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা।
বুধবার সকাল ১০টা থেকে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের সামনে কালো পতাকা হাতে বিক্ষোভ মিছিল করতে দেখা যায় তাদের। তাদের হাতের ব্যানারে লেখা ছিল: ‘তারেক রহমানের মিথ্যা মামলা মিথ্যা রায় মানি না, মানব না’।
বৃষ্টির মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম, ঢাকা বার ইউনিটের ব্যানারে আয়োজিত এই বিক্ষোভ মিছিল থেকে সরকারবিরোধী ও বিএনপির পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দেন আইনজীবীদের। তাদের বলতে শোনা যায়– ‘ফরমায়েশি রায় মানি ন ‘,‘তারেক জোবায়দার কিছু হলে জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে’।
ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. আছাদুজ্জামান বেলা ৩টায় এ মামলার রায় ঘোষণা করবেন। তার আগে বেলা ১টার সময়ও আদালতের বাইরে বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের বিক্ষোভ চলছিল।
উল্টোদিকে আওয়ামী লীগপন্থি আইনজীবীরা তারেক ও জোবায়দার সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন আদালত প্রাঙ্গণে।
আদালতের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা পরিদর্শক হারুন অর রশিদ এবং প্রসিকউশন পুলিশের সহকারী কমিশনার মো. ফেরদৌস দুই পক্ষের আইনজীবীদের শান্ত থাকতে অনুরোধ করেন।
এ মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।সকাল থেকেই আদালত পাড়ায় মোতায়েন করা হয়েছে বাড়তি পুলিশ।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক ও তার স্ত্রী বিরুদ্ধে আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এই মামলাটি হয় ২০০৭ সালে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে। তখন তারেক গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।
২০০৮ সালে তারেক জামিনে মুক্তি পেয়ে সপরিবারে যুক্তরাজ্যে যান চিকিৎসার জন্য। এরপর তিনি আর দেশে ফেরেননি। প্রবাসে থেকেই বিএনপির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান হন তিনি, মা কারাগারে যাওয়ার পর থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পদ নেন তিনি।
তারেক বিদেশে থাকা অবস্থায়ই দেশে এই পর্যন্ত চারটি মামলায় তার বিরুদ্ধে সাজার রায় এসেছে। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগে দুই বছর, অর্থ পাচারের দায়ে সাত বছর, জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১০ বছর এবং একুশে অগাস্টের গ্রেনেড মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ হয় তার।
বিএনপি বরাবরই বলে আসছে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায় তাদের নেতার বিরুদ্ধে সাজানো রায় হচ্ছে। তবে সেই অভিযোগ অস্বীকার করে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, দেশে বিচার বিভাগ স্বাধীন এবং আদালতের উপর নির্বাহী বিভাগের কোনো হস্তক্ষেপ নেই।
এ মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে আইনের চোখে পলাতক তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জোবায়দা রহমানের সর্বোচ্চ ১৩ বছর কারাদণ্ড হতে পারে।